E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছুটি বহির্ভূতভাবে অনুপস্থিতি

অনুমতিবিহীন ঈমামের দ্বায়িত্ব পালনের অভিযোগ

২০১৬ জুন ১৫ ২২:২১:১৯
অনুমতিবিহীন ঈমামের দ্বায়িত্ব পালনের অভিযোগ

বাকৃবি প্রতিনিধি : স্বর্ণ চোরাচালানে ধরা খেয়ে সৌদি আরবে ১৯ মাস আটক থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একটি হলের সিনিয়র পেশ ইমাম। দীর্ঘ সময় ছুটি বহির্ভূতভাবে অনুপস্থিত থেকে হলে কাজে যোগদানের অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু অনুমতি ছাড়াই ওই হলে বর্তমানে তিনি মাঝে মাঝে ঈমামের দায়িত্ব পালন করছেন বলে হল সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবসিক ফজলুল হক হলের সিনিয়র পেশ ইমাম বজলুর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর হজ্জে যাওয়ার জন্য ২২ সেপ্টেম্বর হতে ছুটি নেয় বজলুর রশীদ। ছুটি শেষে ১ নভেম্বর কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এর দুই মাস পর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী তাকে চিঠি দিয়ে সাত দিনের মধ্যে যোগাযোগ করতে বলে প্রশাসন। এ চিঠির কোন জবাব দেয়নি সে।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আলতাফ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেল্সের মোয়াল্লেম হিসেবে হজ্জ পালন করতে সৌদি আরব যায় সে। ৩১ অক্টোবর দেশে ফেরার পথে জেদ্দা বিমান বন্দরে বজলুর রশীদকে আটক করে সৌদি পুলিশ। এ সময় তার মাথার টুপির ভেতর হতে কয়েকটি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। এদিকে ওই ঘটনার বজলুর রশীদ পঞ্চাশ দিন পর জেল থেকে ছাড়া পেলেও পাসপোর্ট ফেরত পায়নি। এতে সৌদি আরবে আটকে পড়ে সে। তখন থেকে সে বিনা ছুটিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে। এ দেড় বছরে কাজে যোগ দিতে বলার জন্য শুধু মাত্র তাকে দু’বার চিঠি দেয় প্রশাসন। এর বাইরে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারী সৌদি দূতাবাসকে চিঠি পাঠায় প্রশাসন। তবে ওই চিঠিরও কোন জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম।

এদিকে সম্প্রতি দেশে ফিরে গত ১৩ জুন হলের কাজে যোগদানের অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে ওই ঈমাম। আবেদনে উল্লেখ করে, হজ্জ পালন শেষে বৈধ উপায়ে অলংকারসহ দেশে ফেরার পথে সৌদি পুলিশ জেদ্দা বিমান বন্দরে আমাকে আটক করে। পরবর্তীতে ওই দেশের আদালত বিষয়টি তদন্ত করে আমার উপর জুলুম করা হয়েছে এই মর্মে রায় ঘোষণা করে। রায়ের কপি হাতে পেতে আমাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। আবেদনের সাথে আরবিতে লেখা একটি ফটোকপি বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদসহ জমা দেন তিনি। যেটিকে সৌদি আদালত কর্তৃক দেয়া নির্দোষ প্রমাণের কপি বলে দাবি করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, একটি আবেদন এসেছে আমাদের কাছে। যাচাই বাছাই করে আমরা এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব।

যোগাযোগ করা হলে বজলুর রশীদ বলেন, আমি দায়িত্বে যোগদানের জন্য রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। উনি আমাকে যোগ দিতে বলেছেন। তাই ইমামতির কাজে যোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কার্তিক চন্দ্র সাহা বলেন, ইমাম অনুপস্থিত থাকার কথা আমি রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম। এছাড়া এই দীর্ঘ সময় তিনি হলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্সে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরিরতদের আচরণ ও শৃংখলা বিধির ৪(১) ধারা অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা ছুটি ব্যতিত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন সাপেক্ষে বাধ্যতামূলক অবসরসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। অপর দিকে একই ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন বা নৈতিকতা বিরোধী কোন কাজে জড়িত থাকলে তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। অথচ ইমামের মত একটি ধর্মীয় পদে থেকে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ও ছুটি ছাড়া দীর্ঘ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে এসবের কোনটিই তার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত প্রয়োগ করেনি প্রশাসন।






(এমএসএস/এস/জুন ১৫,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test