E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৪ এপ্রিল, ১৯৭১

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়

২০২৪ এপ্রিল ২৪ ১১:৫৬:৫৯
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ভারতের হিলিতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ছেড়ে পিছিয়ে গিয়ে পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়।

পাকহানাদার বাহিনী সড়কপথে মাদারীপুর শহরে প্রবেশ করে। শহরে ঢুকেই কালবিলম্ব না করে স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় এম.পি আসমত আলী খান ও ফনীভূষণ মজুমদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বহু বাড়িসহ দোকানপাট লুট করে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট, বাঙালিপুর, টিয়রপাড়া ও মধুপুরে ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলে। এ সমস্ত ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের ১ মাস ১৫ দিন মেয়াদে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তানিরা বারবার ইপিআর বাহিনীকে তাদের হাতে সমর্পণ করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু ভারতীয বিএসএফ-এর মেজর ভেদী, ক্যাপ্টেন ঘোষ ইপিআর সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।

রাঙামাটি থেকে মহালছড়ির থেকে আগত পাকবাহিনীর দুই কোম্পানি সৈন্যের সাথে ক্যাপ্টেন আফতাব কাদের ও লে. মাহফুজের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের কুতুবছড়ি নামক স্থানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পাকবাহিনীর প্রচুর ক্ষতি হয়।

পাকবাহিনীর একদল সৈন্য চিংড়ি নদী দিয়ে নানিয়ারচর বাজার হয়ে মহালছড়ির দিকে অগ্রসর হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে পুলিশ সুপার নূরুল মোমিন খান (মিহির) ফরিদপুর পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার খুলে দেন। ফরিদপুরে মুক্তিবাহিনীর জন্য এটাই প্রথম অস্ত্র লাভ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে করেরহাট নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সাথে পাকসেনাদের প্রতিহত করেন।

বৃটিশ পার্লামেন্ট শ্রমিকদলের সদস্য উড্রো ওয়াট বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপক হত্যার প্রতিবাদে আমরা সবাই এতো চুপচাপ কেন? পূর্ব পাকিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত জঘন্য। হিটলার ও স্ট্যালিনের পর এ ধরনের হত্যাকান্ডের কথা আর কখনো শোনা যায়নি। আমরা এ বিষয়ে কি করছি? জেনারেল ইয়াহিয়াকে এখনও আমরা সাহায্য দিচ্ছি। সারাদেশ উজাড় করার বিষয়টি মোটেই ঘরোয়া ব্যাপার নয়।

ঢাকার মিরপুরে দেওয়ান ওয়ারেসাত হোসেন খানের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মো. সামীউদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘শান্তি কমিটি’ গঠিত হয়। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ‘কেন্দ্রীয় শান্তি’ কমিটির আবুল কাসেম, মাহমুদ আলী, আবদুল জব্বার খদ্দর, মেজর আফসারউদ্দিন প্রমুখ।

শান্তি কমিটির ১৮টি ইউনিট আহ্বায়কের নাম ঘোষনা করা হয়। আহ্বায়করা হচ্ছেন: ১. তেজগাঁও(পূর্ব) মো. ফজলুর রহমান, ২. ধানমন্ডি-এস.এম হাবিবুল হক, ৩. নারায়ণগঞ্জ(শহর)-এএসআই সরদার, ৪. দিলখুশা-মো. মনসুর আলী, ৫. জোয়ারসাহারা-আলী আহসান, ৬. শরাফতগঞ্জ-গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ৭. খিলগাঁও-ড. আইয়ুব আলী, ৮. নবীনগর (কুমিল্লা)-মৌলবী সেকেন্দার আলী, ৯. জয়দেবপুর- আবদুল মজিদ সরকার, ১০. জয়দেবপুর (থানা)- মো. মস্তান খান, ১১. রেকাবীবাজার-ইদ্রিস বেপারী, ১২. মোহাম্মদপুর-দেওয়ান ওয়ারেসাত আলী, ১৩. দিলু রোড-জিআন,১৪. নিউ ইস্কাটন-মজিবুর রহমান, ১৫. ধানমন্ডি(পূর্ব)-এম.এ খালেক, ১৬. মহাখালী-এ.কে.এম আবদুল্লাহ, ১৭.মিরপুর-মো. শফিউদ্দিন খান,ও ১৮. শাজাহানপুর-এম.এ খালেক।

সরকারি এক হ্যান্ড আউটে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলা হয়, নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররমসহ সমস্ত জায়গায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। প্রদেশের সর্বত্র সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যথারীতি কাজ চলছে। সব ব্যাপারেই জনগণসহায়তা করছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা থেকে দুষ্কৃতকারীদের উচ্ছেদ করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করায় জনগণের মধ্যে পুরোমাত্রায় আস্থা ফিরে এসেছে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/পিএস/এপ্রিল ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test