E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোকসানে গোয়ালন্দের বাদাম চাষিরা

২০২১ জুন ২৬ ১৯:১০:০৬
লোকসানে গোয়ালন্দের বাদাম চাষিরা

এমএ হীরা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : পদ্মার বিস্তীর্ণ চরের সোনালী ফসল বাদাম । ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। অর্থকরী এ ফসল চাষ করে সংসারের সচ্ছলতাও ফিরেছে চরাঞ্চলের মানুষের। বাদাম চাষ লাভ জনক হওয়ায় প্রতি বছরই আবাদ বাড়ছে। কিন্তু এ বছর চাষীরা ফলন নিয়ে হতাশাগ্রস্থ। অনাবৃষ্টির প্রভাবে ফলনে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, পদ্মা নদী। প্রতি বছরই ভাঙ্গনের কারণে ক্ষতি গ্রস্থ হয় পদ্মা পারের হাজারো বাসিন্দারা।ভিটা মাটি হারানো এসব বাসিন্দারা এখন চরের ফসলের উপর নিভরশীল।

বর্ষা শেষে পদ্মার বুকে জেগে উঠে বিশাল চর। এসব চরে আবাদ হয়ে থাকে ধান, তিল, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। এর মধ্যে থেকে বেশি লাভজনক ফসল হলো বাদাম চাষ।

পৌষ মাসের শেষের দিকে পদ্মার চরে কৃষকেরা বাদাম চাষ করে থাকেন। জৈষ্ঠের শুরুতে তা ঘরে তোলা হয়। তবে এবছর বাদাম চাষীরা হতাশার মধ্যে রয়েছে।

খরার কারণে কৃষকদের বাদাম পুড়ে গেছে। সেচের অভাব ও অনাবৃষ্টির কারণে বাদামে আশানুরূপ ফলন হয়নি বলে জানায় চাষীরা। সোনাকান্দা এলাকার বাদাম চাষী আব্দুর হাকিম গাজি জানান, এবছর মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দা এলাকায় নতুন চর জেগে উঠেছে।

তারা এলাকার বিশজন মিলে চরের একশত বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেন।বাদাম চাষে খরচ হয়েছে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম হবে দশ মণ করে। সেই হিসাবে একশত বিঘায় লক্ষমাত্রা ছিলো এক হাজার মণ। কিন্তু এবছর খরায় বাদামের গাছ মরে যাওয়ার কারণে আশানুরূপ ফলন নেই। ফলে বিঘা প্রতি বাদাম উঠছে তিন থেকে চার মণ করে। বাদাম চাষের খরচ উঠাতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।

আরেক বাদাম চাষি কাদের বেপারী জানান, বীজ,জমি চাষ, সার, শ্রমিক মিলে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে আট থেকে দশ হাজার টাকা করে। আর বিঘা প্রতি বাদাম হচ্ছে তিন থেকে চার মণ করে। প্রতি মণ বাদামের বাজার মূল্য দুই হাজার টাকা। সে হিসাবে বিঘা প্রতি লোকসান গুনতে হবে দুই হাজার টাকা করে।

হালিমা বেগম জানান, কয়েকদিন আগে চরে গিয়ে গাছ থেকে বাদাম ছাড়িয়েছি। মণ প্রতি পেতাম একশত টাকা করে। সারাদিনে তিন মণ বাদাম গাছ থেকে ছাড়াতে পারতাম। যে টাকা পেতাম সেটা দিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতাম।

প্রচন্ড রোদ আর গরমের জন্য এখন কেউ চরে যাই না। চরে গিয়ে বাদাম ছাড়ানো খুবই কষ্টের সেখানে নেই ছায়ার কোন ব্যবস্থ্যা। রোদ আর গরমে অসুস্থ্য হয়ে পড়ার মত অবস্থা হয়ে যেতো।

যে কারণে চাষিরা চর থেকে ট্রলারে করে পাড়ে নিয়ে আসে। সেখান থেকে আমরা রান্নার কাজে জ্বালানী হিসাবে বাদামের গাছের বিনিময়ে বাদাম ছাড়াচ্ছি

(এইচ/এসপি/জুন ২৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test