ঢাকার যানজট কমাতে লন্ডনের পথে হাঁটতে হবে
মীর আব্দুল আলীম
রাজধানী ঢাকার যানজট কিছুতেই কমছে না। সঙ্গে পার্কিং নৈরাজ্যও প্রকট। রাজধানী ঢাকার যানজট কমাতে বাংলাদেশকে লন্ডনের পথে হাঁটতে হবে। তাতে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় বাড়বে, কমবে যানজটও। রাজধানীতে মেট্রেরেল চালু হলে যানজট কমে আসবে এমনই ধারনা করা হচ্ছিলো। কিন্তু যানজট কমেনি। নগরীর ব্যস্ত এলাকার প্রধান সড়ক, শপিং মল ও সুপার মার্কেটের সামনে গড়ে উঠেছে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা বন্ধ না হলে যানজট কমবে না। গত মাসে যুক্তরাজে চিকিৎসক ছেলে মেয়ের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানকার পাকিং ব্যবস্থাটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমাদের দেশে পাকিংয়ের কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজ, রাজনৈতিক দলের নেতা আর প্রশাসনের লোকজনের পকেটস্থ হয়। আর লন্ডনসহ স্কটলেন্ডের বিভিন্ন জায়গায় পাকিং থেকেই সরকার কোটিকোটি টাকা আয় করছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সেখানে পাকিং নিয়ন্ত্রীত। বেশি সময় অহেতুক যাতে কেউ পাকিং করে গাড়ি না রাখে এজন্য পাকিং চার্জটা একটু বেশীই সেখানে। এটা যানজট নিরসনের পলিসি বটে! যেহেতু বেশি টাকা গুণতে হয় তাই কাজ ছাড়া কেউ গাড়ি বের করে না সেখানে, আর করলেও দ্রুত কাজ সেরে পাকিংমুক্ত করে গাড়ি। ঘন্টা যত বাড়ে চার্য তত বাড়তে থাকে। এতে সরকার মোটা অর্থ পাচ্ছে অন্য দিকে যানজটও তেমন লাগে না। উন্নত এসব দেশেও রাস্তার পাশেই পাকিং ব্যবস্থা থাকে। সরকার তা নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়টি সরকার সংশ্লিষ্টরা ভেবে দেখলে রাষ্ট্রের যেমন এ খাতে আয় বাড়বে, যানজটও কম হবে। আামাদের দেশে অপ্রয়োজনে রাস্তায় গাড়ি রেখে কোন খোশগল্পে মশগুল থাকেন। বাড়তি পাকিং চার্য ধরা হলে এবং ট্রাফিক আইন সঠিক প্রয়োগ হলে রাস্তায় অপ্রয়োজনে গাড়ি বের করা কিংবা পাকিং করা কমে যাবে।
সম্প্রতিকালে রাজধানীতে বাড়ছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। অনুপযোগী হয়ে উঠছে শহরের অলিগলি। এতে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ফলে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা, তেমনি পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি। কষ্টের কথা হলো, যানজটের কারনে যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকার বাহিরে বিশেষ করে উত্তরা, দিয়াবাড়ি, পূর্বাচল, সাভার আর মুন্সিগঞ্জে স্থানান্তরের কথা ভাবা হচ্ছে ঠি সে সময় বাড্ডা রামপুরা যানজটপূর্ণ সড়কের পাশে ব্যাক ইউনিভার্সিটির সকল শাখা বিশাল ক্যাম্পাসে স্থান্তার বেদনা দায়ক। ব্যাক ইউনিভার্সিটির কারনে রামপুরা বাড্ডা, কুড়িল, মালিবাগের স্থায়ী যানজট তৈরি হয়েছে। এ যানজট সারা ঢাকায় প্রভাব ফেলছে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত গাড়িতে কিংবা অন্য কোন পরিবহলে আসায় সেখানকার যানজট এখন নিত্যদিনের। এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে কিভাবে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শাখার অনুমোদন দেয়া হলো তা বোধগম্য নয়।
