E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেখ হাসিনা বইমেলা ২০২১ : কৃতজ্ঞতা ও কিছু কথা

২০২১ অক্টোবর ০৭ ১৪:৩৮:০৬
শেখ হাসিনা বইমেলা ২০২১ : কৃতজ্ঞতা ও কিছু কথা

মানিক বৈরাগী


শেখ হাসিনা বইমেলা ২০২১। লেখক গবেষক দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো শেখ হাসিনা রচিত বইসহ মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়ক বই নিয়ে আমি একক বইমেলা আয়োজন করে থাকি। কেন শেখ হাসিনা বইমেলা প্রয়োজন সে বিষয়ে পূর্বে লিখেছি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাচ্ছি না। যে উদ্যেশ্য নিয়ে বইমেলা আয়োজন করি তা এ বছর একটু বিঘ্নিত হয়েছে। কারণ প্রতিবছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ নেত্রীর জন্মদিন পালন করতো কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বা দলীয় কার্যালয়ে। আর আমি বইমেলা আয়োজন করতাম কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ সুভাষ হলে। কিন্তু এ বছর কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ জন্মদিন পালন উপলক্ষে সমাবেশ করেছে পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এ সভার ঘোষণা দিয়েছেন বইমেলা ঘোষণা হওয়ার পরে। আমি যে প্রতি বছর বইমেলা আয়োজন করি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সহ আইনশৃঙ্খলা প্রশাসন সহ আপামর জনসাধারণ, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামীলীগের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেক নেতাকর্মী অবগত।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশের কারণে এ বছর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্রছাত্রী, শেখ হাসিনার বইয়ের পাঠকেরা কোলাহল মুক্ত, নিরিবিলি পরিবেশে ঠান্ডা মাথায় বই বাছাই করতে চায়, অভিভাবকেরা তাদের শিশু কিশোর নিয়ে আনন্দচিত্তে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক শিশুকিশোর উপযোগী ছড়া, কবিতা, গল্প ও বঙ্গবন্ধুর কিশোর জীবনীগ্রন্থ তাদের সন্তানের হাতে বই কিনে দিতে চায়, দিনের ক্লান্তি শেষে বাবা- মায়েরা তাদের সন্তানসন্ততিসহ বিকেলে বইমেলায় এসেও চলে গেছেন যাঁদের অনেকে আমাকে ফোন করে বলেছেন যে, জনসভার ভিড় ও মাইকের আওয়াজের কারণে তাদের বই বাছাই করা ও কেনায় তাদের মনোসংযোগে বিঘ্ন হবে তাই আসতে পারলেন না। শেখ হাসিনা বইমেলা এ বছর আমি ২৮-২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ শুরু করেছি।

