E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে পাটের হাট

ভাল দাম থাকার পরেও মুখে হাসি নেই পাট চাষিদের!  

২০২২ জুলাই ২২ ১৮:০০:০৮
ভাল দাম থাকার পরেও মুখে হাসি নেই পাট চাষিদের!  

ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁয় জমে উঠেছে পাটের হাট। নওগাঁর হাট ধিরে ধিরে পাট বিক্রির জন্য সুপরিচিত হচ্ছে। মৌসুম এলেই যেন এই হাটে পাটের জমজমাট হাট লাগে। চলতি মৌসুমেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। উপজেলার বিস্তীর্ণ জমিতে উৎপাদিত ও আশপাশের জেলার পাট বিক্রয় করা হয় এ হাটে। হাটে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে।

তবে সরবরাহ অনেক কম। কিন্তু দাম ভাল থাকার পরেও পাট চাষিদের মুখে নেই হাসি।জেলার চরঅঞ্চল- চলনবিল আওতাভুক্ত উপজেলায় ব্যাপক হাড়ে পাট চাষ হয়। তবে এই এলাকায় তোষা ও মেষতা পাট জাতের পাট সাধারণত বেশি চাষ হয়ে থাকে। ইরি-বোরো ধান কাটার পর প্রতি বছর ন্যায় এবার পাট চাষ করে জেলার কৃষকেরা। বপনের পরপরই পাট গাছ গুলো তরতর করে বেড়ে উঠতে ছিল। হঠাৎ করে বন্যা ও ঢলের পানিতে পাটের জমিতে প্রবেশ করে। এতে করে অনেক পাট ডুবে যায়। সঠিক সময়ের আগেই এবার কেটে ফেলতে হয়। সেই তুলনা এবার ফলন কম বলে জানান পাট চাষিরা।

এতে ক্ষতির মুখে কৃষক। এই হাটের পাট দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এই হাটে জেলার উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলা পাবনা, নাটোরের প্রান্তিক কৃষকেরা পাট বিক্রয় করতে আসেন ৷

পাট বিক্রয় করতে আসা কৃষক আলামিন বলেন, এবার দেড় বিঘা তোষা পাট চাষ করে ছিলাম, পাট পেয়েছি ১০ মণ। আবাদ তেমন একটা ভাল হয়নি বন্যার কারণে।

পাবনার ঠান্ডু মিয়া পাট বিক্রয় করতে এসে বলেন, এক - দেড় বিঘা মেষতা পাট চাষ করে ছিলাম। সেই পাট বিক্রয় করতে এসেছি পাটের দাম ভালই। ব্যবসায়ীরা ৩৮০০ টাকা মণ বলতেছে। তবে বন্যার পানি আসাতে পাট ডুবে যাওয়ার কারনে আগে কাটতে হয়। পাটের দাম থাকলেও আবাদ কম হওয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

পাট ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ বলেন, প্রতিহাটে ৪শত থেকে ৫শত মণ পাট ক্রয় করি। এই পাট নিয়ে গিয়ে উল্লাপাড়া পাট বন্দর প্রেসেসিং করা পরে বাজারজাত করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, বগুড়া, পাবনা প্রভৃতি স্থানে। এ বছরে এখনও কোন জায়গায় পাট বাজারজাত করা হয়নি৷ সরকারি পাট মিল গুলো বন্ধ হওয়ার কারনে দাম নিধারিত নিয়ে সমস্যা পড়তে হচ্ছে। এবার কেমন দাম হবে তা নিদিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি ভাল দাম পাবো।

পাট ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, গত কয়েক বছর যাবতের চেয়ে এবার পাটের দাম বেশি। আমদানি কম তাই দাম বেশি। এই হাটে তোষা পাট ৩০০০-৩২০০শত টাকা দামে ক্রয় করছি। আর মেষতা পাট ৩৮০০- ৪২০০শত টাকা ক্রয় করছি। ইতিমধ্যে আমি পাবনার জনতা মিলে পাট দিয়েছি পাটের ভাল দাম পেয়েছি।

নওগাঁর হাটের ইজারাদার সভাপতি আকবার আলী প্রাং বলেন, নওগাঁর হাট প্রতি সপ্তাহের বুধবার লাগে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাট ক্রয় করতে এবং বিক্রয় করতে আসে। গত ১০ বছর যাবত পাটের হাট জমে উঠেছে। প্রতিহাটে ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার মণ পাট কেনাবেচা হয়। মৌসুমির উপর ভিত্তি করে পাট বাজারে উঠে। আমাদের এখানে দুর-দুরান্ত থেকে ব্যাপারিদের নিয়ে আসা হয়, তাদের থাকা খাওয়া ব্যবস্থা করি। তবে সেই ভাবে সুযোগ দিতে পারি না। শুধু হাটটা জাঁকজমকপূর্ণ করার জন্য এইটুকু করি৷ তবে পাটের হাটের জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। হাটের জায়গা বৃদ্ধি করলে পাটের আমদানিটা আরও বাড়বে। আমরা ইতিমধ্যে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি, তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।

তাড়াশ উপজেলার কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, তাড়াশ উপজেলায় এবার ৭ শত ৪৫ হেক্টর পাট চাষ হয়েছে। গত বছর এবং চলতি বছর ২শত ১০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে এবার। আর বেশি হত কিছু জায়গায় বন্যার পানি চলে আসাতে আগেই পাট কেটে ফেলে, এতে করে ফলন কম পেয়েছে কৃষক।

(আই/এসপি/জুলাই ২২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test