নগর পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, রাজধানীর পার্কিং ব্যবস্থায় উন্নিয়ন এবং ফুটপাত দখলমুক্তকরা গেলে ঢাকার জানজট অনেকটাই কমে আসবে। পার্কিং নৈরাজ্য নিরসনে ২০০৭ সালে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করার পর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিএসসিসির আরবান প্লানিং বিভাগ একটি খসড়া তৈরি করে।রাজধানীর পার্কিং স্পটগুলোতে কত সংখ্যক গাড়ি পার্কিং করা যায় তাও নির্ধারণ করা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করবে গাড়ি। দিতে হবে টোল। টোল আদায় কর্মীদের অনুমতি ছাড়া রাস্তার পাশে কেউ গাড়ি পার্কিং করতে পারবে না। তখন আশা করা হয়, এতে গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে ফিরে আসবে শৃঙ্খলা, কমে যাবে যানজট। ১৫ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি গাড়ি পার্কিং মহাপরিকল্পনা। তাতে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে নগরবাসীকে ভীষণভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন নগরবাসীর কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি।
মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজধানীর অনেক সড়ক অবৈধ পাকিংয়ের জন্য কথিত ইজারা দেওয়া হয়। সড়ক চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, সরকার সংশ্লিষ্ট দপ্তর, রাজনীতিবিদ মিলে রাজধানীর সড়ক থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে এমন খবর পত্রিকায় প্রায়ই ছাপছে। রাজধানীর রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে চাঁদা তোলার পর গাড়িগুলো শান্তিতে অন্তত থাকতে দেয়া উচিত। চাঁদাবাজরা চাঁদা নিয়ে যাবার পরই দৌড়ে আসে ট্রাফিক পুলিশ। রাস্তায় গাড়ি রাখার অপরাধের জন্য অনেক আইনি কথাবার্তা বলে পরক্ষণেই র্যাকার বিল, ওমক বিলের নামে বিনা রশিদে ৫শ’, ১ হাজার ক্ষেত্রভেদে দু’হাজার আদায় করে ওরা। এ ব্যাপারে এখলাস গ্রুপের গাড়ি চালক পত্রিকাকে জানান, তিনি মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনের সড়কে গাড়ি পাকিং করতেই একজন তার কাছ থেকে পাকিং বাবদ ২০ টাকা নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ট্রাফিক পুলিশ র্যাকার নিয়ে হাজির। আসেপাশের সব ক’টি গাড়ি আটকে অর্থ আদায় করে। আর এইভাবে গাড়ি পাকিং আর র্যাকার বিলের নামে রাজধানী পুলিশ আর চাঁদাবাজদের খেলা চলে সড়কজুড়ে। পার্কিংয়ের নামে দলীয় লোক চাঁদা তোলে পার্কিং দেয় আর পুলিশ গাড়ির কাগজ পরীক্ষা আর র্যাকার লাগিয়ে ঘুষ নেয়। বাহ ব্যবসাটাতো ভালোই?
