E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তিকারীরা ছাড় পেলে বিতর্কিত হবে আ.লীগ 

২০২২ আগস্ট ২৬ ১৮:৩২:২৬
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তিকারীরা ছাড় পেলে বিতর্কিত হবে আ.লীগ 

আশজাদ রসুল সিরাজী


গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বহিস্কৃত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও এবং অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কীভাবে একজন মানুষ ক্ষমতার আসনে বসে দেশের গর্ব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কটুক্তি করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন নিজের ও পরিবারের জীবনের কথা চিন্তা না করে ঝাপিয়ে পরেছিলেন পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। সেদিন শুধুই ছিল একটি চিন্তা, তাহলো স্বাধীনতা।
মা বাঁচলো না মরলো, কোথায় বাবা, কোথায় সন্তান, বোনটির ইজ্জত আছে না গেল, এসব চিন্তা বা পিছুটান ছিলনা বীরদের।

একটিই চিন্তা ছিল স্বাধীনতা, স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা। তবে জাহাঙ্গীর আলমের মাথায় কেমন করে আসলো এই চিন্তার বিকৃতি। চিন্তার বিকৃতি হল মানুষের অভ্যাসগত এমন এক ধরনের চিন্তন যা মোটেও সত্য নয় ও নেতিবাচক পক্ষপাত দোষে দুষ্ট। এই ধরনের চিন্তার বিকৃতিগুলো সাধারণত আবেগগুলোকে শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হয়।

আমার জন্ম স্বাধীনতার বহু বছর পর, তারপরও স্বজনহারাদের দেখে উপলব্ধি করতে পারি তাদের ব্যাথা।
তবে কি সঙ্গদোষে জাহাঙ্গীর আলমের এই মতিভ্রম হয়েছে। জানতে চাই আওয়ামীগের কাছে, কিভাবে হলো তার মতিভ্রম? এর পিছনে কারা কারা জড়িত? তাদের উদ্দেশ্য কি?

বিরোধী দল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের যে সংখ্যা বলা হয় তা নিয়ে বিতর্ক আছে। স্বাধীনতার ৪৫ বছরের মাথায় এসে ঢাকায় আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এই মন্তব্য করেন। সূত্র - বিবিসি নিউজ বাংলা (২১ ডিসেম্বর ২০১৫)।

আর বহিঃকৃত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মুখে একই ধরনের কথা, একই ভাষা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ৬দিনের মাথায় ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. জহিরুল আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সিটি করপোরেশন আইন-২০১৯ এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এই কটুক্তিকারীর শান্তি কি তবে জরুরী নয়। আবার জেলা জুড়ে গুঞ্জন, ফিরে আসছে সেই কটুক্তিকারী জাহাঙ্গীর আলম।

কীভাবে সম্ভব, কেমন করে সম্ভব? তবে কি জাতির পিতা ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এই কটুক্তিকারীরা ক্ষমতায় থাকবে আর সেই রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে সবহারারা, মরবে পচবে গলবে হারিয়ে যাবে। আর অট্টহাসি হাসিতে হাসবে ইতিহাসের কটুক্তি ও বিকৃতিকারীরা।

প্রশ্ন করা হয়নি ভাষা সৈনিক মোস্তাক রসুল সিরাজীকে(শ্রদ্ধেয় চাচা), গুলি বিদ্ধ হয়ে রাতের অন্ধকারে বিনা কাপড়ে বাসায় ফিরে আসা সোহরাব চাচাকে, শহিদ হয়ে যাওায়া ফুপাকে কেন এই স্বাধীনতা যদি সন্মানিত করতে না পারি তোমাদের। এই প্রশ্ন আওয়ামীগের কাছে, এই প্রশ্ন বীরদের কাছে, জানি উত্তর পাবোনা তবু আশায় থাকি।

লেখক :সাংবাদিক।

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test