বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হোক
মো. আতিকুর রহমান : যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যত বেশি উন্নত, সেই দেশ ও জাতি তত বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ। তাই শিক্ষাকে হেয় বা খাট করে দেখার কোন অবকাশ নেই। বিশেষ করে এই খাতে সকল প্রকার বৈষম্য রোধ ও সুশাসনের ঘাটতি উত্তরণে সংশ্লিষ্টদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত সুপারিশকে আমলে নিয়ে প্রতিকারে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাকে এই মুহূর্তে অধিক জরুরী বলে মনে করি।
কেননা গ্রামগঞ্জে প্রচলিত একটি কথা আছে ‘যা রটে তা কিছুটা বটে’। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের তথ্য বিভিন্ন সময় প্রকাশ হলেও সাম্প্রতিক টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির ইস্যুটি বেশ জোরালোভাবেই জনমনে উচ্চারিত হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত দ্রুত প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করা। যদিও উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর সম্পর্কের টানাপড়েন এবং একে অপরকে দোষারোপের যে তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে, যা কিনা এই ধরনের অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এক ধরনের স্বস্তি ও উৎসাহবোধ করছেন যা কাম্য নয়। তাই এই খাতের সুশাসন নিশ্চিতকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি আন্তরিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন এমনটিই অধিক প্রত্যাশা করি।
যদিও ইতিমধ্যে টিআইবির প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে যা ইতিবাচক। টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টের সত্যতা যাচাই এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে। এই এক সপ্তাহের মধ্যে কমিশন এই বিষয়ে কি তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়? যদিও সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য মতে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে পরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে কাকে কত টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও উপাচার্যদের মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদিও এই ধরনের চিঠি দেওয়া নিয়ে খোদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই তা প্রাপ্তীর ক্ষেত্রে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। কেননা এই ধরনের কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই এই ধরনের অর্থ লেনদেনের দালিলিক প্রমান প্রশ্ন ও রশিদ দিয়ে কাজ করেন না। যা সকলের কাছেই অনুমেয়। এই ক্ষেত্রে টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত বিভিন্ন অংকের অবৈধ লেনদেনের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা তারা কতটুকু যৌক্তিক প্রমান দেখাতে সক্ষম হবেন সেই ব্যাপারে প্রশ্ন রয়েই যায়। তবে এই ধরনের বিভিন্ন অনিয়মের জন্য অনেকেই যে ভ’ক্তভোগী তা সম্প্রতি প্রকাশিত ভর্তিবাণিজ্য শিরোনামের বিশেষ কিছু রিপোর্ট তারই ইঙ্গিতবহণ করে। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধে বিশেষ কিছু বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন ও প্রতিকারে কিছু করণী বিষয় উক্ত প্রবদ্ধে আলোকপাত করছি।
প্রথমেই আসা যাক টিআইবি কর্তৃক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারের নিয়োগের অনুমোদনের জন্য ২ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অবৈধ লেনদেনের কথা প্রসঙ্গে। এই ধরনের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য টিআইবি কতুটুকু প্রমানসহ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে বা তাদের হাতে রয়েছে তার রেফারেন্স দিলে জনগণের বিষয়গুলো বুঝতে সুবিধা হতো। তারপরও যে সমস্যাটি এই ক্ষেত্রে অধিক ক্রিয়াশীল থাকার সম্ভাবনা বিরাজ করে তা হলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারের নিয়োগের প্রক্রিয়াটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পষদের অনেকটা ইচ্ছার ওপর অধিক নির্ভরশীল। এই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের পছন্দ অনুযায়ী প্রতিটি পদের বিপরিতে তিনজন করে ব্যক্তি নাম রাষ্ট্রপতি/ চ্যান্সেলর নিকট প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে চ্যান্সেলর কর্তৃক ট্রাষ্টি বোর্ডের পছন্দের তালিকা থেকে প্রতিটি পদের বিপরিতে একজন করে ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারকে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়। ফলে এই ধরনের নিয়োগগুলি মূলত ট্রাষ্টির পছন্দের লোকগুলোকে রাষ্ট্রপতি/চ্যান্সেলর হাত দিয়ে নিয়োগ দিয়ে বৈধ্যতা দেওয়া হয়।
