E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গুরুদাসপুরে ভেজাল বীজে প্রতারণা, বিক্রেতার অর্থদণ্ড

২০১৪ আগস্ট ১৯ ১৮:০২:৪৮
গুরুদাসপুরে ভেজাল বীজে প্রতারণা, বিক্রেতার অর্থদণ্ড

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুরে আমন ধানের ব্রি-৪৮জাতের বীজ কিনে  প্রতারনার শিকার হয়েছে অর্ধশত কৃষক।  ওই ভেজাল বীজ রোপনের তিন মাসেও ধানের শীষ বের হয়নি। অপরদিকে যারা একই জাতের ধান রোপন করেছিলেন তারা ফসল ঘরে তুলেছেন।

প্রতারিত কৃষকরা এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করার পর মঙ্গলবার অভিযুক্ত বীজ বিক্রেতা আব্দুল খালেককে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা চরপাড়া গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান। তার সম্বল আট বিঘা জমি। তিন মাস আগে মশিন্দা বাজারের বীজ বিক্রেতা আব্দুল খালেকের কাছ থেকে ব্রি-৪৮জাতের বীজ কিনে রোপন করেছিলেন । সেচ-সার কীটনাশক, নিরানি দিয়ে পরিচার্যাও করেছিলেন। ধানের গাছগুলো বড় হয়েছে। কিন্তু ধানে শীষ বের হয়নি। অথচ তার পাশের জমিতে রোপন করা একইজাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছে অন্য কৃষক। কৃষক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, তিনি বীজ বিক্রেতা খালেকের ‘হাসি এন্টারপ্রাইজ’ থেকে ব্রি-৪৮জাতের বীজ কিনে জমিতে রোপন করেছিলেন। কিন্তু তাকে ব্রি-৪৮জাতের বীজ না দিয়ে ২৯ জাতের বীজ দিয়ে প্রতারিত করেছেন। অসময়ে ওই বীজ রোপন করায় ধানে শীষ গজায়নি। ফলনও হয়নি। এরকম প্রতারণার শিকার কৃষক হাবিবুর একা নয়। ওই এলাকার অন্তত পক্ষে ৩০ জন কৃষকের ৫০ বিঘা জমিতে ভেজাল বীজ রোপন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগী বর্গাচাষি শরিফ জানান,-তিনি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বি-৪৮জাতের ধান রোপন করেছেন। কিন্তু ফলন হয়নি। তার আশা ছিল-এই ধান কেটে একই জমিতে আরেকটি ফসল ফলিয়ে কিছুটা লাভবান হবেন। কিন্তু বীজ কিনে প্রতারিত হওয়ায় তার সে আশা ভঙ্গ হয়েছে।
কৃষক জমশের জানান, খালেকের দোকান থেকে প্রতি কেজি বীজ ২১০ কেজি দরে কিনেছিলেন। জমি তৈরি, নিরানি, সার, কীটনাশকসহ প্রতি বিঘা জমিতে তার প্রায় ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বীজ ভেজাল হওয়ায় তার সব টাকাই গচ্ছা গেছে। এখন সংসার চলাই তার কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত আব্দুল খালেক ও অভিযোগকারী কৃষকদের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্র্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইয়াসমিন আক্তার শুনানী শেষে অভিযুক্ত আব্দুল খালেক তার দোষ স্বীকার করায় তার বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষতিপুরন বাবদ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানার রায় প্রদান করেন। শুনানীকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিজানুর রহমান ছাড়াও কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম,সহকারী কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা আব্দুল মালেক ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসমত আলী উপস্থিত ছিলেন।
(এমআর/এএস/আগস্ট ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test