গর্ভবতী নারীর শরীরের বিশেষ যত্ন ও রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০২৪।নিরাপদ মাতৃস্বাস্থ্য, মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস ও নবজাতকের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা হলো নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালনের উদ্দেশ্য। একজন নারী গর্ভধারণের পর থেকে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখেন। শুধু মা-ই নন, মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুরও যত্ন প্রয়োজন, যাকে বলা হয় গর্ভকালীন সেবা।
এই গর্ভকালীন যত্নের লক্ষ্য হলো মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং গর্ভজনিত কোনো জটিলতা দেখা দিলে তা প্রতিরোধ বা চিকিৎসা করা। এক কথায় মায়ের স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি না করে পরিবার, সমাজ ও দেশকে একটি সুস্থ শিশু উপহার দেওয়া।
১৯৯৭ সাল থেকে ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালন করে আসছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ উদ্যোগ টেকসই উন্নয়নের অন্তর্ভুক্ত করে। নিরাপদ মাতৃত্বের কার্যক্রম পরিচালনা করে সরকার, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংগঠন। এসব কার্যক্রমের ফলে ২০০০-২০১৭ পর্যন্ত মাতৃমৃত্যুর হার ৩৮ শতাংশ কমে এসেছে।
জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, শিশু জন্ম দিতে গিয়ে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ নারী মারা যান। আর অন্ততপক্ষে সাত মিলিয়ন নারী প্রসব পরবর্তীতে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। এছাড়া প্রসবের পর নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভোগেন আরও ৫০ মিলিয়ন নারী।
বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজার নারী গর্ভধারণ ও গর্ভধারণ সংক্রান্ত কারণে মারা যান বলে জানায় ডব্লিউএইচও। আমাদের দেশে প্রতি এক লাখ প্রসবের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ১৬৫ জন। ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়নে এ সংখ্যা ৭০ জনে কমিয়ে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ঘোষণা করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী ’নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ পালন শুরু হয়েছে।
নিরাপদ মাতৃত্বের ৩টি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল
১. কমিউনিটিতে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা
২. রেফারালের সুবিধা বাড়ানো
৩. যোগাযোগের উন্নতিকরণ
নিরাপদ মাতৃত্বের ৬টি পিলার
পরিবার পরিকল্পনা: প্রত্যেক দম্পতিকে প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য ও সেবা দিতে হবে। কখন সন্তান নিতে পারবেন, কয়জন সন্তান নিতে পারবেন এবং কতদিন পর নেবেন এ বিষয়ে অবহিত করতে হবে এবং পদ্ধতি গুলো জানাতে হবে।
গর্ভাবস্থায় সেবা: গর্ভাবস্থায় জটিলতা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্ণয় করতে হবে এবং যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে। আয়রন বড়ি, ভিটামিন এবং টিকা দিতে হবে।
প্রসবকালীন ও নবজাতকের সেবা: প্রসবকালীন সময়ে দক্ষ চিকিৎসক/ মিডওয়াইফ দিয়ে ডেলিভারি করতে হবে এবং নির্মল ও নিরাপদ হতে হবে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মায়ের জন্য সেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
প্রয়োজনীয় গর্ভকালীন ও নবজাতকের সেবা - এই পর্যায়ে ইমার্জেন্সি কেয়ারের সুব্যবস্থা থাকতে হবে দুই পর্যায়ে।
ব্যাসিক ইমার্জেন্সি কেয়ার: এ পর্যায়ে ভেলিভারি তে সহযোগিতা, এন্টিবায়োটিক, খিঁচুনির চিকিৎসা নবজাতকের সেবা প্রদান করা হয়।