ফলে কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় নিয়োগকৃত ঐসব ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারগণ অধিকাংশই ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের পছন্দের লোক হওয়ায় তারা ট্রাষ্টির সিদ্ধান্ত এবং তাদের চাওয়া-পাওয়াকেই সর্বক্ষেত্রে অধিক প্রাধান্য দেন। ফলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ট্রাষ্টি বোর্ডের নিয়ম-নীতি বর্হিভ’ত অনেক কর্মকান্ডকেই তাদের হাত দিয়ে বৈধ্যতা দেওয়া হয়। যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার এই ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করি। এইক্ষেত্রে আমরা মনে করি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারগণ নিয়োগের ক্ষেত্রে ট্রাষ্টি বোর্ডের প্রেরিত তালিকাকে প্রাধান্য না দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কেবলমাত্র চ্যান্সেলর কর্তৃক যোগ্য, অভিজ্ঞ ও সৎ ব্যক্তিদের তালিকা থেকে এই ধরনের পদে বেসরকারি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজার নিয়োগ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে যা কিছুটা হলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারগণকে প্রতি দুইবছর পর পর অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলীর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং ট্রাষ্টি বোর্ডের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ দানের ক্ষমতাসহ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে নিজেদের তরফ থেকে বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের অসাধু ব্যক্তিদের অনৈতিক কর্মকান্ড রোধ এবং নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল স্বার্থে ভাল কিছু করার স্পৃহা বৃদ্ধি পাবে। যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নসহ দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে অধিক জরুরী বলে মনে করি।
দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ সময় পত্র-পত্রিকায় এদেশের নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবাণিজ্য ও তদবিরবাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যা দুঃখজনক। সম্প্রতিক নারায়গঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তিবাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি লক্ষনিয়। যার সঙ্গে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অনৈতিক অর্থ লেনদেনের বিষয়ে জড়িত থাকার ফলে ঐসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দারিদ্র্য ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করলেও অনেক সময় অর্থের অভাবে এবং ভর্তিবাণিজ্য ও তদবিরবাণিজ্যের কারণে উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা শিক্ষা বৈষম্যরোধে কখনই কাম্য হতে পারে না। এই ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, ভর্তিবাণিজ্য ও তদবিরবাণিজ্য রোধে একই দিনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও রেজাল্ট প্রকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এইক্ষেত্রে ভর্তি প্রক্রিয়ায় লটারী পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বেশি ভাল হয় ভর্তি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আনায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অথবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তরফ থেকে একটি টিম উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন কাজ পর্যবেক্ষণ, ভর্তির রেজাল্ট প্রণয়ন ও তা প্রকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে জন্য উক্ত টিমকে প্রেরণের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা ভর্তিপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আনায়নে অধিক জরুরী। যা ভর্তিবাণিজ্য ও তদবিরবাণিজ্য বন্ধে অধিক সুফল বয়ে আনবে বলে আমরা মনে করি। এরপরেও যদি কোন প্রতিষ্ঠান উক্ত ভর্তিপ্রক্রিয়ায় কোন ধরনের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেয় তবে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় অথবা কমিশন কর্তৃক যথাযথ আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহণের পথ সুগম করতে হবে। তবেই ভর্তি প্রক্রিয়ায় অবৈধ্য অর্থের লেনদেনের হীনপ্রবণতা ও স্বজনপ্রীতি কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে। যা ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের বৈষম্য রোধ করে প্রকৃত মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অধিক সহায়ক হবে আশা করি। তাই এই ব্যাপারে সংশিষ্টদের তরফ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাকে অধিক জরুরী বলে মনে করি।
তৃতীয়ত, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ভূয়া সনদ বিক্রির যে তথ্য গুলো প্রায় মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় তা বন্ধে কমিশন কর্তৃক সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মঞ্জুরী কমিশনে প্রেরণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষার্থীদের চুড়ান্ত পরীক্ষা অংশগ্রহণের যথাযথ প্রমান সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের মুল সনদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রদানের ব্যবস্থাকরণ অধিক জরুরী। যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নিজেদের ইচ্ছা মাফিক ভ’য়া সনদ বিক্রির প্রবণতা রোধ অধিক কার্যকরি হবে বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে কমিশন কর্তৃক বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন ও সনদ প্রদান কাজের জন্য আলাদা একটি শাখা খোলা যেতে পারে।
