E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেইক-আ-থন চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

২০১৬ জুন ০৮ ১৩:৪৪:২০
মেইক-আ-থন চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

মো. শাহীন সরদার : বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে প্রকৌশল, কৃষি, ব্যবসা, ফ্যাশন টেকনোলজি ও ডিজাইনের বিভিন্ন আইডিয়া ভিত্তিক প্রতিযোগিতা মেইক-আ-থন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব ব্যাংক এবং বেটার স্টোরিজের যৌথ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে শীর্ষ ১০০ তরুণকে নিয়ে আয়োজিত হয় ওই প্রতিযোগিতা। এতে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাঈদ আল মাহমুদ বিজয় ও শাকিল মন্ডলের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার (কিউসি) প্রো।

ছোটবেলা থেকে ব্যতিক্রমধর্মী কাজ করার ইচ্ছা ছিল বিজয়ের। কলেজ জীবনে যুক্ত ছিলেন নটর ডেমের ইংলিশ ক্লাব ও ডিবেটিং ক্লাবের সাথে। ছোটবেলা থেকে আর্কিটেকচারে পড়ার ইচ্ছা ছিল ভীষণ। কিন্তু ভাগ্য টেনে নিয়ে আসে দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি হন কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদের বি.এসসি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তারপরও মাথায় সব সময় চিন্তা ছিল এমন কিছু একটা করা যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আরও উজ্জল হয়। কাজ শুরু করেন মূলত তৃতীয় বর্ষের প্রথম দিকে। রোবটিক্সের প্রধান উপাদান মাইক্রোকনট্রোলারের উপর পাই ল্যাব থেকে মাত্র এক মাসের ট্রেনিং করেছিলেন। এরপর সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় তৈরি করেছিলেন ছোটখান টিভি রিমোর্ট চালিত ও বীজ বপনের রোবর্ট। শুরু করেছিলেন মাত্র ১১ জনকে নিয়ে আরডুইনো স্কুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ছাদে বসে আগ্রহীদের রোবটিক্স শেখাতেন তিনি। এছাড়া নিজের তৈরি লাইন ফলোয়ার রোবর্ট নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন আইউটির ইসোনিক প্রতিযোগিতায়। তারপর থেকে এটিই বড় কোন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া।

মেক-আ-থনে সবার অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ‘মেকার ফেস্ট’। যেখানে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন ও সেগুলোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। মূলপর্বে বাকৃবি থেকে গিয়েছিল পাঁচটি টিমে ১৬জন সদস্য। ভলান্টিয়ার হিসেবে সৌরভ, নাফিজ, শাফায়েত ও ক্যাম্পাস প্রতিনিধি হিসেবে সৌমিক ছিলেন। মূলপর্ব থেকে সেরা ১০০ আইডিয়া থেকে প্রথম হয় বিজয়-শাকিলের কিউসি প্রো। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে বিজয় বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যাবেন আমেরিকার সিলিকন ভ্যালেতে। এ সাফল্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বিজয় ও তার দলকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানিয়েছেন।

নিজের তৈরি কিউসি প্রো সম্পর্কে বিজয় বলেন, আমি মূলত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেক দিন ধরেই মাথায় ছিল কীভাবে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিটি সহজ করা যায়। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য এখন ময়েশ্চার কনটেন্ট, তাপমাত্রা, পিএইচ ও পরিবেশের আর্দ্রতা আলাদা আলাদা পরীক্ষা করতে হয়। আমি এমন একটা যন্ত্র বানিয়েছি, যার মাধ্যমে একবারেই সব পরীক্ষা করা যাবে। তাৎক্ষনিক ভাবে এক্স.এল এ গ্রাফসহ মান পাওয়া যাবে যেকারণে খাদ্যের নমুনা পরীক্ষাগারেও পাঠাতে হবে না। যন্ত্রটি বহনযোগ্য, আকারে ছোট এবং হালকা। তাই কারখানায় গিয়ে পরীক্ষা করে আসা যাবে। বাণিজ্যিক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, পৃথক ভাবে প্রতিটি পরীক্ষা করতে যে খরচ পড়বে তার চেয়ে আমার এ যন্ত্র দিয়ে সব পরীক্ষা করতে কম খরচ হবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে বিজয় জানান, গবেষণা কাজের সাথে যুক্ত থাকার ইচ্ছা আছে। ক্যাম্পাসে যারা উদ্ভাবনমূলক কাজ করে তাদের নিয়ে একটা ইনোভেশন ক্যাফে খুলব। বর্তমানে বিজয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ইউএনডিপির অর্থায়নে এ টু আই প্রকল্পে কাজ করছেন।

(এমএসএস/এএস/জুন ০৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test