প্রথমদিন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সমাবেশের কারণে মেলায় কোন বই বিক্রি হয়নি, দ্বিতীয় দিন ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার শহর আওয়ামীলীগ তাদের পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে বইমেলার স্টল স্থানে। অবশ্যই কক্সবাজার শহর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বন্ধুসম নজিবুল ইসলাম তার মোবাইল ০১৮১৯৩৪৫৭৭৫ থেকে আমাকে ফোন করে তাদের অনুষ্ঠানের কথা অবিহিত করে, তার আব্দারকে আমি অবজ্ঞা অবহেলা করতে পারি না, কারণ সে আমার বন্ধু, তাকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু সে তাদের পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের কথা বলেছে সকালে কিন্তু তারা করেছে সন্ধ্যায়। এ কারণেও মেলার দ্বিতীয় দিন কোন বই বিক্রি হয়নি। আমি বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসন থেকে মেলা একদিন বাড়িয়ে নিয়েছি। মেলার তৃতীয় দিন যারা সর্বোচ্চ টাকার বই কিনেছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আশেক উল্লাহ রফিক, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বই কিনেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চকরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি, চকরিয়া - পেকুয়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব জাফর আলম। তৃতীয় সর্বোচ্চ বই কিনেছে ঈদগাহ মডেল হাইস্কুল ও প্রধান শিক্ষক খোরসিদুল জান্নাত।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এস এম সাদ্দাম হোসেন ও মারুফ আদনান। প্রিয় পাঠক আপনাদের আর ধৈর্যচ্যুত করতে চাই না। আমার পরম প্রিয় শ্রদ্ধেয় বইয়ের ক্রেতা পাঠক সংগ্রাহক যাঁরা আপনাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বইগুলো তৃতীয়দিন কিনেছেন প্রত্যেক ক্রেতার প্রতি দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সালাম, অভিনন্দন ও ভালোবাসা। নানা কারণে তৃতীয় দিন বই কিনতে না পেরে দেশরত্ন শেখ হাসিনার বই সংগ্রহ পাঠের জন্য কষ্ট করে বাসায় এসে বই কিনেছেন আপনাদের প্রত্যেকের প্রতি আমার পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আপনাদেরকেও লেখক, গবেষক, দার্শনিক শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সালাম, অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারের বইমেলা সুক্ষ্ম ব্যার্থতায় যারা প্রথম দুদিন বই কিনতে পারেননি আপনাদের বই তৃষ্ণা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত, আবেগে আপ্লুত। আপনাদের প্রতি আমার আমৃত্যু শ্রদ্ধা থাকবে। এবারের বইমেলা থেকে আপনাদের আরও দুটো সুসংবাদ দিতে চাই এক, মহেশখালী-কুতবদিয়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মানুষের পাঠতৃষ্ণা লাঘবের জন্য তিনি একটি গণপাঠাগার তৈরি করবেন। আজ ৫ অক্টোবর ২০২১ দুপুরে তিনি আমাকে ডেকে এ বিষয়ে আলাপ করেছেন।

অভিনন্দন প্রিয় আশেক ভাই, সাবেক ছাত্রনেতা, মুজিবাদর্শের সিপাহশালা। দুই, ঈদগাহ মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত ঈদগাহ মডেল হাইস্কুলে তিনি একটি বিশাল পাঠাগার স্থাপন করবেন। তাকে এ বিষয়ে অনুপ্রাণিত করেছেন তারই হাতেগড়া ছাত্র ঈদগাহর কৃতি সন্তান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। বিগত বছর বইমেলা থেকে সর্বোচ্চ বই কিনেছিলেন কক্সবাজার পৌরসভার মান্যবর মেয়র, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। তিনি এবছর হয়তো কোন না কোন কারণে বা আচার-আচরণে আমার উপর রাগ-অভিমান করেছেন। তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। তবে আমার এই সহজ-সরল প্রিয় নেতাকে পরিকল্পিতভাবে যারা কানভারি করেছেন তারা মুজিব বদ্দার শুভার্থী নয় বরং সুবিধাবাদী। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কর্মী, কোন নেতার অন্ধ চামচা নয়, তাই অনেক সময় শেখ হাসিনার রাজনীতির স্বার্থে, আওয়ামীলীগের স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ- কান বন্ধ করে, মোহ ত্যাগ করে হাছা কথাই লিখি। আরও একটি বিষয় আমার সহজ-সরল মুজিব বদ্দাসহ নেতাদের ব্যাক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থের কোন্দলের কারণে দুর্দিন দুঃসময় আসে আমিই তাঁদের জন্য লিখে পাশে থাকার চেষ্টা করি। কারও অনর্থক চামচামি করতে অভ্যস্ত নই। কারণ রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা আদায় করার লোক আমি নই। প্রিয় পাঠক আপনাদের আর ধৈর্যহারা করবো না।