চতুর্থ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক পছন্দের শিক্ষার্থীদেরকে অধিক নম্বর দেওয়ার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তা রোধ এবং শিক্ষার্থীদের মেধানুযায়ী প্রাপ্ত ফলাফল নিশ্চিতকরণে সকল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মডারেট এবং পরীক্ষা খাতা বিষয়ভিত্তিক দুইজন পরীক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন এবং নম্বর প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার ব্যবহারিক ও মৌখিক চুড়ান্ত পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক বহিরাগত পরীক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থাও কমিশন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা প্রদান এবং নকল রোধে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা হল পরিদর্শনের কাজ না করিয়ে তা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিয়ে কাজটি করিয়ে নেওয়া অধিক শ্রেয় বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে বিভাগ ভিত্তিক পরীক্ষার সময়সূচী কমিশনকে অবহিত করে চিঠি প্রেরণ করতে হবে। আর কমিশন কর্তৃক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত সকল প্রকার কাজ সুসম্পন্ন করার জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করবে। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিত পরীক্ষা গ্রহণের সময়সূচীর প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কমিশন কর্তৃক একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন এবং যে অনুযায়ী সকল প্রকার কার্যাদি সুসম্পন্ন করার জন্য কমিশনের তরফ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে সঠিক সময়ে ক্লাস শুরু, পরীক্ষাগ্রহণ, রেজাল্ট প্রদান, শিক্ষার্থীদের যোগ্যতানুযায়ী মেধাযাচাই বিশেষ করে এ সংক্রান্ত কাজে অধিক স্বচ্ছতা আনায়ন পাশাপাশি শিক্ষক-ছাত্র স্বজনপ্রীতি ও অধিক নম্বর প্রদানের হীনপ্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করি।
পঞ্চমতম, শিক্ষা বৈষম্য এবং অধিক অর্থ গ্রহণ রোধে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদিত সকল বিষয়ের জন্য মন্ত্রণালয় অথবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হারে ভর্তি, টিউশন ও অন্যান্য ফি গ্রহণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নির্ধারিত ফি এর বাহিরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবৈধ পন্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক অর্থ নিতে চাইলে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের তরফ থেকে দৃশ্যমান উদ্যোগ ও কঠোর আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরকেও অধিক সচেতন হতে হবে। প্রতিষ্ঠানের রিসিষ্ট বিহীন সকলপ্রকার আর্থিক লেনদেন থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে। যা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদাই রোধে অধিক জরুরী বলে মনে করি।
ষষ্ঠ, অনুরূপ ভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবের স্বচ্ছতা আনার জন্য মন্ত্রণালয় বা কমিশন কর্তৃক প্রতিবছর নির্ধারিত র্ফাম এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অডিট কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এই কাজের স্বচ্ছতা আনায়নে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ সংক্রান্ত ফাইল খোলা ও সংরক্ষণে সেন্ট্রাল রেজিস্টার আছে কিনা তা আগে দেখতে হবে। না থাকলে ফাইলগুলোকে আগে রেজিস্টারে আওতায় আনতে হবে তারপর অডিট কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার অর্থ লেনদেনের জন্য মন্ত্রণালয় বা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যাংকে হিসাব খোলা ও অর্থ জমা রাখার জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ নিজেদের হীন স্বার্থে অথবা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে এই ধরনের অর্থ নিজ কাজে ব্যবহার করতে না পারে। পাশাপাাশ প্রতি ছয়মাস অন্তর অন্তর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত ব্যাংক রিপোর্ট কমিশনে পাঠানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এই শর্ত বাস্তবায়নে কমিশন বা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত ব্যাংক ব্যতিত অন্য কোন ব্যাংক এই ধরনের লেনদেন করলে কমিশন কর্তৃক উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সপ্তম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নমানের শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যকম পরিচালিত রোধে কমিশনের তরফ থেকে প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর মনিটরিং জোড়দার করতে হবে। কমিশনের বিধি ও শর্তানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক আনুপাতিক হারে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পাটর্-টাইম শিক্ষকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। সকল প্রকার নিয়োগের ক্ষেত্রে পত্রিকায় যথাযথ বিজ্ঞপ্তি প্রদান এবং মন্ত্রণালয়, কমিশন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞ, সৎ ও অধিক যোগ্য ব্যক্তিসহ নিয়োগদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দুইজন মোট ৫ জন সদস্যের সম্বনয়ে নিয়োগ কমিটি গঠন এবং তাঁহাদের প্রাপ্ত নম্বর ও মেধার ভিত্তিতে সকল প্রকার নিয়োগ কাজ সুসম্পন্ন করতে হবে। যা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অধিক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি রোধে কার্যকরি ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াটির প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কমিশনকে অধিক দৃষ্টি দিতে হবে, যাতে নামমাত্র শিক্ষক দিয়ে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে।