প্রশ্ন হলো রাস্তায় সে সব গাড়ি চলে তা বৈধ কি না। ছাত্ররা সড়ক আন্দোলনে নামার পর অবৈধ আর কাগজের মেয়াদ ছাড়া গাড়িগুলো প্রায় সকল মালিকই বৈধ করে নিয়েছে। প্রতিটি গাড়ি প্রতিবছর ৩০ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স দিয়ে তবেই সড়কে চলে। সড়কে গাড়ি চললে কোথাও না কোথাও দাঁড়ানোর জায়গাও দিতে হবে গাড়িগুলোকে। আপনারাই বলুন রাজধানীর কোথায় এসব গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা আছে? রাজধানীতে বেসরকারিভাবে দিলকুশায় কতক গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ছাড়া আমার জানা মতে বড়বড় মার্কেট ছাড়া আর কোথাও এমন বৈধ পার্কিংয়ের জায়গা নেই। সড়কেই গাড়ি পার্কিং দিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় গোটা রাজধানী জুড়ে। সেখানেও শান্তি নাই। পুলিশ এসে নানা বাহানায় চাঁদা আদায় করে। প্রশ্ন হলো- অপরাধ হলে মামলা দিয়ে দিক পুলিশ। তাতে মানুষ ভয়ে রাস্তায় গাড়ি আর পার্কিং করবে না। সড়কও অনেকটা যানজটমুক্ত থাকবে। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ ক’টা গাড়ি আটকায় আর ক’টা গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে? হাতে গোনা কিছু ছাড়া প্রায় সব গাড়ি ছেড়ে দেয় অর্থের বিনিময়ে।
মানুষ গাড়ি কোথায় পার্কিং করবে তা দেখিয়ে দিক পুলিশ। কথায় বলে না যে ‘ভাত দেয়ার মুরদ নেই তো কিল দেয়ার গোসাই’। আপনারা গাড়ি থেকে ট্যাক্স নিচ্ছেন, পার্কিংয়ের জন্য চাঁদাবাজরা চাঁদা নিচ্ছে, আবার ট্রাফিক পুলিশ নিচ্ছে ঘুষ। পার্কিংয়ের জায়গা না দিয়ে পাবলিককে আর কত ধরনের সাজা দিবেন আপনারা। ঢাকার রাস্তায় নামলেই একটি জিনিস পরিষ্কার হয়ে ওঠে, শহরটাতে কোনো শৃঙ্খলা বোধ নেই। যে যার মতো গাড়ি পার্কিং করছে, মানুষের হাঁটার পথেই দোকান দিচ্ছে, রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করছে। তাহলে তো যানজট হবেই। এ কথা সত্য যে আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এই অর্থনৈতিক সাফল্যের সঙ্গে আমাদের নাগরিক অধিকার বোধ, বিশেষ করে নিয়ম-নীতি বোধের উন্মোষ ঘটেনি। আমরা বরং দিন দিন খুবই বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছি। আমাদের চিন্তায় ট্রাফিক আইন না মানার একটি ব্যাধি ঢুকে পড়েছে। এ ব্যাধিটার জন্য আমরা জনগণই দায়ী তা বলা ভুল হবে। সমস্যাটা এখানে যে, এদেশে আইন মানানো হয় না।
রাজধানীতে যখন পড়ালেখা করি তখন ঢাকার পাশের নারায়ণগঞ্জ থেকেই প্রতিদিন ঢাকায় আসতাম। রাজধানীর গুলিস্তানে এসে প্রতিদিন যুদ্ধে নামতে হতো। গাড়ির তুলনায় মানুষ অনেক বেশি ছিল তাই ধাক্কাধাক্কি করে বাসে চড়তে হতো। কখনো কখনো শার্টে বোতাম, কাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে যেত। কেবল চুল ছেঁড়া বাকি থাকত। নারায়নগঞ্জের মানুষ হিসাবে প্রায় সময়ই এমন অভিজ্ঞতা হতো আমাদের। সেই গুলিস্তানে এখন যাত্রীদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলভাবে গাড়িতে উঠতে দেখি। আইন করে আইনের প্রয়োগ করছে বলে মানুষও আইন মানছে। আইন আসলে মানাতে হয়। কাজটা সরকারকেই করতে হয়। মানুষ আইন মানে না এটা আমি বিশ্বাস করি না। আইন মানাতে বাধ্য করলে সবাই আইন মানে। চাঁদা নিয়ে রাস্তায় পার্কিংয়ের জন্য সুযোগ না দিলে, পুলিশ ঘুষ নিয়ে গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করাতে না দিলে কেউ আর রাস্তায় গাড়ি রাখবে না। আসলে গোড়ায়ই সব গলদ। সব গলদ দূর হলে রাজধানীর সড়কগুলো অনেকটাই যানজটমুক্ত থাকবে।