কম্প্রিহেনসিভ ইমার্জেন্সি কেয়ার: এ পর্যায়ে সিজারিয়ানের সুবিধা, রক্ত সঞ্চালনের সুবিধা থাকতে হবে।
প্রসবপরবর্তী সেবা: শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর কাউন্সেলিং, পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতিগুলো জানাতে হবে এবং বাচ্চার বিপজ্জনক উপসর্গগুলো জানাতে হবে ।
গর্ভপাত পরবর্তী সেবা: গর্ভপাতের জটিলতা প্রতিরোধ করা প্রধান উদ্দেশ্য। প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিগুলো জানাতে হবে হসপিটাল থেকে ছুটি হওয়ার আগে।
যৌনরোগ/এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এ পর্যায়ে স্ক্রিনিং, ভবিষ্যতে সংক্রমণের ঝুঁকি এবং কাউন্সেলিং করার সুবিধা থাকতে হবে ।
মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ
১. প্রত্যক্ষ
২.পরোক্ষ
প্রত্যক্ষ কারণ-
ক) রক্তক্ষরণ-গর্ভাবস্থায় ও প্রসব পরবর্তী গর্ভপাতের জটিলতা মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ ।
খ) সংক্রমণ
গ) উচ্চ রক্তচাপ
ঘ) প্রসবকালীন জটিলতা
উ) অনিরাপদ গর্ভপাত ।
পরোক্ষ কারণ
ক) ৩ পর্যায়ে বিলম্ব- সেবা গ্রহণের সিদ্ধান্ত, হাসপাতালে পৌঁছানো ও সেবা প্রদানে বিলম্ব ।
খ) হাসপাতালে পৌঁছানোর সুবিধা না থাকলে।
গ) দারিদ্র্যতা।
ঘ) কালচারাল প্রাকটিস ।
নিরাপদ মাতৃত্ব এর ৬ টি পিলার আবার ৩টি ভিতের উপর দাঁড়ানো । যেমন-
১. নারীর অধিকার ও শিক্ষা
২. লিঙ্গ সমতা
৩. প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা।
নিরাপদ মাতৃত্ব এর কার্যক্রম পরিচালনায় পিলার ও ভিতগুলোর ব্যবস্থা নেওয়া, সেবার উন্নতি, গাইড লাইন থাকা এবং যথাযথ গবেষণায় মাতৃমৃত্যুর হার কমানো ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
গর্ভাবস্থা, যদিও একজন মহিলার জীবনের সবচেয়ে সুখী পর্যায়গুলির মধ্যে একটি, এটি এক গুচ্ছ মানসিক, শারীরবৃত্তিয় চাপ প্রয়োগ করতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের তাই তাদের জীবনের এই পর্যায়ে নিজেদের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যত্ন, খাদ্য এবং পুষ্টি বিষয়ে, গর্ভাবস্থায় কোন খাবার খেতে হবে তা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। গর্ভবতী মহিলাদের নিজেদের এবং তাদের শিশুদের উভয়ের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে উভয়ের জন্যই জন্য খেতে হবে।আর গবেষণায় দেখা গেছে যে, গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন তিনশো থেকে পাঁচশো অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রয়োজন। এই অতিরিক্ত ক্যালোরির প্রয়োজনের সাথে এক হাজার দুইশো মিলিগ্রামের ক্যালসিয়াম, ছয়শো থেকে আটশো মাইক্রোগ্রাম ফোলেট এবং সাতাশ মিলিগ্রামের লোহা প্রয়োজন।
একটি খাদ্যের মাধ্যমে উপরের সব পুষ্টির প্রয়োজনীয়তাগুলি মেটানো কঠিন মনে হতে পারে; ভালো খবর এটাই যে অতিরিক্ত পুষ্টি পাওয়া যতটা কঠিন মনে হয় ততটা কঠিন নয়। আমাদের পুষ্টি গ্রহণ মূলত আমরা যে খাবার বেছে নিই তার উপর নির্ভর করে।
খাবার: গর্ভবতী মায়ের জন্য দরকার সুষম খাদ্যতালিকা, এতে করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত ও খাদ্যঘাটতি দূর করা সম্ভব। এ সময় প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে মওসুমি ফল ও শাক-সবজি খেতে হবে। কেনা শাক-সবজি, ফলমূল বাজার থেকে আনার পর আধাঘণ্টা পর্যন্ত পানিতে ভিজিয়ে খেলে ফরমালিনের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এ সময় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
পরিমিত হালকা ধরনের কাজ: নারীর গর্ভকালীন সময়ে প্রথম দু-তিন মাস ও শেষের তিন মাস অতিরিক্ত পরিশ্রম না করে হালকা হাঁটাচলা করা উচিত। ভারী জিনিস বহন করা বা তোলা যাবে না। পিচ্ছিল স্থানে হাঁটা যাবে না এবং সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ঘুম: এ সময় দিনের বেলা কমপক্ষে দু-ঘণ্টা ঘুম বা বিশ্রাম এবং রাতে কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। ঘুমানো বা বিশ্রামের সময় বাঁ-কাত হয়ে শোয়া ভালো।
পরিধেয়:গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক, সহজে পরিধানযোগ্য ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত। সঠিক মাপের এবং নরম জুতো পরতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই হিল পরিহার করা উচিত।
ভ্রমণ: গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস ও শেষ তিন মাস দীর্ঘ ভ্রমণে না যাওয়াই ভালো। উঁচু-নিচু পথ কিংবা ঝাঁকির আশঙ্কা আছে এমন যানবাহনে ভ্রমণ করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। সকালে ও বিকেলে কিছু সময়ের জন্য স্বাস্থ্যকর ও মনোরম পরিবেশে ভ্রমণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভালো, এতে শরীর সুস্থ ও মন প্রফুল্ল থাকে। তাই ফুলের বাগান, লেকের পাড়, পার্ক- এসব স্থানে ভ্রমণ করা উচিত।
শরীরের বিশেষ যত্ন ও রোগ-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ: এ সময় নিয়মিত প্রতিদিন সাবান দিয়ে ভালোভাবে গোসল করতে হবে এবং হাত-পায়ের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। গর্ভকালে মায়েদের দাঁতগুলো বেশ নরম হয়ে যায়, তাই দাঁত ও মাড়ির বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চার থেকে আট মাসের মধ্যে অবশ্যই টিটেনাসের টিকা দিতে হবে। এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। তাই ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, চিকেন পক্স ও বর্তমানে নতুন ভাইরাস মাঙ্কিপক্স ইত্যাদি ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে থাকতে হবে।
বিশেষ সতর্কতা
অতিরিক্ত আবেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভয়, রোগ-শোক ইত্যাদি গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, তাই এসব এড়িয়ে ভালো চিন্তা করতে হবে। প্রথম তিন মাস ও শেষ তিন মাস স্বামীর সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা যাবে না। পানিশূন্যতা রোধে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।
হোমিও সমাধান
হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গর্ভকালীন সময়ে বাধ্যতামূলকভাবে কোন (ভিটামিন, আয়রণ, ক্যালশিয়াম জাতীয়) ঔষধ খাওয়ানোর পক্ষপাতী নন। বিশেষত যাদের হজমশক্তি ভালো আছে এবং মাছ-গোশত-শাক-সবজি-ফল-মূল ইত্যাদি কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ আছে, তাদের কোন (ভিটামিন জাতীয়) ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন নাই। তবে যে-সব গর্ভবতী মায়েরা শরীরিক-মানসিক দুর্বলতা, রক্তশূণ্যতা ইত্যাদিতে ভোগছেন, অথবা যারা অভাব-অনটনের কারণে প্রয়োজনীয় পুষ্ঠিকর খাবার-দাবার কিনে খেতে পারেন না কিংবা যারা পুষ্ঠিকর খাবার কিনে খেতে পারলেও শারীরিক ত্রুটির কারণে সেগুলো যথাযথভাবে শরীরে শোষিত হয় না, তাদেরকে ক্যালকেরিয়া ফস ফেরাম ফস , ক্যালি ফস ইত্যাদি হোমিও ভিটামিন / টনিক জাতীয় ঔষধগুলো নিম্নশক্তিতে (6X) অল্প মাত্রায় খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এই ঔষধগুলি মানব শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম, আয়রণ, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস সরবরাহ করে থাকে। পাশাপাশি এই ঔষধগুলো আমাদের শরীরকে এমনভাবে গড়ে তোলে যাতে আমাদের শরীর নিজেই তার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্ঠিকর উপাদানগুলো আমাদের দৈনন্দিন খাবার খেতে শোষণ করার / গ্রহন করার যোগ্যতা লাভ করে।
গর্ভকালীন সময়ে খেলে এই ঔষধগুলো আপনার গভর্স্থ সন্তানের হাড়, দাঁত, নাক, চোখ, মস্তিষ্ক ইত্যাদির গঠন খুব ভালো এবং নিখুঁত করতে সাহায্য করবে এবং আপনার সন্তান ঠোক কাটা, তালু কাটা, হাড় বাঁকা, খোঁজা, বামন, পিঠ বাঁকা , বুদ্ধি প্রতিবন্ধি, হৃদরোগ, চর্মরোগ, কিডনীরোগ প্রভৃতি দোষ নিয়ে জন্মনোর হাত থেকে রক্ষা পাবে। এই জন্য যাদের বংশে শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্দ্বি শিশু জন্মের ইতিহাস আছে, তাদের গর্ভকালীন সময় এই ঔষধগুলো অবশ্যই খাওয়া উচিত। ভিটামিন জাতীয় এই হোমিও ঔষধগুলো গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের এত চমৎকার যত্ন নেয় যে, এগুলো বেশ কয়েক মাস খেলে তাদের উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানী, ডায়াবেটিস, মাথাব্যথা, বমিবমিভাব, ছোটখাট জ্বর-কাশি, খিচুঁনি ইত্যাদি রোগ এমনিতেই সেরে যায়। অন্যদিকে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানী, ডায়াবেটিস, খিচুঁনি, ধনুষ্টংকার ইত্যাদি রোগ নাই, তারাও এই ঔষধ তিনটি খাওয়ার মাধ্যমে সে-সব রোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
ঔষধ তিনটি একসাথে খাওয়া উচিত নয় ; বরং একটি একটি করে খাওয়া উচিত। যেমন- ক্যালকেরিয়া ফস পনের দিন, তারপর ফেরাম ফস পনের দিন, তারপর ক্যালি ফস পনের দিন- এইভাবে চক্রাকারে একটির পর একটি করে খান। সাধারণত 1X, 3X, 6X, 12X ইত্যাদি নিম্নশক্তিতে খাওয়া উচিত ; যেটি মার্কেটে পাওয়া যায়। ১০ টি বড়ি করে সকাল-বিকাল রোজ দুইবার করে খান। প্রয়োজন মনে করলে পুরো গর্ভকালীন পুরো দশ মাসই খেতে পারেন এবং সন্তানকে স্তন্যদানকালীন দুই বছরও খেতে পারেন। তবে মাঝে মধ্যে সাতদিন বা পনের দিন মধ্যবর্তী বিরতি দিয়ে খাওয়াও একটি ভালো রীতি। এটি গর্ভ রক্ষার অর্থাৎ গর্ভস্থ শিশুকে রক্ষার একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। এটি গর্ভস্থ শিশুর চারদিকে পানির পরিমাণ বজায় রাখে এবং পানির পরিমাণ কমতে দেয় না, ফলে অধিকাংশ শিশু সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিক পথে জন্ম নিয়ে থাকে। কলোফাইলাম গর্ভপাতেরও একটি উত্তম ঔষধ, যাতে ভুয়া প্রসব ব্যথা দেখা দিলে এটি প্রয়োগ করতে হয়। যাদের প্রতিবারই (তৃতীয় মাস, পঞ্চম মাস ইত্যাদি) একটি নির্দিষ্ট সময়ে গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়, তারা সেই নির্দিষ্ট সময়ের একমাস পূর্ব থেকেই অগ্রিম এই ঔষধটি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া শুরু করতে পারেন। তবে সাবধান চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন করলে সমস্যা আরো জটিল আকারে পৌছতে পারে।
পরিশেষে, গর্ভাবস্থায় একটি বিশেষ অবস্থা। এই সময়ে প্রত্যেক মহিলার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। কারণ একজন মহিলা যতবারই গর্ভধারণ করেন ততবারই জটিলতা দেখা দিয়ে তার জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই গর্ভধারণ করলে মহিলার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের উচিত তার শরীরের প্রতি যত্ন নেয়া ও প্রসবের জন্য আগে থেকে পরিকল্পনা করা।আর সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রসূতি মা ও শিশুমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। নবজাতক মৃত্যুর ক্ষেত্রে সেই অগ্রগতি ধরে রাখতে না পারাটা দুঃখজনক। নবজাতক মৃত্যু রোধে, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে, মায়ের পুষ্টি, প্রসব–পূর্ব ও প্রসব–পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা এবং নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। প্রসূতি মায়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবায় কোনো ধরনের অবহেলা কাম্য নয়।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি চিকিৎসক, কলাম লেখক ও গবেষক।
