E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্বাচন নিয়ে ভয়, কি জানি কি হয়!

২০২৩ জানুয়ারি ১৬ ১৫:২৯:২২
নির্বাচন নিয়ে ভয়, কি জানি কি হয়!

মীর আব্দুল আলীম


বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আর্ন্তজাতিক মহলেরও এই একই চাওয়া। আসন্ন নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ- এমন বিশ্বাস নিয়ে বসে আছে দেশের জনগণ। সরকার দলও আবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের পক্ষে। তাহলে নির্বাচন নিয়ে এত ভয় কেন? সবসময়ই নির্বাচনের ব্যাপারে সবার একই চাওয়া থাকে। কাজে কামে উল্টো দিখি মাঝে মাঝে। এখানেই যত ভয়; কি জানি কি হয়!

১৫ জানুয়ারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর নেতৃত্বে শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রায় ৩২ ঘণ্টার হাই প্রোফাইল ও ঝটিকা সফরে সরকারের পাঁচ জন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। ডোনাল্ড লু ২০২৪-এর শুরুতে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হওয়ার ব্যাপারে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানান, যুক্তরাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়, বরং মানসম্পন্ন নির্বাচনি প্রক্রিয়া, জনগণের অধিকারই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার। এই নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে কি না, সেজন্য কী করণীয় এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিয়েও কথা বলেছেন। এর আগেও মার্কিন একাদিক দল সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপাওে তাদের অবস্থান পষ্ট করেছেন। অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেশ কয়েকটি বৈঠকে সরকারের একাধিক মন্ত্রী ডোনাল্ড লুকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে সরকার আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেরও প্রত্যাশা, সব বড় দল নির্বাচনে অংশ নেবে।

প্রশ্ন হলো আগত দ্বাদশ নির্বাচন কেমন হবে? নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হবে তো? নাকি কারচুপির নির্বাচনে জিতে যাবে সরকার দলীয় প্রার্থী? আগের মতো কারচুপি আর জোরজুলুমের নির্বাচনই হবে কিনা তা নিয়ে দেশজুড়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে ইসি এবং সরকার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণ করুক- এটা এখন কায়মনে দেশবাসী চায়। এদেশে সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের শঙ্কা থেকেই যায় বরাবর। তাই সামনের নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও অবাধ করে বিগত নির্বাচনের কষ্ট জনগণকে ভুলিয়ে দিক ইসি, এটাই সকলের প্রত্যাশা।

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রকৃতই ভয় কাজ করছে সবার মাঝে। নির্বাচনের আগে কেমন যেন দেশের পরিবেশটা ভারী হয়ে আছে। সে ভয় উতরে অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হোক, এটা সবার প্রত্যাশা। আমরা চাই না, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সংঘাত হোক। নির্বাচনী রক্তপাত বহু দেখেছি। রাজনৈতিক দলগুলোকে আগুন নিয়ে খেলা করতে দেখেছি। মানুষের পোড়া লাশ দেখেছি। জ্বালাও-পোড়াও কোনোটা দেখিনি? আমরা চাই না, এ নির্বাচনে কোনোরকম রক্তপাত হোক অথবা প্রাণহানি ঘটুক। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাতময় কোনো পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, রক্তপাত যাতে না ঘটে; সেদিকে নজর রাখার আহ্বান জানাই সিইসির কাছে।

আমরা দেখেছি, ৫ বছরের শেষ বছরটা ভালোয় ভালোয় কাটে না। মারামারি, খুনোখুনি আর নানা হাঙ্গামায় উত্তপ্ত থাকে দেশ। এবার এমনটা হয়নি। আসলে হয়েও হয়নি। নির্বাচন সামনে রেখে ভয় সব সময়ই থাকে। বিগত নির্বাচনগুলো একতরফা হলেও এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনে হচ্ছে তা হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হলে কোনো সংশয় নেই। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন জনগণ কামনা করে না। ভোটের অধিকার প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি নাগরিকের। সবাই যেন আনন্দ চিত্তে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সে নিশ্চয়তা নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনকারীদের দিতে হবে। নির্বাচনের পর রাজধানীতে যেন কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। আপামর জনগণের প্রত্যাশাও তাই। নির্বাচনের আগে ও পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা ভালো ভূমিকা থাকতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আচরণবিধি প্রয়োগ করতে গিয়ে এমন কিছু করবে না যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। নির্বাচন ঘিরে আগে ও পরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, দলসহ সংশ্লিষ্ট সবাই কী করতে পারবে আর কী পারবে না, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে আচরণ বিধিমালায়। নিয়ম ভাঙলে শাস্তির বিধানও রয়েছে সেখানে। ভোটের মাঠে সমআচরণ ও সমান সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে হবে। জুডিশিয়াল মাইন্ড নিয়ে আইন-কানুন ব্যবহার করতে হবে। আইনকে সমুন্নত রেখে কাজ করলে সুষ্ঠু একটা নির্বাচন ঠিকই উপহার দিতে পারবে ইসি।

তবে এটা বলতেই হয়, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া চলতি সরকারের সময়টা খুব একটা খারাপ যায়নি। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে, দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রাস্তাঘাট ফ্লাইওভার, ব্রীজ হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি আর গণতন্ত্রে ঘাটতি থাকলেও, হরতাল অবরোধ না থাকায় জনমনে স্বস্তি আছে। জ্বালাও পোড়াও নেই। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পেরেছে, শিল্প কারখানায় উৎপাদন হয়েছে। ভয় এখানেই; এ ধারা ঠিক থাকবে তো? সামনের দিনগুলো ভালো যাবে তো? নির্বাচন ঘিরে আবার জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর, হরতাল অবরোধ এসব হবে না তো? সাধারণ মানুষের মধ্যেও নির্বাচনকে ঘিরে বেশ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তবে তারা নির্বাচনকে ঘিরে আর কোনো অশান্তির পরিবেশ চায় না। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তাহলে আন্দোলনের ইস্যু তৈরি হবে; বাড়বে আশান্তি। অর্থনীতি ধ্বংস হবে। সম্পদ নষ্ট হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের ক্ষয় হবে। দেশে বেকারত্ব বাড়বে, অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দেবে। দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হবে।

সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হবে। এমনটা আমরা কেউই আর চাই না। তবে এটাও সত্য, বিরোধী দলের রাজনীতি করার পরিবেশ দিতে হবে বর্তমান সরকারকে। দেশের স্বার্থে তাদেরও ছাড় দিতে হবে। আগে রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে আমরা প্রতিদিন যা দেখেছি সে কথা এখনো ভুলেনি জনগন। প্রতিনিয়ত চোখের সামনেই এসব ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছি আমরা। পোড়া গাড়ি-ঘোড়া, মানুষের ঝলসানো লাশ লাশ দেখেছি। আমরা চাই, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। দেশে আর অশান্তি না হোক। যেকোন মূল্যে আগত দ্বাদশ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করা হোক। জনপ্রত্যাশা এই: ইসি সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। সরকারও সততার সঙ্গে যথাবিধি সহযোগিতা প্রদান করবে। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু গণতন্তের ভীত রচনা করেছিলেন। গণতন্ত্রের মূলভিত্তি নির্বাচন, এ কথা আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবেই।

নির্বাচনে কেউ জিতবেন, কেউ হারবেন। যারাই জিতুক, শান্তিপূর্ণ ও অবিতর্কিত নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হলে দলের জয় গণতন্ত্রের জয় বলে প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, কোন চাপে এই নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যকে যেন প্রভাবিত করা না হয়। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে। জয়-পরাজয় যাঁরই হোক, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে পরাজিত হলে চলবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে কী হবে? আবার সংঘাত, সংঘর্ষ হবে? এটা এখন হয় না র‌্যাব-পুলিশের পিটুনি আর মামলার ভয়ে। চাপা ক্ষোভ তৈরি হবে। সরকার এবং ইসির প্রতি বাজে ধারণা তৈরি হবে। বিগত নির্বাচনগুলো একতরফা হলেও এবার ঢাকা সিটির নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হলে কোনো সংশয় নেই। না হলেই যত বিপদ। রাজনৈতিক যুদ্ধ হতে পারে। যদিও এর সম্ভাবনা কম।

আগত নির্বাচনে ভোট পদ্ধতি ইভিএম নিয়ে বিতর্ক আছে; ভীতি আছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে ভীতিকে অমূলক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। তিনি বলেছেন, ইভিএমে ভোটে আপত্তির কোনো কারণ নেই। ইভিএমই একমাত্র উপায় যেখানে জাল ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকে না। অন্য কোনো কেন্দ্রের লোক এসে এখানে ভোট দিতে পারবে না। একবার ভোট দিলে আবার ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। সেখানে কমপক্ষে ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনেকে এই সিদ্ধান্তকে স্ববিরোধী এবং অযৌক্তিক মনে করেন। তবে ইভিএমের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর যে আস্থার ঘাটতি আছে, সেটি নির্বাচন কমিশন অকপটে স্বীকার করেছে। দেশের ৩৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্ত থেকে নির্বাচন কমিশনকে সরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

এটাও সত্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কারচুপি ও বড় ধরনের ত্রুটির কারণে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার বর্জন করেছে। বিভিন্ন দেশের আদালত এ মেশিনে ভোট গ্রহণের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। এমনকি আবিষ্কারক দেশ আমেরিকায় এই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর বাংলাদেশে হঠাৎ করেই সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার জন্য আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের পক্ষ থেকে বিরোধিতা করা হলেও নির্বাচন কমিশন তা আমলে নেয়নি।

বিভিন্ন বিদেশী পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এই পদ্ধতি চালু হয়, কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীর ৯০ শতাংশ দেশে ইভিএম তথা ই-ভোটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় না। শুধু তাই নয়, যে কয়েকটি দেশ তা চালু করেছিল তারা এখন নিষিদ্ধ করছে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে বিগত বিশ বছর ধরে ইভিএম চালু রয়েছে কিন্তু ২০০৯ সাল হতে এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে অভিযোগ উঠতে থাকে। ভারতের আদালতে ইভিএম এর বিরুদ্ধে একাধিক পিটিশন রয়েছে। সম্প্রতি দেশটির সিংহভাগ রাজনৈতিক দল এ পদ্ধতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেস দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি গত সপ্তাহে জানান যে, শুধু তাদের দলই নয় দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ রাজনৈতিক দলই মনে করে যত দ্রুত সম্ভব কাগজের ব্যালট আবার ফিরিয়ে আনা উচিত। এ দাবিতে তারা অনড়। ইভিএমের প্রতি তাদের বিশ্বাস নেই। আয়ারল্যান্ড ই-ভোটিং পরিত্যাগ করেছে ২০০৬ সালেই। ২০০৯ সালে জার্মানির ফেডারেল কোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। ২০০৯ সালে ফিনল্যান্ডের সুপ্রিমকোর্ট তিনটি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের ফলাফল অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করে। নেদারল্যান্ডে ই-ভোটিং কার্যক্রম শুরু হলেও জনগণের আপত্তির মুখে তা প্রত্যাহার করা হয়।

বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো- নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ প্রবাদটি অনেক পুরনো। ইসি হুঙ্কার দেবে আর ফাঁক-ফোঁকড়ে অধিক ক্ষমতাধর প্রার্থীরা তরী পার হবেন তা যেন না হয়। কোনো কিছু অর্জনের জন্য কোন গোষ্ঠি নানা রকম কলকব্জা শক্ত করে আঁটতে থাকেন। ষড়যন্ত্রের মধ্যে এমন সব ফাঁক-ফোঁকড় থাকে যা দিয়ে সহজের পার পাওয়া যায়।

ব্যবহারিকভাবে যখন কোনো কিছু বাঁধার জন্য গিঁট বা বাঁধন দেয়া হয় তখন স্থান-কাল-পাত্রভেদে এটা এমনভাবে করা হয় যা কিনা কারো জন্য খুলে ফেলা সহজ হয়। আর কারো জন্য কঠিন ও জটিল হয়ে পড়ে। এমনটা যেন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে না করা হয়। নির্বাচন সুষ্ঠ হউক এটা সবায়ই চায়। তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা সেটার নিশ্চয়তা চায়। কারণ, ভোটারদের ইচ্ছার ওপর ভোট দেয়া এখন আর নির্ভর করে না। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক ভূমিকা এবং নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার ওপর ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার বিষয়টি নির্ভর করে। এই বিষয়গুলো ঠিক না থাকলে নিবর্বাচন প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যাবে। এমনটি যেন না হয়। নির্বাচনের নামে প্রহসন চায় না মানুষ। এ সরকাওে সময় এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ারও কিন্তু নজির আছে। সব প্রতিকূলতা, আশঙ্কা, ভয় ভীতি দূরে ঠেলে ইসি একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের উপহার দেবে আমরা আশা করি। দেশে উন্নয়নও হচ্ছে ব্যাপক। মেট্রো রেল, স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়েছে গাঁটের টাকায়।অগণতন্ত্রের বলে শোকতাপ কিন্তু উন্নয়ন ভুলিয়ে দিচ্ছে অনেকটাই। এ অবস্থায় অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনতো সরকার করতেই পারে। আমরাও অবাধ এবং নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন চাই।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ গবেষক।

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test