কিশোর গ্যাং নির্মূলে সহায়ক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড
![কিশোর গ্যাং নির্মূলে সহায়ক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড](https://www.u71news.com/article_images/2024/05/24/Nilkantha-Aich-Majumdar.jpg)
নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার
সম্প্রতি চারদিকে আলোচিত শব্দের অন্যতম একটি শব্দ কিশোর গ্যাং। বর্তমানে এই শব্দটি শুনলেই মনে হতাশার জেগে ওঠে। শহর থেকে গ্রামে এর ব্যাপ্তি এত পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে মানুষ শংকিত না হয়ে পারছে না। বিশেষ করে পরিবার ও সমাজ। পরিবার সমাজ রাষ্ট্র প্রতিটি স্তরেই এর কুফল ভোগ করতে হচ্ছে। ইত্যে সময়ে সমাজের বিভিন্ন কুকর্মে কিশোর গ্যাং এর প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে খুব দ্রুত। মূলত বাল্যকাল ও যৌবনের মধ্যবর্তী সময়টুকু কেই কিশোর বলা হয় এর স্ত্রী লিঙ্গ হচ্ছে কিশোরী। অন্যদিকে গ্যাং শব্দটির অর্থ গোষ্ঠী যা বাংলায় সাধারণত গং হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গং শব্দটি আতংকের ছিলো না যতটুকু গ্যাং শুনে হচ্ছে। রাষ্ট্রের কার্যকলাপারে গতি প্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। সেই সাথে মানুষের জীবন ব্যবস্থায় আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। যার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থার অনেক কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা থেকে। দিন বদলের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে মানুষের জীবন ব্যবস্থার বদল।
আমাদের মতো দেশে সেই পরিবর্তনটা ঘটছে অনেক অস্বাভাবিক গতিতে। তার সাথে সমাজ ব্যবস্থা তাল মেলাতে না পারার কারনে সমাজে বিশৃংখলা তৈরি হচ্ছে। কিশোরদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সমাজে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। একটা শ্রেণি কিশোরদের বিপথে ধাবিত করছে আবার তারাই অনেক ক্ষেত্রে কিশোর সংশোধনের দাবী উত্থাপন করছে। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে তৈরি হচ্ছে কিশোর গ্যাং ? নির্দিষ্ট কোন একটি কারনে এই গ্যাং তৈরি হচ্ছে না। শিশু হিসেবে জন্ম গ্রহণ করার পর থেকেই কেউ গ্যাং এর সাথে সম্পৃক্ত হয় না। আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকে তখনই সমাজ কিশোরদের অপরাধী করে তোলে। কিশোর থাকা অবস্থায় বিবেক সেভাবে কারো জাগ্রত হয় না। কোন অপরাধীর ছত্রছায়ায় বা রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্রের কোন ভুুল সিদ্ধান্তে কিংবা কোন লোভের কারনে কিশোররা অন্ধকার পথে পা বাড়ায়। পা বাড়াতে গিয়ে যখন সে বিভিন্নভাবে লাভবান হন তখন সে অন্ধকার পথ থেকেই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে। একসময় সে পরিবার থেথে বিছিন্ন হয়ে যেতে থাকে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমাজ ব্যবস্থাটাও এমন হয়েছে যে কেউ কাউকে সংশোধনের পথ দেখাতে চায় না। নিজের চিন্তায় এতটাই আচ্ছন্ন থাকে যে সমাজকে নিয়ে ভাবনার সময়টুকুও পায় না কেউ। একদিন এই অন্ধকার জগতে আমি যে পরবর্তী স্বীকার হব না তা কিন্তু মাথায় আনতে চাচ্ছি না। অন্যদিকে কারো কিছু করার থাকলেও সাহস করে এগিয়ে আসছে না বিপদের ভয়ে। এই কিশোর গ্যাং তৈরির ক্ষেত্রে বর্তমান প্র্রেক্ষাপটে অন্যতম কারন হচ্ছে অবাদে মোবাইল ফোনের ব্যবহার। এই মোবাইল ফোনের অপব্যবহার বৃদ্ধির ফলে শুধু কিশোর গ্যাং নয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ। বিগত করোনা মহামারির সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অনেকাংশে বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে একটা শ্রেণি সে চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে এই মোবাইল ব্যবহারের সুযোগটা গ্রহণ করেছে। এই মোবাইল ফোনের অপব্যবহার বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে নারী ঘটিত অপরাধ। যার প্রেক্ষিতে কিশোর কিশোরীদের মাঝে এ নিয়ে প্রায় সময়ই বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে। করোনা পরকর্তী সময় থেকে বর্তমানে পৃথিবী স্বভাবিক হয়ে আসলেও পূর্বের ব্যবহারের ধারাবাহিকতা এখনও বজায় রয়েছে।
সম্প্রতি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশংকাজনকভাবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমেছে। লেখাপড়ার দিকে মনোযোগি হওয়াটা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফলাফলে মেয়েরা অনেক এগিয়ে যাচ্ছে তার অন্যতম কারন হচ্ছে ছেলেদের মেবাইলের অপব্যবহার। মেয়েরা বাসা থেকে বেশি বাহিরে না যেতে পারার কারনে ঘরে বেশি মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যদিকে ছেলেরা ইচ্ছে মতো বাহিরে সময় কাটাচ্ছে। মেলামেশা করছে বিভিন্ন লোকদের সাথে বিশেষ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া সম্পন্ন লোক এবং বিভিন্ন অপরাধী গ্রুপের সাথে। তারা ইচ্ছে মতো অন্যায়ভাবে সাহস দিয়ে যাচ্ছে এসব কিশোরদের। প্রাথমিকভাবে এরা সাহস দিয়ে তাদেরকে বেপরোয়া করে তোলছে এবং কোন বিপদে পড়লে তারাই আবার উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। বিভিন্ন আইনের ঝামেলা থেকেও মুক্ত করে আনছে তাদের স্বার্থে। এসব কর্মকান্ডে সুবিধা থাকায় কিশোর অবস্থায় বিভিন্ন রঙ্গিন স্বপ্ন তাদের মনে বাসা বাঁধতে থাকে। এতে করে এসব কিশোরদের মাঝে একটি গ্রুপ তৈরি হচ্ছে। একসময় যেকোন কাজ তারা করতে সক্ষমতা অর্জন করে। এই গ্রুপের মাঝে কিছু দ্বন্ধ হলেই তৈরি হয় উপ-গ্রুপ। এ থেকে বের হওয়ার জন্য কেবল আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী মাঠ পর্যায়ে কিছুটা অভিযান চালালেও সফল হতে পারছে না।
সরকারের আইন এবং এর সঠিক প্রয়োগ এ থেকে বের হওয়ার একটি পথ হতে পারে তবে এ পথে কিশোর গ্যাং নির্মূল সম্ভব নয়। এইসব কিশোর গ্যাং নির্মূল করতে হলে সরকারের পক্ষে কেবল আইন প্রয়োগ করলেই হবে না। এর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সামাজিক ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সরকারের কাজ হবে এই কিশোররা যেন কোনো অন্যায় কাজে জড়িত হতে না পারে সেদিকে নজর দেওয়া। সেজন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। এইসব বয়সের কিশোরদের কাউন্সিলিং করা সবচেয়ে বেশি জরুরি কারন এটা হচ্ছে ভুল করার বয়স। শুধুমাত্র শাসন ও আইন এ থেকে উত্তোরণের পথ হতে পারে না। এসব বয়সে কিশোরদের এসব অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে না পারলে আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ কোন ভাবেই সম্ভব নয়। নীতি ও নৈতিকতার অধঃপতনের কারনেই সমাজের প্রতিটি স্তরে বাড়ছে বিশৃংঙ্খলা আর এটির প্রধান কারন হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থার নীতিহীনতা।
সমাজের প্রতিটি মানুষের দায়িত্বহীনতা এত পরিমাণ বাড়ছে যে কারো জন্য সময় দেয়ার মতো সময় আমাদের হাতে নেই। কিন্তু আমরা এটা ভুলে যাচ্ছি যে এই অবহেলার কারনে আমাদের আগামী প্রজন্মও অন্ধকার থেকে মুক্ত নই। এর কুফল শুধু নির্দিষ্ট শ্রেণিকেই ভোগ করতে হবে তা কিন্তু নয়। ব্যারাম যখন শুরু হয় তখন এ থেকে বাদ যায় না কেউ। ঠিক তেমনি কিশোর গ্যাং বর্তমান সময়ের একটি ব্যারাম এ থেকে বাদ যাবে না কেউ। সময় হয়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সোচ্চার হয়ে এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থন গড়ে তোলার। সরকারের কোন নির্দিষ্ট আইন দিয়ে এ থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব নয়। তবে সঠিক আইন এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করতে পারে। অন্যদিকে সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