নগর পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, বহুতল ভবনে পার্কিং না থাকায় সামনের রাস্তায় গাড়ি রাখার কারণে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় যানজট ‘স্থায়ী’ রূপ নিয়েছে। বহুতল ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে যানজট পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর বেশির ভাগ ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে দিনের বেলা অধিকাংশ ভবনের সামনে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়, যা ওই এলাকার যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ। সিটি কর্পোরেশন থেকে তাদের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে যে কে কোন এলাকার ভাড়া আদায় করবে।এম সংবাদ প্রকাশ করেছে দ্বায়িত্বশীল অনলাইন মিডিয়া ঠোকাস বাংলা। ঐ মিডিয়ায় প্রকাশ, সিটি কর্পোরেশনের ত্বত্তাবধায়নে এই ভাড়া আদায় করা হয়। কিন্তু পরে সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের খোজ করা হলে তিনি বলেন, মাসিক কিছু টাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় তাদের এই কর্মকান্ড পরিচলনা করার জন্য।
রাস্তার ওপর অবৈধ পার্কিং থেকে টোল তুলছে একটি সিন্ডিকেট। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে ওঠা এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত আছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অবৈধ পার্কিং করা গাড়ি থেকে পুলিশ নিয়মিত টাকা নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই তো তাদের গাড়িতে পুলিশ লকার লাগায় না। দিলকুশার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের বাইরে গাড়ি পার্কিং নিষেধ লেখা থাকলেও বেশিরভাগ জায়গায় তা লেখা নেই। গাড়ি পার্কিং করলেই কিছু কিছু গাড়ির মালিককে জরিমানা গুণতে হয়, অথচ পাশেই অন্য গাড়ি রাস্তায় পার্কিং করা থাকলেও সেগুলোকে অদৃশ্যকারণে জরিমানার আওতায় না আনার কারণে ওই এলাকার ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রাজধানীর সড়কে কারনে পাকিং নৈরাজ্যের যানজট এথন প্রকট।
আমরা যারা সাহেব হয়ে গাড়িতে বসে থাকি তারাও কম দোষী কই? ঠামাদেও কারনেও সড়কে যানজট তৈরি হয়। আমরা কোট প্যান্ট পরা সাহেবরা অনেক ক্ষেত্রে ড্রাইভারদের নিয়ম ভাঙতে সাহায্য করি। রাজধানীতে মন্ত্রী আমলা, বিচারপতির গাড়ি উল্টে পথে চলার নজর আছে। আমরা আইন ভাঙি হরদম। আসলে আইন ভাঙি সমস্যা হয় না বলে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে, সমস্যা হলে কিছু টাকার বিনিময়ে ছাড় পেয়ে যাই বলেই আমরা আইন ভাঙতে সাহস পাই। এতে ড্রাইভাররা অনিয়মে উৎসাহিত হয়। মোদ্দা কথা হলো, আমার চিন্তা আমার পকেটের। পকেটে টাকা আছে তো ‘কুছ পরোয়া নেহি’। টাকায় সব সমাধান হয় যে দেশে সে দেশের মানুষ তো আইন ভাঙবেই। এ কথা অনস্বীকার্য যে, আমাদের গাড়ির তুলনায় রাস্তা অপ্রতুল। কিন্তু ফ্লাইওভার এবং অন্যান্য নতুন রাস্তার পরও যতটুকু যান চলাচল সুবিধা আসার কথা, তা পাচ্ছি না। শুধু আমাদের নিয়মবহির্ভূত আচরণের জন্য।
কি করতে হবে আমাদের? আর সরকারই বা কি করবে? সরকার আমাদের ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করুক। গাড়ি চলাচলের রাস্তা নিরবচ্ছিন্ন গাড়ি চলাচল করতে দিক। অবৈধ গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থাকুক। মানুষ চলাচলের রাস্তায় মানুষ চলাচল করুক। ফুটপাথে যেন কেউ- তেল, লবণ, সেন্ডেল, জামা কাপড়, স্নো ক্রিমের দোকান না বসাতে পারে সে ব্যবস্থা সরকার করুক। অবৈধ পার্কিং, ফুটপাথ পরিষ্কার রাখতে দলীয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সড়ক ফুটপাথে দলীয় লোকজনের নজর না পড়লে সড়কগুলো অনেকটাই ভালো থাকবে। সর্বোপরি এ জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছা খুব জরুরি। তাহলেই যানজটমুক্ত হবে আমাদের সড়কগুলো।