সর্বোপরি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে এর সঙ্গে যুক্ত সকল প্রকার দূর্নীতি ও অনিয়ম রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় করণীয় এবং সম্প্রতি প্রকাশিত টিআইবির সুপারিশগুলো যথাযথ আমলে নিয়ে বাস্তবায়নের নিরিখে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমস্যা সমাধানে সকলেই উদ্যোগী হবেন এমনটিই প্রত্যাশা করি। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নীতি আইন ২০১০ এর কোন দূর্বল দিক পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অতি দ্রুত অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের কাজ বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। মূলত: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধিক দুর্নীতি ও অনিয়ম দূরীকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপড়েন চলতে তা থেকে সড়ে আসতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতির মানোন্নয়নে উল্লেখিত প্রতিবন্ধকতা দূরকরণে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করবেন এমনটিই অধিক আশা করি। বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে এই মুহূর্তে সংশ্লিষ্টরা ও সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা অধিক আন্তরিকতার পরিচয় দেবেন এমনটিই কামনা করি।
(এএস/জুলাই ১৩, ২০১৪)
পাঠকের মতামত:
- গোপালগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫
- হাজারো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত ওয়াদুদ মাতুব্বর
- কানাইপুরে নকল ওরস্যালাইন কারখানার সন্ধান, সিলগালা, জরিমানা
- ‘সড়কে ৪৩ বছরের পুরনো গাড়ি কি করে চলে’
- জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
- ইরাকে আইএসের হামলায় ৫ সেনা সদস্য নিহত
- এবার স্বস্তিকার বিপরীতে অভিনয়ে শরিফুল রাজ
- ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ২৭
- উখিয়ার লাল পাহাড়ে র্যাবের অভিযান, আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক ২
- ‘১৪ মে আ.লীগ পরিবারের আরেক কালো অধ্যায়’
- ‘বিচার বিভাগ অসহনীয় মামলা জটে ন্যুব্জ’
- প্রবাসীদের এনআইডি কার্যক্রম দেখতে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ইসি
- ঢাকা কবে বিনিয়োগের অর্থ দেবে জানতে চায় ওয়াশিংটন
- চলতি সপ্তাহেই চীন সফরে যাচ্ছেন পুতিন
- ইসরায়েলের সেনাঘাঁটিতে ভয়াবহ আগুন
- চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নিপুনের রিট
- টিক্কা খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করতে বেশি দিন লাগবে না
- হিলি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
- নড়াইলে ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন
- প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কোটালীপাড়ায় দুই বন্ধুর আত্মহত্যা
- নগরকান্দায় ভ্যানচালকদের মাঝে বিনামূল্যে ছাতা, গেঞ্জি ও গামছা বিতরণ
- কেরু'জ চিনিকলে চাকুরী স্থায়ীকরণে মুক্তিযোদ্ধার কোটা সংরক্ষণ না করায় কর্মরত শ্রমিকদের লিগ্যাল নোটিস
- যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য পাভেল আর নেই
- সাভারে ঘরে ঢুকে পোশাককর্মীকে ধর্ষণ
- ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভালের উদ্বোধন
- শৈলকুপায় ‘কন্দাল ফসলের মেলা’
- জামালপুরে প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক সমাবেশ
- ভূঞাপুরে স্বামী-স্ত্রীকে আটকে রেখে ডাকাতি
- পলাশবাড়ীতে হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও অভিভাবক সমাবেশ
- ‘ডোনাল্ড লু’র সফর ঘিরে কাদের সাহেবরা অস্থিরতায় ভুগছেন’
- লু’র সফরে প্রাধান্য পাচ্ছে যেসব বিষয়
- ভাঙ্গায় মাদক সেবনের আলামত পাওয়ায় ৪ ট্রাক চালক আটক
- প্রতীক পেয়েই প্রচারনায় প্রার্থীরা
- ২৭ বছর পর র্যাবের হাতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
- ধর্ষণের পর শিশু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
- ক্যান্সারজয়ী ছাত্র পেয়েছে জিপিএ-৫
- গৌরনদীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
- কারেন্ট জালের ফাঁদে প্রাণ হারাচ্ছে শত শত পাখি
- ফরিদপুরে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন
- পাংশায় ধান-চাউল-গম সংগ্রহের উদ্বোধন
- জামালপুরে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে মতবিনিময় সভা
- বন্দর ব্যবহারে ভারত-ইরান চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি
- জামালপুরে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের নামফলক ভাঙচুর
- টুঙ্গিপাড়ায় ইজিবাইক চালক হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন
- ‘শ্রম আইন সংশোধনে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে’
- ময়মনসিংহে শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন
- রূপপুর পারমাণবিকে আন্তর্জাতিক ‘স্মৃতি উদ্যান’ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত
- চৌদ্দগ্রামে জামাল হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি আটক
- ‘নিজেদের এজেন্ডা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ডোনাল্ড লু’
- ‘বাংলাদেশের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে জিসিএফ’
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !