বাবা তোমার হাত ধরে আবার স্কুলে যাব

অমৃতা বিশ্বাস রিয়া
আমি তখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ি। হলের খাওয়া দাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যসম্মত না। খাবারের কারণেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। হাসপাতাল থেকে জানালো আমি জন্ডিসে আক্রান্ত। আমার বাবা মাগুরা থেকে সেই রাতে ছুটে এসেছেন, তাঁর অবস্থা পাগলপ্রায়। তিনি বুঝতে পারছিলেন না তিনি আমাকে নিয়ে কোন ডাক্তার বা কোন হাসপাতালে যাবেন।আমাকে ভর্তি করা হল একটা বেসরকারি হাসপাতালে। আমার বাবা সারাদিন এবং রাত ১১ টা পর্যন্ত আমার পাশে বসে থাকতেন। এবং সারারাত ওয়ার্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে ঐকটা রাত নির্ঘুমভাবে কাটিয়েছেন। আমি চোখ খুলে দেখতাম বাবার হাত আমার মাথায়।আমাকে যখন ডাক্তার রিলিজ দিয়ে দিলেন আমাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হল তখন বাবা প্রতিদিন স্নান করিয়ে দিতেন।কোথায় কোথায় ছুটে গেছেন আমার জন্য ফলফলালি আনার জন্য তার ইয়ত্তা নেই। তারপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলাম। বাবারা বুঝি এরকম ই হন? কিন্তু আবার সেই হলে ফেরার পালা। বাধ্য হয়ে ফিরতে হয়। কিন্তু শুধু ইচ্ছে করে বাড়ি ফিরে যাই।
বাবা হচ্ছেন আমার কাছে সেই ব্যক্তি যিনি সবথেকে বেশি বুঝতে পারেন কোন বিষয় টা আমার জন্য সবচেয়ে মঙ্গলজনক।আমি অনেকবার বিষয়টা পরীক্ষা করে দেখেছি যে, আমি আমার জন্য যে জিনিস টা পছন্দ করি সেটা আমার তাৎক্ষণিক পছন্দ হলেও পরবর্তীতে সেটা আর আমার ভালো লাগে না কিন্তু বাবা যে জিনিস টা আমার জন্য পছন্দ করে আনেন সেটা আমার সাথে সাথেই আমার পছন্দ হয়ে যায় এবং সেই পছন্দ হওয়াটা স্থায়ী ও হয়। আমি কোন জিনিস টা খেতে চাই সেটা কিভাবে যেন বাবা বুঝে যান। সবসময় তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন কিভাবে আমার স্বাদ পূরণ করা যায়।
মজার ব্যাপাার হল, আমি যখন বাড়িতে আসি রাতের বেলা যখন আমার খুব ক্ষুধা লাগে কিন্তু উঠে গিয়ে খেতে ইচ্ছে করে না তখন ই আমার বাবা কে বলি আমি আজকে রাতে আর আমি ভাত খাব না! আর তখনি আমার বাবা বুঝে যান আমি ভাত খেতে চাইছি তাঁর হাতে! আমি ফোনে চ্যাটিং করি আর আর বাবা ভাত মেখে খাইয়ে দেন!যদিও বিষয় টা একটু দৃষ্টিকটু লাগছে তবুও আমার ভালো লাগে!
আমার বাবা হল আমার সবচেয়ে প্রিয় ভ্রমণসঙ্গী। আমি বাবার সাথে ঘুরে যত আনন্দ পাই তা আমি আমার বন্ধুদের সাথে ঘুরেও পাই না। বন্ধুদের চেয়ে অবশ্য বাবার সাথেই আমি বেশি জায়গায় ঘুরেছি। রাস্তায় বিভিন্ন স্থাপত্য বা প্রাচীন কিছু যে জিনিস টা বাবার জানা আছে সেটা সবসময় আমাকে দেখাতে দেখাতে নিয়ে যাবে। বলবে দেখো, এটা এই জিনিস।আমার বাবা একজন সংস্কৃতিবান মানুষ। তিনি সবসময় চান আমি সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হই৷ তিনি আমাকে সবসময় স্বাধীনতা দিয়েছেন নিজের জীবনকে উপভোগ করতে। তিনি আমাকে শিল্পকলাতে নিয়ে যেতেন আবৃত্তি শেখাতে। এছাড়াও আবৃত্তির প্রোগ্রাম শেষ করে ফিরতে অনেক সময় রাত হয়ে যায়।তিনি ঠাই দাঁড়িয়ে থাকেন আমার জন্য, কখনো বিরক্ত হন না।
বাবার সাথে অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্যে একটা মজার স্মৃতি এখন মনে পড়ছে,যখন আমি প্লে তে পড়ি আমার বাবা আমাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছেন, তো হেঁটে হেঁটে ফিরছি এমন সময় বাবার পথে কারো সাথে সাথে কথা বলতে দাঁড়িয়েছেন আমার হাত ছেড়ে দিয়ে। এসময় আমি বাবার হাত ছেড়ে দিয়ে আরেকজনের হাত ধরে হাঁটা শুরু করেছি। কিছুক্ষনপর আমার বাবা দৌড়ে এসে আমাকে টেনে ধরেছেন এবং বলছেন তুমি কার সাথে যাচ্ছ? তখন আমি খেয়াল করে দেখি আমি যার সাথে হাঁটছি তিনি আমার বাবা নন। এখন বাড়িতে যাই, আবার হলে ফিরি।দিন রাত অসংখ্য ভুল করি। মনে হয় জীবনে আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম ওই স্কুলে। ফেরার পথে আর হাত ছাড়তাম না বাবার।বাবা,আমাকে ভর্তি করে দেবে আবার সেই স্কুলে? আমি শক্ত করে তোমার হাত ধরে রাখব। আর ছাড়ব না। খুব শক্ত করে ধরে রাখব তোমার হাত।
আমার পড়াশোনা নিয়ে বাবার তুলনায় মা বেশি চিন্তিত থাকেন। বাবা সবসময় বলেন জীবনে মানবিক মানুষ হও। যে শিক্ষা তোমাকে মানবিক, সৎ না করে তোলে সেই শিক্ষার কোন দাম নেই। আমাদের সমাজে মানবিক মানুষের খুব অভাব। একজন প্রকৃত মানবিক মানুষ হওয়া আমাদের যান্ত্রিক জীবনে খুব জরুরী হয়ে পড়েছে। আমি বাবার এই আদর্শকে মনে প্রাণে ধারণ করতে চাই। বাবাকে কখনো ই বলিনি বাবা তোমাকে খুব ভালবাসি।
আজ বাবা দিবসে এই লেখার মাধ্যমে আমি জানাতে চাই আমার কাছে আমার বাবা পৃথিবীর সেরা বাবা।
শুভ বাবা দিবস, বাবা!!
লেখক : শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
পাঠকের মতামত:
- গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এবার অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু
- পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চলছে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি
- এলজিইডির প্রধান কার্যালয়সহ ৩৬ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান
- ৯ দাবিতে কোরিয়ান ভিসাপ্রত্যাশীদের মানববন্ধন
- ‘স্বৈরাচারের অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়ে পুলিশ’
- কানাডার নির্বাচনে এগিয়ে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি
- ‘দলগুলোর সমর্থন ছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়’
- ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে আইনি নোটিশ
- তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
- ‘বনশ্রীর মেরাদিয়ায় কোরবানির পশুর হাট বসবে না’
- ‘মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত সব দলের সঙ্গে বসে নেওয়া উচিত ছিল’
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সদস্যদের বৈঠক
- এবার সারাদেশের সব পলিটেকনিকে টানা শাটডাউন ঘোষণা
- বজ্রপাতে ৮ জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু
- ফরিদপুরে বণার্ঢ্য আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হয়েছে
- সাতক্ষীরায় কলেজ শিক্ষকের জমি জবরদখলের চেষ্টা
- নড়াইলে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় শিশু নিহত, আহত ৩ জন
- ‘সামরিক সরকার দেয়াল থেকে রাজনৈতিক স্লোগানসমূহ মুছে ফেলার নির্দেশ দেয়’
- নড়াইলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার ১
- ধর্ষণের ভিডিও প্রচারের ভয়ে কিশোরী নিলার আত্মহত্যা, আরো এক আসামি গ্রেফতার
- বাপ-বেটার প্রতারণায় ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলেন চাচা
- গ্যালাক্সি এ০৬ স্মার্টফোন উন্মোচন করল স্যামসাং
- শ্রীমঙ্গলে এসএম এডুকেশনের উদ্বোধন
- টাঙ্গাইলের পথেঘাটে দীপ্তি ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া
- রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের প্রস্তাব থেকে সরে এলো জামায়াত
- ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সময় জীবননাশের শঙ্কায় ছিলাম’
- ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’
- বজ্রপাত ও তালগাছ: গ্রামীণ বাংলার প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা
- ভূস্বর্গ কাশ্মীর ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে
- কেউ কথা রাখে নি
- গাজায় ১৫ স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা
- চীনে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ, তাদের পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ
- ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বহু হতাহতের শঙ্কা
- ৯ দিন পর ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
- ভারত থেকে এলো আরও ১০ হাজার ৮৫০ টন চাল
- মাছের সাথে শত্রুতা!
- ‘ভোটের রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে ষড়যন্ত্র আরও বেশি দানা বাঁধবে’
- ধামরাইয়ে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের আগুনে পুড়ে গেছে কৃষকের ২০০ বিঘা জমির বোরো ধান
- ফিরে দেখা, ঘুরে দেখা
- ‘নির্বাচন-বিচার যত দেরি হবে আওয়ামী লীগ ততই সুযোগ পাবে’
- মহম্মদপুরে প্যানেল চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
- ‘কিউবা থেকে আমরা লং টার্ম সার্ভিস পেতে পারি’
- গরমে প্রশান্তি দেবে কাঁচা আমের আম পান্না
- কাপাসিয়ায় প্রয়াত সাংবাদিক মুজিবুর রহমানের পরিবারের পাশে জামায়াত নেতা সালাউদ্দিন আইউবী