লেখক :শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।
পাঠকের মতামত:
- ‘দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতেই এই তাণ্ডব’
- ঈশ্বরদীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের খাদ্য বিতরণ
- বর্ষা
- দুষ্টু কোলাব্যাঙ
- ‘মারা যাইনি, সুস্থ আছি’
- ‘কোটা আন্দোলনে এক নেতা নুরকে চার লাখ টাকা দেন’
- জাতির পিতার সমাধিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শ্রদ্ধা
- সাইবার হামলার ভয়ে বন্ধ ডিএসইর ওয়েবসাইট
- আগৈলঝাড়ায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বাষির্কী পালিত
- মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করায় রাজাকারের নাতিকে প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার
- ‘বিদেশনীতি ভালো জানি, শেখানোর দরকার নেই’
- কুয়েতে কমেছে বিয়ে, বেড়েছে ডিভোর্স
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারিতে আপত্তি তুলে নিলো যুক্তরাজ্য
- শনিবারও ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল
- সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত, ৬ অঞ্চলে ঝোড়ো বৃষ্টির আভাস
- আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে পারে ইন্টারনেটের ধীরগতি
- আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী
- রাগে বাড়ে যেসব রোগ
- টানা ৬ দিন পর বরিশাল-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু
- ‘পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে কারফিউ তুলে নেওয়া হবে’
- সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী
- প্যারিসে অলিম্পিকের চোখ ধাঁধানো উদ্বোধন
- গোপালগঞ্জে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
- নড়াইলে ১০ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেফতার
- ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
- ভাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর বেঁচে থাকার আর্তনাদ
- দুর্নীতিবাজ সিনহার বই অন্তর্জ্বালা থেকে : আইনমন্ত্রী
- টাঙ্গাইল রণক্ষেত্র, আহত অর্ধশতাধিক
- কোটা সংস্কার ইস্যুতে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী
- ছাত্রলীগের হামলায় মৌলভীবাজারে পণ্ড কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিছিল
- অনির্দিষ্টকালের জন্য মাঠের বাইরে মেসি
- কোটা সংস্কার আন্দোলন: ঢাবি-নীলফামারীতে স্লোগান এবং দৃষ্টিভঙ্গির বৈপরীত্য
- ঝাঁজ বেড়েছে কাঁচা মরিচের, কেজি ৪২০
- ‘আমি কখনোই বিসিএস পরীক্ষায় বসিনি’
- নেপালে বন্যা-ভূমিধসে নিহত অন্তত ১১
- বিয়েতে এসে ভুল করে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে হেলিকপ্টার
- কল্যাণপুর যুদ্ধ
- দিনাজপুরে আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুরসহ ৭ টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, আহত ২৫
- রাজশাহীর ২৪০ কৃষি উদ্যোক্তা পেলেন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ
- খেলার মাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী!
- ‘কোটার বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত’
- সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব প্রতি বছর দাখিলের নির্দেশ