E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এক আমের ওজন ৪ কেজি!

২০২১ জুন ২৯ ১৫:৩৬:৫৭
এক আমের ওজন ৪ কেজি!

অমল তালুকদার, পাথরঘাটা (বরগুনা) : এক আত্মপ্রত্যয়ী বেকার যুবক রাসেল মিয়া পাথরঘাটার হাতেমপুর গ্রামের এখন আলোকরশ্নি। যে শিখার আলোতে ইচ্ছে করলে আমরাও সুপথ দেখতে পারি।

আয়াতুল্লা এগ্রিকালচার ফার্মের বাগানটিতে ৪ কেজি ওজনের "জমিদার ফজলি আম" দেখতে দর্শনার্থীরা এখন ভিড় করছেন প্রায় প্রতিদিন।

বরগুনার পাথরঘাটাতে একটি বাগানে দেখা মিললো ৪ কেজি ওজনের এমন এক প্রজাতির আম। কেউ আবার এ ফার্ম থেকে ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে আমের পাশাপাশি রয়েছে ত্বিন ফল, পাচিমন ফল, ড্রাগন, আলু বোখারা, মালটা, করোছল, পেয়ারা মৌবাতামি, শরিফাসহ অনেক বাহারি রঙের ফল।

জেলার পাথরঘাটা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সদর ইউনিয়নের উত্তর হাতেমপুর গ্রামে এই ফার্মটি পরিচালনা করছেন আসাদুজ্জামান রাসেল নামক স্থানীয় এক বাসিন্দা। রাসেল উচ্চশিক্ষা শেষ করে উদ্যোক্তা হন কৃষিবিল্পবে।

রাসেল জানান, তার-ই বাবার ২৬ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো চাষ শুরু করেন ড্রাগন ফল। ৩ বছর ধরে এই ফল বিক্রি করে বেশ লাভবান তিনি। এরপর তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলজ বাগান তৈরিতে কাজ শুরু করেন। এখন তার বাগানে অনেক জাতের গাছে ফল ধরেছে। এসবের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে আনা ৮টি উন্নত জাতের আম গাছে অসংখ্য আম ফলেছে।

আম গাছগুলো সাইজে ছোট । প্রতিটি গাছে প্রায় ৩০ / ৪০টি আম ধরেছে। ফজলি জাতের এই আমগুলো প্রতিটি ৪ থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজনের হয়েছে। আমগুলো এখনো কাঁচা, আম জাল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ কেজি আম বিক্রি করেছেন।

কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল জানান, লেখাপড়া শেষ করে দীর্ঘ সময় বেকারত্বের অভিশপ্ত জীবন কাটাতে হয়েছে। প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে মুঠোফোনে নেট-দুনিয়ার খবরাখবর ঘেটে দেখতাম। বিশেষ করে ইউটিউব চ্যানেলে কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন দেখা ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার । এই দেখাদেখি থেকেই শখ করে ড্রাগন চাষ শুরু করি। এখান থেকে লাভবান হওয়ায় পাশাপাশি অন্যান্য ফলের চাষাবাদ শুরু করে দেই। এই সীজনে অনেক টাকার ফল বিক্রি করেছি। অনেক ফল এখনও পাকেনি।

এই প্রসঙ্গে পাথরঘাটার গণমাধ্যমকর্মী আমিন সোহেল বলেন, লেখাপড়া করে সার্টিফিকেট অর্জন করেই মানুষ চাকরির পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায়। দেশেতো অসংখ্য শিক্ষিত বেকার । এত চাকরি কোথায় পাবে সরকার? বিভিন্ন সেক্টরে আমাদের উদ্যোক্তা হওয়া দরকার। খুবই দরকার।

রাসেল তেমনি এক যুবকের নাম। যিনি চাকরি খুঁজেননি। বেকার জীবন কাটিয়ে এখন লাভের মুখ দেখছেন তিনি। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবেই এই ফার্মটি তৈরি করছেন রাসেল।

পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল জানিয়েছেন, হাতেমপুর গ্রামের রাসেল এই অঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। এই অঞ্চলে এ ধরনের ফলবাগান আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এখন তাকে অনুসরণ করবে অনেক বেকার যুবক। ইতিমধ্যেই এমন চাষে অনেক পরিবার উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এবং হচ্ছেন বলে আমরা খবর পাচ্ছি।

(এটি/এসপি/জুন ২৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test