আগামী বছর যদি আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি আবারও শেখ হাসিনা বইমেলা হবে। এবছরের শ্রেষ্ঠ তিন বই ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কে আমার পক্ষ থেকে সম্মাননা পদকে ভূষিত করার চেষ্টা করবো। এক সাংবাদিক ও কতিপয় ঈর্ষাপরায়ণ চাটুকার বলাবলি করছে এবং আমার কানেও এসেছে, আমি ওনাদের ভাষায় শেখ মুজিব ও হাসিনা ব্যবসায়ী। প্রকৃত মুজিবাদর্শের কর্মীরা বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিব বলে সম্বোধন করে না। ডাকে বঙ্গবন্ধু বা জাতির পিতা, পিতা মুজিব, আর দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ডাকে নেত্রী বা আপা বলে। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ভাই রাজনীতি করে বাড়ি-গাড়ি কিছুই করিনি, কিছুই করতে চাইনি, পবিত্র বই বিক্রি করে যদি পেটচলে আপনার এতো খারাপ লাগার কারণ কি? ইয়াবা ব্যবসা তো করছিনা।

ইয়াবা ব্যাবসা টাউট-বাটপারি করলে কি আপনাদের ভালো লাগতো? শুনেন জ্ঞানের আলোর গতিকে সুক্ষ্ম কৌশলে বা প্রকাশ্যে বাধা দেয়া যায়, যেখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে সেখানে সরল রেখায় প্রবাহিত হতে না পারলে তা বক্ররেখায় হলেও প্রবাহিত হবে। জ্ঞান এমনই শক্তিশালী, সে বাধা মানে না।

শেখ হাসিনা বইমেলার পক্ষ থেকে আমি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কক্সবাজার জেলা শাখা, বিজয় মুখ গণসাংস্কৃতিক সংগঠনকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর ঠিকাদার ফারুক চাচাকে,পাবলিক লাইব্রেরীর কর্মী রিয়াদকে।
ধন্যবাদ ভালোবাসা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যাঁরা আমার মুজিববাদী চেতনা কে সম্মান দেখিয়ে বই পাঠিয়ে মেলা কে পাঠক সমাদৃত করেছেন আগামী প্রকাশনী, অনন্যা প্রকাশনী, প্রকৃতি, খড়িমাটি, চঁন্দ্রবিন্দু'র প্রতি।

ভালোবাসা জানাচ্ছি কবি কামরুল বাহার আরিফ, শামীম আকতার, অকাল প্রয়াত কবি শান্তনু মনিরের পক্ষে আহমদ ইমতিয়াজ মানিক, নুপা আলম, নাসের ভুট্টো, সাইয়িদ মঞ্জু, রুদ্র শাহাদাত, সুব্রত আপন, মার্জিয়া বেগমকে। সবার প্রতি পরম শ্রদ্ধা।

কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি নব্বইয়ের সাবেক ছাত্রনেতা, কলামিস্ট বদরুল ইসলাম বাদল, কবি সাংবাদিক মোহাম্মদ হোসাইন এদু'জন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউজ পাঠিয়ে প্রকাশ করে প্রচারণা চালানোর জন্য।

ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা, উত্তরাধিকার ৭১ ও বাংলা ৭১ এর সম্পাদক শ্রদ্ধেয় প্রবীর সিকদার, কক্সবাজার নিউজ ডটকম এর সম্পাদক অধ্যাপক আক্তার চৌধুরী, সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, মেজবাহ উদ্দিন, সাংবাদিক নুপা আলম, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আবু সাগর, সাবেক ছাত্রনেতা, সাংবাদিক ইমতিয়াজ মাহমুদ ইমন সহ প্রত্যেকের প্রতি।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কক্সবাজারের অন্যতম বই বিপণী "ইস্টিশন " এর আমার পালিত কন্যা অণুরণন সিফাত ও ঝিনুককে এবং অবশ্যই যার সার্বক্ষণিক পরামর্শ সহযোগিতা ছাড়া প্রতিবছর মেলা আয়োজন করা সম্ভব হতো না, তিনি অর্থাৎ আমার সহধর্মিণী জায়নূর বেগম শাহীন ও তার ছাত্রছাত্রীদের।

লেখক : কবি ও রাজনৈতিক কর্মী।

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test