E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সোনাগাজীতে ড্রাগন চাষে সফল মেজর সোলায়মান

২০২১ জানুয়ারি ২৩ ১৫:৫২:১৬
সোনাগাজীতে ড্রাগন চাষে সফল মেজর সোলায়মান

সৈয়দ মনির আহমদ, সোনাগাজী (ফেনী) : ১৯৮৬ সালে নদী শাসন ও সেচ প্রকল্প মুহুরী রেগুলেটর স্থাপনের পর ফেনী নদীর দুপাশে হাজার হাজার একর চর জাগতে শুরু করে । সোনাগাজী উপজেলার চর শাহাপুর ও থাকখোয়াজের লামছি মৌজায় সেই নতুন চরে ক্রয়কৃত প্রায় ৭০একর জমিতে সোনাগাজী এগ্রো কমপ্লেক্স স্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর মো. সোলায়মান। যেখানে সারি সারি মৎস্য প্রকল্প রয়েছে। পুকুরের দুপাড়ে  নারিকেল, ড্রাগন, সুপারি, আম, কাঠাল সহ হাজারো প্রজাতির ঔষধি ও ফলজ গাছ রয়েছে। দুগ্ধ উৎপাদন খামারে আছে বিদেশী গাভী, ছাগল ও ভেড়া। 

সরজমিনে জানা যায়, বৃহদাকার সবুজ শ্যামল এই এগ্রো কমপ্লেক্সের মাঝখানে মাত্র চার শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন কৃষক মেজর(অবঃ) মো. সোলায়মান। সেখানে ৪০টি খুঁটিতে চারটি করে ১শ ৬০টি উন্নত মানের বারি-১ জাতের ড্রাগন গাছ রয়েছে। বাগান পরিচর্যা ও জৈব সার দেয়ার কাজ চলছে। আগামী তিনমাস পর অর্থাৎ এপ্রিলের শেষ দিকে ফুল আসতে শুরু করবে। এর মাত্র ত্রিশ দিন পর অর্থাৎ মে মাসের শেষদিকে ফল খাওয়ার উপযোগী হবে। কৃষক মেজর(অবঃ) মো. সোলায়মান ভোরের কাগজকে জানান, আফ্রিকার সেই ড্রাগন গবেষনা করে বাংলাদেশে বারি-১ জাতের ড্রাগন আবিষ্কার করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৬টি ঔষধি গুন রয়েছে।

যার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হল, ড্রাগনের গোলাপি রংয়ের সুস্বাদু রস ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন করে ও কালো রংয়ের দানা গুলো কোলস্টোরাল নিয়ন্ত্রন করে। মেজর(অবঃ) মো. সোলায়মান জানান, ঔষধি গুন জানার পর ইউটিউবে চাষাবাদের নিয়ম দেখে ২০১২সালে তিনি ড্রাগন চাষ শুরু করেন। ২০১৪সালে তিনি প্রথম ফল পেয়েছিলেন। তৃতীয় বছর থেকে বাজারজাত শুরু করেন। দেশে এর চাহিদা অনেক, কেজি প্রতি মুল্য কমপক্ষে পাঁচশ টাকা।

চাষাবাদের বিষয়ে তিনি জানান, রাক্ষুষে গাছ হওয়ায় তিনমাস পর পর বছরে চার বার জৈবসার প্রয়োগ করতে হয়। রাসায়নিক সারও ব্যবহার করা যায় তবে রাসায়নিক ব্যবহার করলে স্বাদ কম হয়। পানির পরিমান নিয়মমত রাখতে হয় এবং আগাছা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হয়। তিনি আরো জানান, বারি-১ জাতের ড্রাগন বছরে একবার ফল হয়। এর শাখা প্রশাখা থেকেই চারা জন্মায় তবে তিনি স্থানীয়দের মাঝে বিনামুল্যে চারা বিতরণ করেন।

মেজর (অবঃ) মো. সোলায়মান জানান, ঔষধি ও মুল্যবান ফল হওয়ায় সকলেই বাড়ীর আঙ্গিনায় ড্রাগন চাষাবাদ করতে পারেন। অন্যান্য ফল চাষের চেয়ে ড্রাগন চাষে কম খরছে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

ইতিমধ্যে তিনি একাধিকবার জাতীয় কৃষি পুরষ্কার পেয়েছেন উল্লেখ করে জানান, তার কাজের স্বীকৃতি পেয়ে তিনি আরো নতুন নতুন কৃষিপন্য চাষাবাদের উদ্যোগ নেবেন।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেজর (অবঃ) মো. সোলায়মান ব্যাক্তিগত উদ্যোগে যে বৃহত্তর এগ্রো কমপ্লেক্স স্থাপন করেছেন তা উদ্যোক্তাদের অনন্য উদাহরন। যেখানে বারো মাসি বারি ১১ সহ আশি জাতের আম, নারিকেল, সুপারি উদপাদন হচ্ছে। সর্বশেষ যুক্ত করলেন ঔষধিগুন সমৃদ্ধ বারি-১ জাতের ড্রাগন । এখানকার মাটি অধিক উর্বর। এ ধরনের প্রকল্প স্থাপনে উপজেলা কৃষি দপ্তর সবসময় সার্বিক সহযোগীতা করবে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test