E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলন

২০২১ মার্চ ০৪ ১৪:৪২:৫৮
চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলন

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : আলু বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। সে সাথে অর্থকরী ফসলও। বাংলাদেশের সর্বত্রই কম-বেশি আলুর চাষ হয়। তবে অনুকূল পরিবেশ ও বাজারজাতকরণের সুবিধার জন্যে দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় চাঁদপুর জেলায় এর চাষ ব্যাপকতা লাভ করেছে। বিশেষ করে মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়। বলা চলে সারাদেশের মতো চাঁদপুরে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।

এ বছর আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ মোটামুটি বিদ্যমান থাকায় চাঁদপুর জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক তাদের জমিতে উৎপাদিত আলু তুলতে শুরু করেছে। সেই সাথে চাঁদপুর জেলার ১২টি কোল্ড স্টোরেজে নতুন মৌসুমের খাওয়ার নতুন আলু এবং বীজ আলু সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। যা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে এবং চলবে পুরো মার্চ মাস জুড়ে।

আলু উৎপাদনকারী বিষ্ণুপুরের কৃষক আলমগীর জানান, এবার পরিবেশগত কারণে আলুর চাষ ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনা এবার আলু উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে। যদি দর-দাম ঠিকমত থাকে তাহলে আমরা এবার বেশ লাভবান হবো।

চাঁদপুর শহরতলীর বাবুরহাট বিসিক শিল্প নগরীতে মনোহরখাদী কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার রুহুল আমিন সিদ্দিকী জানান, ৮ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন তাদের হিমাগার। যাতে পঞ্চাশ কেজির পাটের বস্তায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার বস্তা আলু রাখা যায়। গত বছর ৯৩হাজার বস্তা আলু রেখেছিলেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি হতে তাদের হিমাগারে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে, এবার ১লক্ষ ৩০ হাজার বস্তা আলু পাবেন বলে আশা করছেন।

জেলায় আলু বীজ সংরক্ষণের জন্যে একই স্থানের বিখ্যাত অ্যাপোলো কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার মাহমুদ আলী শেখ ও পরিচালক আব্দুল ওহাব মিঞা জানান, তাদের হিমাগারে আলু রাখার ধারণক্ষমতা ১০ হাজার মেট্রিক টন। যা ৫০ কেজির পাটের বস্তায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার বস্তা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হতে এখানে আলু উঠানো শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় তিন থেকে চার হাজার বস্তা আলু রেখেছেন।

পুরাণবাজার কয়লা ঘাটে পূবালী কোল্ড স্টোরেজের পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন শাকিল জানান, গতকাল ৩ মার্চ থেকে তাদের হিমাগারে কৃষকের আলু উঠানো শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তিনি জানান, পূবালী কোল্ডস্টোরেজে আলু রাখার ধারণ ক্ষমতা ৭ হাজার মেট্রিকটন। যা ৫০ কেজির ১ লক্ষ ২৯ হাজার বস্তা।

হাজীগঞ্জ উপজেলার মান্নান কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক, মহাব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার সাহা জানান, তাদের হিমাগারে ৭ হাজার মেট্রিক টন আলু রাখা যায়। ধারণক্ষমতার চেয়ে অর্ধেকের কিছু বেশি আলু তারা পেয়ে থাকেন। পর্যাপ্ত আলু রাখার জায়গা থাকা সত্ত্বেও আলু না পাওয়ায় তাদের এই কোল্ড স্টোরেজের একাংশ খালি থাকছে।
এদিকে বাজার ঘুরে জানা যায়, এখন নতুন গোল আলুর কেজি ১২/১৩ টাকা। এবার কৃষকের আলু আবাদ ভালোই হয়েছে। তবে কৃষকের আলু অনেকে সিন্ডিকেট করে হিমাগারে রাখছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আলুর ব্যাপারে জানান, গত বছর আলুর উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। এজন্য মৌসুমের শেষ দিকে আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার তার চিত্র উল্টো। চাঁদপুরে এবং মুন্সিগঞ্জে আলুর ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবার ব্যবসায়ীরা তেমন লাভবান হবে না।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, জেলা কৃষি অধিদপ্তর হতে কৃষকরা সময়মত সার ও বীজ পাওয়ায় এবার আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবার ডায়মন্ড, মালটা কার্ডিনাল জাতের আলুর মধ্যে ডায়মন্ড আলুর ফলন বেশি ভালো হয়েছে। জেলার মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে মতলব দক্ষিণ উপজেলায়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে চাঁদপুরে আলু আবাদের জন্য ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ১লক্ষ ৭৬ হাজার মেট্রিকটন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যার হেক্টর প্রতি ফলন ২২মেট্রিক টন ধরা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ১০হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে। এই হিসেবে এবার ২ লক্ষ ২০ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

(ইউ/এসপি/মার্চ ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test