প্রকৃতপক্ষে, রাজধানীতে গাড়ি পার্কিংয়ের পরিকল্পনার অভাবে এবং অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে রাজধানীতে বারো মাসই যানজট লেগে থাকে। কথা হলো রাজধানীতে যদি গাড়ি ঢোকে তাহলে এর পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও করা জরুরি। এটা সরকারকেই করে দিতে হবে। আসলে আমাদের সব কিছুতেই ভাবনা কম। পরিকল্পনার অভাব থাকে। সব জায়গাতেই ঘাপলা থাকে। অসৎ পয়সা কামাইয়ের ইচ্ছা থাকে তাই যানজটও নিরসন হয় না। এ কথা সত্য যে যানজট নিরসন করতে হলে রাজধানীর অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে হবে। অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে হলে সরকারকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বৈধ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তা না হলে একদিকে যানজটের বিড়ম্বনা, অন্যদিকে রাজধানীতে আসা গাড়ি পার্কিংয়ে সমস্যা কখনই দূর হবে না। সে সঙ্গে চাঁদাবাজদের পার্কিংয়ের নামে চাঁদাবাজি আর পুলিশের ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ হবে না। অবৈধ পার্কিং, চাঁদাবাজি আর ঘুষের মিশেল চলতেই থাকবে হরদম। রাজধানীতে যানজটের অন্যতম কারণ যত্রতত্র পার্কিং। নীতিমালা না থাকায় এটি নিয়ন্ত্রণও করা যাচ্ছে না। এ শহরে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা কখনোই রাখা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত ও মেগা শহরে এ ধরনের নীতিমালা রয়েছে। এতে শহরের ভেতরে পার্কিংয়ের জন্য গুণিতক হারে চার্জ আরোপ করা হয়। ঢাকা শহরেও চার্জ আরোপের ক্ষেত্রে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
রাজধানীর আধুনিক রাস্তার উপরে কিভাবে দিনের পর দিন ব্যবসার জন্য গাড়ি দাঁড় করানো থাকে? এমন অভিযোগ সবার। যারা নিয়ম ভাঙছেন তারাও এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করছেন, তবু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হলো না। রাস্তার জায়গা দখল করে রাস্তা সরু করা হচ্ছে তাহলে যানজট কেন হবে না? অভিযোগে লাভ হয় না। কেউ কথা শোনে না। ভাবেও না কেউ। সকলেরই অভিযোগের আঙ্গুল সরাসরি ট্রাফিক বিভাগের উপরে। পুলিশ সচেষ্ট হলে তাদের সদিচ্ছা থাকলে রাজধানীর সড়ক ফুটপাথ এভাবে বেদখল থাকত না। আর রাজধানীজুড়ে যানজটও কমে যেত। এ ক্ষেত্রে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলকে উদ্যোগী হতে হবে।
অবৈধ পার্কিং এখন ঢাকা শহরে একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি যে আইনের অমান্যতা তাই যেন সাধারণ মানুষ ভুলতে বসেছে। যেখানে সেখানে গাড়ি থামিয়ে তারা যে আইন অমান্য করার পাশাপাশি অন্য মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা নিয়ে নেই তাদের কোনো সচেতনতা। অবৈধ পার্কিং নিয়ে মানুষের অসচেতনতা, দুর্নীতি এবং সরকারের উদাসীনতা দূর করা গেলেই এই সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আশা করা যায়। তাও আবার সময় বাঁচাতে, কিছু টাকার জন্য এবং নিজেদের সুবিধার জন্য তারা এই অনিয়ম করেই চলেছে। তার ওপর সরকারের সুনজরের অভাবে এই সমস্যাটি আজ বিশাল আকার ধারণ করেছে এবং সমাধানের কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না। অবৈধ পার্কিং নিয়ে মানুষের অসচেতনতা, দুর্নীতি এবং সরকারের উদাসীনতা দূর করা গেলেই এই সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আশা করা যায়।
লেখক : সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- গরমে আইস ফেসিয়ালে যে উপকার পাবেন
- মে দিবসের কবিতা
- টানা ৮ দফা কমার পর বাড়লো স্বর্ণের দাম
- জালাল মেলায় গান শুনে অন্ধ বাউল প্রদীপ পালের ভাগ্য বদলের উদ্যোগ
- কেন্দুয়ায় খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধন
- শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগে আওয়ামীলীগে ত্রিমুখী লড়াই
