E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গলাচিপায় ‘ড্রাগন’ চাষ করে চমকে দিলেন ছালমা খান

২০২১ আগস্ট ০২ ১৬:৫৩:০৩
গলাচিপায় ‘ড্রাগন’ চাষ করে চমকে দিলেন ছালমা খান

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় ড্রাগন ফলের চাষ করে সফল ছালমা বেগম। গ্রামের নিজ আঙ্গিনায় ড্রাগন চাষ করে চমকে দিলেন উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের কোটখালী গ্রামের মো. ইলিয়াস মোল্লার স্ত্রী এবং নারী উদ্যেক্তা ছালমা খান। পেশায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবি হয়েও নিজের এবং পরিবারকে করেছেন স্বাবলম্বী। 

ড্রাগন চাষের বিষয়ে তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ব্লু-গোল্ড প্রকল্পের পটুয়াখালীর জৈনকাঠিতে ড্রাগন ফলন দেখে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে বিগত ২০১৭ সালের মাত্র ৬ ইঞ্চি’র ৩০ টি চারা দিয়ে এক শতাংশ জমির উপর আড়াই হাত গভীর, আড়াই হাত পাশ গর্ত খুঁড়ে গোবর সার এবং ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে শুরু করছিলেন এ ড্রাগন চাষ। বাড়ির আঙ্গিনায় ত্রিশটি চারা পরিচর্যার ফলে বছর ঘুরতেই চারাগুলোতে ফুল এবং ফল দেয়া শুরু হয়। চারাগুলো বৃদ্ধির সাথে ড্রাগন ফুল এবং ফলের আকারও বৃদ্ধি হতে দেখে আমার আকর্ষণ আরো বেরে যাওয়ায় পরিবারের অনেকেই আমাকে ড্রাগন চাষে সহযোগিতা করেন। যার কারনে প্রতি বছর নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকার ড্রাগন ফল বাজারে বিক্রি করতে পারছি।

এতে করে যেমনি আমার সংসারে একটি বাড়তি আয় করে এক ছেলে এবং এক মেয়েকে ভালো ভাবে লেখাপড়াও করাতে পারছি বলেই ছেলেকে বরিশাল ক্যাডেট এ এবং মেয়েকে গলাচিপা সরকারি ডিগ্রী কলেজে পড়াশোনা করতে পারছি। যদিও বর্তমানে কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে বাড়িতেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক জনসাধারণ তার এই ড্রাগন ফলের বাগন দেখার জন্য আসতেও দেখা যায়। ভবিষ্যৎ এ তিনি আরো দশ শতাংশ জমির উপর সুস্বাধু ড্রাগন চাষ করবেন বলে আশা ব্যাক্ত করেন।

তিনি জানান, আসলে এ ফলন চাষে প্রথমত একটু পরিচর্যা করলেও, পরবর্তীতে তেমন কোন পরিচর্যা বা সময় ব্যায় করতে হয়না। তবে একটু উঁচু জায়গায় এবং পর্যাপ্ত আলোর স্থানে ড্রাগন চাষে আরো ভালো ফলন পাওয়া যায়। ড্রাগন ফলের শরীরের জন্য খুব উপকারি এবং এতে অনেক পুষ্টি রয়েছে। যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি ৩, লৌহ, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি ১, ফসফারাস, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন সি ৫ ইত্যাদি যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে বলে এক গবেষণায় জানা যায়।

ড্রাগন ফলের চাষ সম্পর্কে আরো জানা যায়, কখন ড্রাগন ফল চাষের উত্তম সময় ড্রাগন ফল সাধারণত সারা বছরেই চাষ করা যায়। অঙ্গজ পদ্ধতি বা বীজের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের বংশবিস্তার হয়ে থাকলেও মাতৃগুনাগুণ বজাই রাখার জন্য অঙ্গজ পদ্ধতিতে অর্থাৎ কাটিং এর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করাই ভালো। কাটিং এর সফলতার হার প্রায় শতভাগ এবং তাড়াতাড়ি ধরে। কাটিং থেকে উৎপাদিত একটি গাছে ফল ধরতে ১২-১৮ মাস সময় লাগে। এটি মোটামুটি শক্ত প্রজাতির গাছ হওয়ায় প্রায় সব ঋতুতেই চারা রোপন করতে পারেন। তবে ছাদে ড্রাগন ফল চাষ করে ভালো ফলন পেতে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে চারা রোপন করলে সুফল পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলার কৃষি অফিসার আরজু আক্তার সাংবাদিক সঞ্জিব দাসকে জানান, নারী উদ্যেক্তা ছালমা খান এর অসাধারণ ড্রাগন ফলের বাগানের বিষয়ে জেনে আমি অত্যন্ত গর্বিত। তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। তিনি যদি আরো পরিসরে ড্রাগন চাষ করেন, নিশ্চই সবসময় তাকে উপজেলা কৃষি অফিস সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন বলে তিনি ড্রাগন সফল চাষি ছালমা খান কে অভিনন্দন জানান।

(এসডি/এসপি/আগস্ট ০২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test