E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাবিতে শুরু হয়েছে পাখিমেল‍া

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৬:১৫:৩৭
জাবিতে শুরু হয়েছে পাখিমেল‍া

জাবি প্রতিনিধি : লাল শাপলা শোভিত জলাশয়গুলোতে পরিযায়ী পাখিদের কলতান। ডানা মেলে চক্রাকারে উড়ে বেড়ানো, কখনো বা খুনসুঁটি আর ডুবসাঁতার। এতেই মুগ্ধ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে পাখি মেলায় আসা দর্শনাথীরা।

প্রতিবছর শীতে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলোতে। এই পাখি কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিবছরের মতো আয়োজন করেছে ১৪তম পাখি মেলা। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্যাম্পাসে এসেছেন পাখিপ্রেমীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে, প্রীতিলতা হল ও জাহানারা ইমাম হল সংলগ্ন জলাশয় এবং ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার সংলগ্ন জলাশয়ে এ বছর পরিযায়ী পাখিরা এসেছে। লাল শাপলায় ঢাকা জলাশয়গুলো যেন পূর্ণতা পেয়েছে পারিয়ায়ী পাখির উপস্থিতিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলো ঘুরে দেখা যায়, দর্শনাথীরা জলাশয়গুলোর পাড়ে দাঁড়িয়ে বাইনোকুলার দিয়ে পাখি দেখছেন। কেউবা ব্যস্ত পাখির ছবি তোলায়। দর্শনাথীদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে যেন পাখিদেরও কর্মব্যস্ততা শুরু হয়! ডুবসাঁতার দিয়ে কিংবা খুনসুঁটি করে আনন্দ দিতে থাকে দর্শনাথীদের। মনের আনন্দে ধীরগতিতে সাঁতার কাটা। রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলতে শুরু করে তাদের ডানা। কখনো বা মুক্ত আকাশে কখনো বা জলাশয়ের ঠিক কাছাকাছি থেকে এপার থেকে ওপারে পাড়ি শেষে ডানা ঝাপটে পানিতে আশ্রয় নেওয়া।

ক্যাম্পাসে মূলত দুই প্রজাতির পাখি আসে। এক ধরনের পাখি ডাঙায় বা শুকনা স্থানে বা গাছের ডালে থাকে। এসব পাখি প্রশাসনিক ভবনের সামনের জলাশয়ের তীরের গাছগুলোকে যেন ঢেকে রেখেছে তাদের নিজেদের ডানার নীচে। কখনো বা এক গাছ থেকে আরেক গাছে ডানা ঝাপটে উড়ে বসছে তারা। মগ ডালের সর্বোচ্চ স্থানটি দখল নিতে আবার এদের ভেতর চলে এ তীব্র প্রতিযোগিতা।

অপর হাঁস জাতীয় পাখি পানিতেই থাকে। এসবের মধ্যে রয়েছে ছোট সরালি, ল্যাঞ্জা হাঁস, ভুতি হাঁস, বালি হাঁস, নক্তা হাঁস অন্যতম। এছাড়া ছোট পাখিদের মধ্যে রয়েছে- ব্রাউন শ্রির্ক, গ্রে বেকর্ড শ্রির্ক, ওবলার, গ্রে হেডেড ঈগল ইত্যাদি।

পাখিপ্রেমীদের সরব উপস্থিতিতে এবছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাখি মেলা-২০১৬। পাখি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এই মেলা আয়োজন করেছে।

বেলা পৌনে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পাখিমেলা উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রকৃতি ও জীবনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, আইইউসিএন-এর সমন্বয়ক হাসিব ইরফান উল্লা, বার্ডক্লাবের সভাপতি নিয়াজ আবদুর রহমান, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের আব্দুল হক চৌধুরী, পাখিমেলার আহ্বায়ক মো. কামরুল হাসান প্রমুখ।

অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে সারাদিন কাটালে পাখির আহার, ঘোরা-ফেরা সবই দেখা সম্ভব।

মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, পাখি তার বিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের সর্বত্র গাছের বীজ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে সার ও গাছ তৈরি হচ্ছে। তাই বলা যায় পাখি শুধুমাত্র সৌন্দর্যেরই পাখি নয়, পাখির সঙ্গে আমাদের জীবনের অনেক কিছু জড়িয়ে গেছে।

মেলায় পাখির প্রজাতি নিয়ে কাজ করার জন্য বরিশালের আব্দুল মজিদ শাহ শাকিল, মৌলভীবাজারের সৈয়দ মো. রাতুল ও শাহরিয়ার রশিদকে ‘বিগ বার্ড অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সাজেদা বেগমের পাখিবিষয়ক ‘বার্ডস অব জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test