E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধানে মেধাবী প্রজন্মের প্রত্যাশা

২০২২ এপ্রিল ২৬ ১৪:১৬:৫৬
বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধানে মেধাবী প্রজন্মের প্রত্যাশা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের পুষ্টি সমৃদ্ধ ধান মেধাবী প্রজন্ম গড়বে। এমন প্রত্যাশা করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট।  আগাম জাতের এই ধানে জিংক, প্রটিনসহ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এ চালের ভাত খেলে শিশুর গড় উচ্চতা, বুদ্ধিমাত্রা ও স্টেমিনা বৃদ্ধি পাবে। গর্ভবতী মায়ের দেহের জিংকের চাহিদা পুরণ করবে। এ ধানের ভাত গ্রহনের মাধ্যমে মেধাবী প্রজন্ম গড়ে উঠবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ধান হেক্টরে  সাড়ে ৭ টন ফলন দিয়েছে। এ বছর গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় নতুন জাতের বঙ্গবন্ধু ধানের বাম্পর ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

ব্রি, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ব্রি থেকে রিলিজকরা বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধান এ বছর ৩ জেলার ৩ শ’ বিঘা জমিতে ৩শ’ টি প্রদর্শনী প্লটে আবাদ করেছেন কৃষক। আমরা কৃষককে বীজ, সার সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছি। প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান ৭.৫৯ টন ফলেছে। প্রিমিয়াম, প্রটিন,পুষ্টিগুন ও জিংক সমৃদ্ধ এই ধানে রোগ বালাই তেমন নেই। তাই সেচ, সার ও কীটনাশক খরচ খুবই কম। ধানের ফলন হাইব্রিড ধানের কাছাকাছি। তাই এ ধান চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দীঘলিয়া গ্রামের কৃষক রিতা রানী হালদার বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়া সহিষ্ণু এই ধানের আবাদে আমাদের সার, সেচ ও কীটনাশক খরচ হয়েছে অনেক কম। ধানটি সরু। খেতে সুস্বাদু। সেই সাথে প্রচুর পুষ্টিগুন রয়েছে। এই ধানের চালের চাহিদা এবং বাজার দর প্রচলিত ধানের তুলনায় বেশি পাওয়া যাবে। আগাম জাতের এই ধানের বাম্পার ফলন আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

একই গ্রামের কৃষক সঞ্জয় হালদার বলেন, এবছর আমাদের ১ বিঘা জমিতে বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ মেসিনের মাধ্যমে আবাদ করা হয়। ১টি করে ধান গাছ বেশ ফাঁকে ফাঁকে রোপন করা হয়। এভাবে ধান রোপন করা দেখে আশপাশের কৃষকরা বলেছিলো ধান হবে না। ১৫ দিন পরে ধানের কুঁশিতে মাঠ ভরে যায়। তারপর প্রতিদিনই উৎসুক কৃষক ধানক্ষেত দেখতে এসছে। শেষ পযন্ত প্রতি শতাংশে ১মন ধান ফলেছে। ভাল ফলন আর পুষ্টিগুনের কারণে এই ধান চাষের প্রতি আমাদের আশপাশের কৃষকের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, প্রচলিত ধানে সাধারণত কার্যকরী কুঁশি ১৮ টি থাকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ধানে কার্যকরী কুঁশির সংখ্যা ৩০টি। এ কারণে এ ধানের ফলন বেশি। এ ধানের আবাদ করে কৃষক পরেব বছরের চাষাবাদের জন্য বীজ সংরক্ষণ করতে পারেন। কোটালীপাড়ায় এ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই কৃষক আগামীতে লাভজনক এ ধানের আবাদে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটের মহা-পরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর বলেন, ব্রি উদ্ভাবিত ১শ’তম ধানের জাত এটি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এ ধানটি অবমুক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে এ ধানের নাম করণ করা হয় বঙ্গবন্ধু ধান-১০০। মুজিববর্ষ স্মরনীয় করে রাখতে ও মেধাবী একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতেই এ ধানে জিংক, প্রোটিন ও প্রচুর পুষ্টিগুন সংযোজন করা হয়েছে। এ চালের ভাত খেলে শিশুদের গড় উচ্চতা, বুদ্ধিমাত্রা ও স্টেমিনা বৃদ্ধি পাবে। গর্ভবতী মায়ের দেহে জিংক এর চাহিদা পূরন হবে। এরমধ্যে দিয়েই আমরা মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাইছি।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এ ধানের আবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে কৃষক বঙ্গবন্ধু ধানের ভাল ফলনের পাশাপাশি ভাল দাম পেয়ে লাভবান পাবেন। আমরা কৃষককে বাণিজ্যিক কৃষির আওতায় আনতে চাই। কৃষকের আয় দ্বিগুন করে দিতে চাই। বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর আবাদ বৃদ্ধি করলে কৃষক লাভবান হবে। এছাড়া পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

(টিকেবি/এএস/এপ্রিল ২৬, ২০২২)


পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test