পাঠকের মতামত:
- বিদেশি উৎসবে মেহজাবীনের প্রথম সিনেমা
- ‘ব্যর্থতা আড়াল করতে মানুষকে গ্রেপ্তার করছে সরকার’
- ছাত্রনেতাদের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের আলোচনার আহ্বান
- কোটা আন্দোলনে আহতদের আয়-রুজির ব্যবস্থার আশ্বাস
- ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেফতার ২৩৫৭
- সাংবাদিকদের উপর ও বিটিভি ভবনে হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ
- নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের পুনঃপ্রত্যয় হয় জয়, না হয় মৃত্যু!
- মাদারীপুরে সহিংসতায় দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত
- স্কুলের জমিতে দোকান, কোমলমতি শিশুদের পাঠদান ব্যাহত
- রাজবাড়ীতে ইউপি সদস্যসহ ২ সহোদর কারাগারে
- ‘শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে’
- ‘যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
- সেমিফাইনালে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
- প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা
- ট্রাম্প কী পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরছেন
- বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র, মুম্বাইয়ে রেড অ্যালার্ট
- যা থাকছে প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
- আপাতত বন্ধই থাকছে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ
- ইথিওপিয়ায় ভূমিধসে ২২৯ জনের মৃত্যু
- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে নাক না গলাতে মমতাকে নয়াদিল্লির বার্তা
- গৌরনদীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ বিতরণ
- গ্রেপ্তারদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিতের আহ্বান কানাডার
- বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬ বিলিয়ন ডলার
- আশাশুনির বাহাদুরপুরে বাসন্তী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর
- সাতক্ষীরায় নাশকতার মামলায় জামায়াত বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- ভাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর বেঁচে থাকার আর্তনাদ
- দুর্নীতিবাজ সিনহার বই অন্তর্জ্বালা থেকে : আইনমন্ত্রী
- সংলাপে রাজি নন আন্দোলনকারীরা
- আর্জেন্টিনার জয়ে খুশি মেহজাবীন
- ‘নতুন কারিকুলামের শিক্ষা সার্কভুক্ত দেশগুলোও ফলো করছে’
- ট্রাম্পের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের জন্য অনুদান দিলেন ইলন মাস্ক
- কালিগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
- প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে যাচ্ছে বেনজীরের রূপগঞ্জের ডুপ্লেক্স বাড়ি
- কোটা বাতিলের দাবিতে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ
- নাটোরের বড়াইগ্রামে ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার সমাপনী
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী
- রাজবাড়ীতে শিক্ষার্থী-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত ২
- কোটা সংস্কার ইস্যুতে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র
- মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৩০, আটক ৮
- ‘পরিস্থিতি বুঝে মোবাইল ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে’
- নেপালে বন্যা-ভূমিধসে নিহত অন্তত ১১
- মিছিলে মিছিলে মুখরিত কোটালীপাড়া
- বোয়ালমারীতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে জরিমানা