- বেলকুচিতে বোমা বিস্ফোরণ মামলার আসামি আবু তালেব গ্রেফতার
- বহিস্কারের পর বিএনপির প্রার্থী আরও বেড়েছে
- প্রার্থী হয়েছেন ভাই, প্রচারণায় সংসদ সদস্য
- বরিশালে গৃহবধূকে পিটিয়ে আহত
- সড়ক দুর্ঘটনায় শাহরাস্তির বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
- বরিশালে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
- পাল্টাপাল্টি মামলায় আ.লীগের শতাধিক নেতাকর্মী আসামি, থমথমে গৌরনদী
- সাতক্ষীরা শহরের ফারাজানা ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যু
- বেলকুচিতে থানায় ঢুকে প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ ইসির
- ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আটক ৭
- বেলকুচিতে থানায় ঢুকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর হামলা, ইন্জিনিয়ার আমিনুল শোকজ
- জুয়েলারি শিল্পে বিপ্লব ঘটাতে বাজুসের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান
- বোয়ালমারীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নির্বাচন স্থগিতের অভিযোগ
- ফুলপুরে ট্রলি-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবক নিহত
- দেশের আলোচিত কিশোরী ইয়াসমিনের মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু
- নিঃস্ব কামালের মুখে হাসি ফোটালেন মেয়র ও মানবিক মানুষ
- বিদেশে বসে টাকার বিনিময়ে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা
- ‘কাপ্তাই লেকের হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনা হবে’
- পাংশাকে স্মার্ট উপজেলা করতে নিরলস কাজ করছেন ইউএনও জাফর সাদিক
- লংগদু গণহত্যা দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা
- শেখ হাসিনা: পঙ্কিল রাজনীতির পথ অতিক্রম
- কানাডার এশিয়ান হেরিটেজ মাস
- খনি শ্রমিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত প্রয়োজন
- অসাধু জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের তালিকা করবে বাজুস
- সুদানে ক্ষুধার জ্বালায় ঘাস খাচ্ছে মানুষ
- নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা রবিবার
- নিরাপদ সড়কের দাবিতে নড়াইলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত
- ‘সমৃদ্ধশালী ন্যায় বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে নাগরিক সচেতনতার বিকল্প নেই’
- কানাডায় শিখ নেতা হরদীপ হত্যাকাণ্ডে ৩ ভারতীয় গ্রেপ্তার
- সবজির বাজারে গরমের তাপ
- ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনে আনন্দ নেই, সৌন্দর্য্য নেই’
- ঢাকাসহ ৫ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস
- চামড়াখাতে ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকার প্রস্তাব সিপিডির
- কাপ্তাইয়ে চিৎমরম নদীর ঘাট পারাপারে দুর্ভোগ, সিঁড়ি বর্ধিতকরণ ও ছাউনি নির্মাণ দাবি এলাকাবাসীর
- ফরিদপুরের সিং পাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৮ দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমাপ্ত
- ফরিদপুর পৌরসভার একটি ইটের রাস্তা পাকা করার দাবিতে মানববন্ধন
- সালথায় মানবপাচার মামলায় এক নারী গ্রেপ্তার
- এক যুগ কাটিয়ে ডর্টমুন্ড ছাড়ছেন রয়েস
- রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে ভাঙ্গা ও চন্দনা কমিউটার ট্রেনের উদ্বোধন
- পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো ভারত
- ১০ কোটির মাইলফলকে পরীমণি-সিয়ামের ‘তুই কি আমার হবি রে’
- আজ থেকে শুরু হচ্ছে ট্রেনের বাড়তি ভাড়া
- হেলিকপ্টারে আগুন, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন নায়ক দেব
- জিম্মি চুক্তিতে রাজি হতে হামাসকে ৭ দিনের সময় দিল ইসরায়েল
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !