E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে পতিত জমিতে আউশ ধান চাষে সাফল্য

২০২০ আগস্ট ১৭ ২৩:৪৭:৪৫
দিনাজপুরে পতিত জমিতে আউশ ধান চাষে সাফল্য

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : উত্তরের শষ্যভান্ডার দিনাজপুরে বাড়তি ফসল হিসেবে পতিত জমিতে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক। কৃষি বিভাগ, বিএডিসি’র পাশাপাশি বাংলাদেশ গম ও ভুট্রা গবেষণা ইনষ্টিটিউট গম ও ভুট্রা চাষের পর শষ্য বিন্ন্যাস ঘটাতে পতিত জমিতে চাষ করেছেন, উচ্চ ফলনশীল আউশ ধান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়  কৃষক আউশের ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই, করোনার  প্রতিকুল পরিস্থিতে কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিনে আউশ ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই চলছে। এতে কৃষকের শ্রম, সময় ও অর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ বর্গা চাষীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্ষেত্রে আউশ ধান কাটা-মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের কাজ করছে,সমান তালে।

বাড়তি ফসল হিসেবে পতিত জমিতে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের চাষ করে এবার ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক। কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে আউশ ধান কাটার পর ওই মেশিন দিয়েই একসাথে ক্ষেতেই চলছে ধান মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দির কাজ। এতে করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংকট নিরসনের পাশাপাশি সময় ও অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে কৃষকের। রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আদর্শ কৃষক মো. মতিউর রহমান মতি এবার ২৫ একর জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও পেয়েছেন ভালো। ভিত্তি বীজের জন্য তিনি এই আউশ ধান চাষ করেছেন। এ ধান থেকেই আগামীর আউশ ধানের বীজ তৈরী করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

দিনাজপুর জেলায় এবার ১১ হাজার হেক্টও জমিতে আবাদ হয়েছে,আউশ ধানের। এর মধ্যে এর মধ্যে ব্রি ধান-৪৮ জাতের আউশের চাষ হয়েছে বেশি। এ জাতের ধান এক’শ থেকে এক’শ ১০ দিনের মধ্যেই আগাম ঘরে তুলতে পারায় কৃষক দামও ভালো পাচ্ছেন। সেই সাথে এ ধান কাটার পর পরিত্যক্ত জমিতে আমন ধানসহ চাষ হচ্ছে বিভিন্ন সব্জি। এতে বাড়ছে জমিতে ফসলের নিবিড়তা বা শষ্য বিন্ন্যাস। বাংলাদেশ গম ও ভুট্রা গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর পরামর্শ ও সহায়তায় বীরগঞ্জের কৃষক মোকাররম হোসেন ভুট্রা ফসল ঘরে তোলার পর পতিত আড়াই বিঘা জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও পেয়েছেন ভালো।

কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন না পেলেও করোনা পরিস্থিতিতে অনেক কৃষক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আউশ ধান কাটছেন,বাহুকায় বেঁধে,কাঁধে চেপে নিয়ে যাচ্ছেন উঠোনে। করোনার প্রতিকুল পরিস্থিতেও সমান তালে চলছে, ধান কাটা, ধান মাড়াই ও ঝাড়ার উৎসব।

কৃষি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএডিসি’র পাশাপাশি বাংলাদেশ গম ও ভুট্রা গবেষণা ইনষ্টিটিউট গম ও ভুট্রা চাষের পর শষ্য বিন্ন্যাস ঘটাতে পতিত জমিতে চাষ করেছে,উচ্চ ফলনশীল আউশ ধান বলে জানিয়েছেন, দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল।

অন্যদিকে বাংলাদেশ গম ও ভুট্রা গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. এছরাইল হোসেন জানালেন, তাদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহায়তায় পতিত জমিতে আউশ ধান চাষাাদ করে ফিরেছে, অনেক কৃষক পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা।আউশ চাষাবাদে কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহায়তা করছে তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্য ধানের চাইতে এ ব্রি ধান-৪৮ আউশ চাষে সার ও কীটনাশকের খরচ কম। একর প্রতি এ ধান উৎপাদন ৬০ থেকে ৬৫ মন। এ জাতের ধান চাষাবাদের পরিধি বাড়াচ্ছে, কৃষককে বীজ সংরক্ষণেরও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

সরজমিনে দেখা গেছে, পতিত জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে এ আউশ ধান চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ গম ও ভুট্রা গবেষণা ইনষ্টিটিউট। তাদর এই সাফল্য অনেক কৃষকের এখন অনুপ্রেরণা।

(এস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test