E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 ড. জাফর ইকবাল প্রমাণ করলেন ভালোবাসার অস্তিত্ব

২০১৭ এপ্রিল ০৬ ১৫:২০:৪০
 ড. জাফর ইকবাল প্রমাণ করলেন ভালোবাসার অস্তিত্ব

শাবি প্রতিনিধি : ভালোবাসা মিডিয়ার সৃষ্টি নয় বরং চিরন্তন। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন ভালোবাসা সবার মাঝে বিদ্যমান থাকবে। বিরোধীপক্ষের তীব্র বিরোধীতার পরও পৃথবীতে যে ভালোবাসার অস্তিত্ব আছে তা নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে প্রমাণ করলেন জনপ্রিয় লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। যেখানে বিরোধী পক্ষের দাবি ছিল ‘ভালোবাসা মিডিয়ার সৃষ্টি’।

গত সোমবার (৩ এপ্রিল) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালবাসার ছায়া সংসদে জয়ী হয় ড. জাফর ইকবালসহ শিক্ষকদের দ্বারা গঠিত বিরোধীদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক সংগঠন ‘শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (এসইউডিএস) আয়োজিত "ছাত্র-শিক্ষক বিতর্ক-২০১৭" তে শিক্ষার্থীদের দ্বারা গঠিত সরকারি দলের উত্থাপিত প্রস্তাবটি ছিল ‘এই সংসদ মনে করে যে, পৃথিবীতে ভালোবাসা বলে কিছু নেই সবই মিডিয়ার সৃষ্টি’।

বিতর্ক শেষে কণ্ঠ ভোটে বিরোধীদল জয়লাভ করে। বিরোধী দলে ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুসরাত জাহান কলি এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক সায়মা সুলতানা চৌধুরী।

ছায়া সংসদে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী তাসলিমা আকতার প্রস্তাবটি উত্থাপন করে বলেন, অতীতে শাবানা-আলমগীর, রাজ্জাক-কবরীদের মত ভালবাসা পাওয়া গেলেও বর্তমানে ভালোবাসা সামাজিক মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ।

বিরোধীদলীয় নেত্রী সায়মা সুলতানা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, যুগে যুগে কালে কালে ভালোবাসা ছিল, আছে এবং থাকবে। তিনি কিছু পরিসংস্যান ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সংসদের সামনে তুলে ধরেন।

এরপর সরকার দলের প্রেম বিষয়ক মন্ত্রী চৌধুরী আমীর হামজা বর্তমান ভালোবাসার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে সাম্প্রতিক একটি জরীপে কোনো হৃদয়েই ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান।

বিরোধীদলীয় উপনেতা নুসরাত জাহান কলি সরকারি দলকে সঠিকভাবে ভালোবাসা অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শাবিপ্রবির এক কিলো রোড থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের প্রতিটি স্থানেই ভালোবাসা আছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য অনন্যা সরকার বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার ফলে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসের উপর ভিত্তি করে জনগণ এখন তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। ভালোবাসা এখন শুধু ফেইসবুকেই সীমাবদ্ধ।

এসময় বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বর্তমান ছায়া সংসদের সরকার দল ও জনগণের ভালোবাসা খুঁজে না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, যেখানে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসেই অসংখ্য ভালবাসার উদাহরণ রয়েছে, সেখানে পৃথিবীতে ভালবাসা না থাকার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তিনি ভালোবাসা সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্যক্রমের তথ্য সংসদে উপস্থাপন করেন।তিনি বলেন এখনো বনলতা সেন আছে, তাদের খুঁজে নিতে হবে।

এরপর প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য এর যুক্তিখণ্ডনের মাধ্যমে সংসদের অলোচনা পর্ব শেষ হয়। স্পিকার প্রস্তাবটি পাশের জন্য উত্থাপন করলে কণ্ঠ ভোটে বিরোধীদল জয়লাভ করে।

সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন এসইউডিএস এর সাবেক সহ-সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ মুন্সী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে বিকাল সাড়ে ৫টায় ছায়া সংসদ অধিবেশনটি শুরু হয়। প্রথমে শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির পক্ষ থেকে একটি জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং জঙ্গিবাদ রুখতে সবাইকে একত্রে হাতে হাত রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বিতর্কের পর এসইউডিএস এর সভাপতি চৌধুরী আমির হামজা শিক্ষকদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন এবং সকল বিতর্কপ্রেমীদের বিতর্কটি উপভোগ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test