E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শসার দাম ও ফলন বেশি পেয়ে খুশি ধামইরহাটের চাষিরা

২০২১ এপ্রিল ২০ ১৬:২৫:০৫
শসার দাম ও ফলন বেশি পেয়ে খুশি ধামইরহাটের চাষিরা

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে শসা চাষীদের মাঝে আনন্দের হাসি। রমজান মাসে শসার ফলন বেশি এবং দাম ভালো পেয়ে স্বল্প সময়ে কৃষকের হাতে নগদ অর্থ এসেছে। আগামীতে এ এলাকায় অনেক বেশি জমিতে শসার চাষ হবে বলে আশা করছে চাষীরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষককে শসা চাষে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ধামইরহাট উপজেলায় ২শ; ৩৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ হয়েছে। অধিকাংশ শসা উপজেলার পলিমাটি এলাকা হিসেবে পরিচিত ইসবপুর ও জাহানপুর ইউনিয়নে। বীজ রোপন থেকে মাত্র দুই মাসের মধ্যে শসা পাওয়া যায়। শসা চাষ করতে খরচ তেমন হয় না বললেই চলে। পোকা মাড়কের আক্রমণ থাকলেও সঠিক সময়ে ওষুধ প্রয়োগ করতে পারলে ফসলের তেমন ক্ষতি হয় না।

উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত পূর্ব তাহেরপুর গ্রামের কৃষাণী ফারজানা আক্তার বলেন, তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে লালতীর বারমাসী জাতের শসা রোপন করেন। বীজ রোপনের দুই মাসের মধ্যে এখন গাছ থেকে প্রতিদিন ৭-৮ মণ শসা ওঠানো হচ্ছে। রমজানের শসা ওঠায় প্রতি মণ শসা দেড় থেকে দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি করছেন।

পাইকাররা ক্ষেত থেকে শসা কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। শসা চাষ করতে তার মোট খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করেছেন তিনি। আশা করছেন আরও ৫০-৬০ হাজার টাকা শসা বিক্রি করতে পারবেন। এ কাজে তার স্বামী আলম হোসেন এবং তার ছেলে সাহায্য করছে। কোন শ্রমিক নিতে হয়নি।

ধুরইল গ্রামের কৃষক মো.আবু হাসান বলেন, ধুরইল সুন্দরী মোড় ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় তিনি ২০শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করেছেন। বর্তমান বাজার মূল্য ভালো। এ অবস্থা থাকলে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শসা বিক্রি হতে পারে। শসা চাষ করতে তার মোট খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। এবার রমজান মাসে শসা ওঠায় বাজারে দর ভালো। আগামীতে এ অঞ্চলে বেশি জমিতে শসা চাষ হবে।

ইসবপুর ইউনিয়নের পূর্ব তাহেরপুর ১৯ নং ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুধু ইসবপুর ইউনিয়নে ১শ’ ২০ হেক্টর জমিতে শসা চাষ হয়েছে। এখানকার শসা ট্রাক যোগে প্রতিদিন ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হয়। প্রথম দিকে প্রতিমণ শসা দুই হাজার দুইশ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে এ অঞ্চলে ব্যাপক শসার চাষ হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. শাপলা খাতুন বলেন, কৃষক স্বল্প জমিতে শসা চাষ করে অধিক লাভবান হতে পারে। রমজান মাস উপলক্ষে বর্তমানে বাজারে শসার চাহিদা ও দাম অনেক বেশি। তাছাড়া এখন সকল অনুষ্ঠানে শসা নিত্য প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরাপদ সবজি চাষের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদেরকে শসা চাষে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রদর্শনীভূক্ত কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে শসার বীজ, জৈব বালাইনাশক, পোকা দমনের জন্য ফেরোমন ফাঁদ ও ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রদান করা হয়েছে। শসার সাদা মাছি ও মাকড় রোগ থাকলেও নিয়মিত পরিচর্জার মাধ্যমে তা দমন সম্ভব। শসার জীবনকাল ১শ’ থেকে ১শ’ ২০ দিন। বীজ বপনের দেড় মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে। জমিতে সামান্য পানি সেচ দিতে হয়। এবার কৃষক দাম বেশি পাওয়ায় আগামীতে এ অঞ্চলে ব্যাপক শসার চাষ হবে।

(বিএস/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test