E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর জাতির করণীয় কী?

২০২৪ আগস্ট ০২ ১৫:২৩:৩৯
জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর জাতির করণীয় কী?

ওয়াজেদুর রহমান কনক


জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ায় এখন বাংলাদেশকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে গণতন্ত্র, সুশাসন, মানবাধিকার এবং সমতার ভিত্তিতে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এই লক্ষ্যে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং তরুণ প্রজন্মের একসাথে কাজ করা উচিত, যাতে সমাজের সকল ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি এবং শান্তি স্থাপন করা যায়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী তরুণদের কাছে টেনে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সাথে মিলিয়ে দিতে হবে, তাদের সাথে কোন ভুল বোঝাবুঝি থাকলে সবার আগে তাদের শুধরে নিতে হবে। এটা খুব জরুরী। 

জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর জাতির করণীয় সম্পর্কে একটি গভীর ও বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। জামায়াতের নিষিদ্ধকরণ কেবল একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যত সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একটি সুযোগও হতে পারে। জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর দেশ ও জাতির করণীয় সম্পর্কে কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো। জনগণের মধ্যে সঠিক ইসলামী শিক্ষা প্রচার করতে হবে, যাতে তারা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার সঙ্গে পরিচিত হয়। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে যাতে ভ্রান্ত মতবাদ থেকে জনগণ দূরে থাকে। মাদ্রাসাগুলোতে পাঠ্যক্রম উন্নয়ন করে সঠিক ইসলামী মূল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী একটি রাজনৈতিক দল যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় বিরোধী ভূমিকা পালন করেছিল এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং সাধারণ নাগরিকদের উচিত গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকলেও, তা সমাধান করতে হবে সংলাপের মাধ্যমে।

দুর্নীতি দমন এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারকে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে এবং তাদের প্রয়োজন ও সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সহিষ্ণুতা এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধর্মের নামে বিভাজন এবং সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে এবং ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সহিষ্ণুতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রচার করা উচিত।

দেশের প্রতিটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতির মনোভাব গড়ে তোলা এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এবং আদর্শ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করতে পারে। শিক্ষাব্যবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠ্যক্রমে মানবাধিকার, বিজ্ঞান এবং সহনশীলতার মত বিষয়সমূহ যুক্ত করতে হবে।

তরুণ প্রজন্মকে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং তাদের নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। তারা যেন জাতির ভবিষ্যৎ গঠন করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
তরুণদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষিত করতে হবে, যাতে তারা সন্ত্রাস দমন করতে সক্ষম হয়। চরমপন্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং জনগণকে সচেতন করে তোলা। মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো রকম ছাড় দেওয়া যাবে না।

এমন আইন প্রণয়ন করতে হবে, যা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং চরমপন্থাকে দমন করতে সক্ষম হবে।
সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের উচিত জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা। এই একতার মাধ্যমেই সমাজের সব স্তরে সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে, যাতে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের সহায়ক হতে পারে।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং দেশের সুনাম বৃদ্ধির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, যাতে তারা সহজেই কোনো বিভ্রান্তিকর আদর্শে প্রভাবিত না হয়। এর জন্য গণমাধ্যম ও সামাজিক মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উচিত হবে জনগণকে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে বিরত রাখা।

জাতিকে ইসলামের মৌলিক মূল্যবোধগুলো তুলে ধরে ধর্মীয় সংহতি বজায় রাখতে হবে। ধর্মীয় নেতারা সঠিক ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার করবেন, যা জামায়াতের বিকল্প হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
ভিন্ন মত ও পথের প্রতি সহনশীলতা বজায় রেখে জনগণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করা জরুরি। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে ইসলামী স্কলারদের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উচিত হবে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও ইসলামিক সংগঠনগুলোর সাথে যৌথভাবে কাজ করা।

গণতান্ত্রিক চর্চা আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন, যাতে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে এবং সমাজের সেবামূলক কাজের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কার এমনভাবে করতে হবে যাতে জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।

রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে উগ্রপন্থা থেকে দূরে থাকা এবং সহনশীল ও দায়িত্বশীল রাজনীতি চর্চা করা। সমাজের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজ করতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা থেকে বিরত রাখতে হবে।

শিক্ষাব্যবস্থায় মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত। বিদ্যালয়গুলোতে এমন পাঠ্যক্রম চালু করা উচিত, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করবে।

যুব সমাজকে বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে তারা ভ্রান্ত মতবাদ থেকে দূরে থাকে। সরকার ও এনজিওদের যৌথ উদ্যোগে যুবকদের জন্য বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা যেতে পারে।

আইনের শাসন ও কার্যকর আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নিষিদ্ধ দলগুলো নতুনভাবে গড়ে উঠতে না পারে। রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।

সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে উগ্রপন্থা থেকে দূরে রাখা সম্ভব।

দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে, যাতে জনগণ সহজেই উগ্র মতবাদে প্রভাবিত না হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের জীবনমান উন্নত করতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য সামাজিক সেবার ক্ষেত্রে জনগণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে তারা সঠিক দিকনির্দেশনা পেতে পারে।

ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কার করতে হবে, যাতে জনগণ সঠিক ইসলামী মূল্যবোধের সাথে পরিচিত হতে পারে। ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করে চলতে হবে।

ইসলামী স্কলারদের উচিত হবে সমাজের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে সঠিক ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার করা। ধর্মীয় নেতারা ওলামা মাশায়েখদের সমন্বয়ে সঠিক ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রভাব বিস্তার করা জরুরি।

গণমাধ্যমের উচিত হবে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সঠিক তথ্য সরবরাহ করা, যাতে জনগণ ভ্রান্ত মতবাদ থেকে দূরে থাকে। জনগণের মধ্যে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর মাধ্যমে গণমাধ্যম জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।

বিভ্রান্তিকর প্রচারণা প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।গণমাধ্যমের উচিত হবে সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ প্রদান করা এবং জনগণকে সচেতন করা।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গঠন করা উচিত, যাতে তারা জাতির স্বার্থে একসাথে কাজ করতে পারে। রাজনৈতিক মতবিরোধ ভুলে গিয়ে জাতির কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

জামায়াত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে নাশকতার অভিযোগ নিয়ে একটি বিতর্ক চলছে, যা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্ববহ।

কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, জামায়াতের ভূমিকা

কোটা আন্দোলনের সময় জামায়াতে ইসলামির বিরুদ্ধে নাশকতা ও উসকানির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগগুলি অনেক দিক থেকেই উঠে এসেছে, যা সরাসরি ও পরোক্ষ প্রমাণসহ বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে অশান্তি সৃষ্টি করতে এবং সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করেছে।

জামায়াত ও তার সহায়ক সংগঠনগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে আন্দোলনকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে। এসব প্রচারণা সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ব্যবহার করা হয়েছে।

নাশকতা ও বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনায় লজিস্টিক সাপোর্টও প্রদান করা হয়েছে। জামায়াতের সহায়ক সংগঠনগুলি বিভিন্ন স্থানে বসে আন্দোলনকারীদের মাঝে খাদ্য, বাসস্থান ও পরিবহনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কোটা আন্দোলনের সময় জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য ও তথ্যপ্রমাণ মিডিয়া ও বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যায়। একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, জামায়াত ও তাদের সহায়ক সংগঠনগুলি আন্দোলনকারীদের মধ্যে সহিংসতার উস্কানি দিয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও তদন্ত কমিটি জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে বিভিন্ন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এই প্রতিবেদনগুলো সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো থেকে উঠে এসেছে জামায়াতের পরিকল্পনার বিস্তারিত বিবরণ।

বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, জামায়াতের মতাদর্শিক উদ্দেশ্য এবং রাজনৈতিক অভিপ্রায়ের কারণে তারা কোটা আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে একটি সুযোগ হিসেবে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তারা জনমনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের রাজনৈতিক ফয়দা আদায়ের চেষ্টা করেছে।

কোটা আন্দোলনের সময় জামায়াতের শীর্ষ নেতারা আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে পরিকল্পনা ও উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।

পাঠকের মতামত:

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test