E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দেশে মোট উৎপাদিত বোরো ধানের শতকরা ২০ ভাগ আসে হাওরাঞ্চল থেকে

২০২২ আগস্ট ২৮ ১৫:৪৯:১০
দেশে মোট উৎপাদিত বোরো ধানের শতকরা ২০ ভাগ আসে হাওরাঞ্চল থেকে

আশজাদ রসুল সিরাজী, গাজীপুর : কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দেশে মোট উৎপাদিত বোরো ধানের শতকরা ২০ ভাগ আসে হাওরাঞ্চল থেকে। হাওরের যেমন চ্যালেঞ্জ আছে তেমনি সম্ভাবনাও রয়েছে। দেশের বৈরী প্রতিবেশের চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে ৬টি ’হটস্পট’ (Hot Spot) চিহ্নিত করেছে, যার অন্যতম হলো হাওর।

তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ অপরিহার্য। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন কারণে কৃষি শ্রমিকের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষি উৎপাদন ঝুকির মুখে পড়বে। তাই কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষি শ্রমিকের সংকট মোকাবেলা করে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে।

কৃষি সচিব বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর বিজ্ঞানীরা কৃষকের উপযোগী বিভিন্ন ধরনের লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করছে যার অধিকাংশই কৃষক পর্যায়ে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় সমতলে ৫০% এবং হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলে ৭০% ভর্তুকির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের নিকট বিতরণ করছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সরকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৫১হাজার ৩০০টি কৃষি যন্ত্র সারাদেশের কৃষকদের কাছে সরবরাহ করবে।

তিনি আরও বলেন, হাওর অঞ্চলে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো দ্রততম সময়ের মধ্যে বোরো ধান উঠানো বা কর্তন করা। স্বল্প সময়ের মধ্যে বোরো ধান উঠাতে না পারলে পাহাড়ী ঢলে ধান তলিয়ে যায় এবং কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পূর্বে কৃষি যন্ত্র না থাকায় হাওরে বোরো ধান উঠাতে অনেক সময় লাগতো এবং বন্যায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বর্তমান সরকার বিশেষ করে মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কৃষক এখন কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে দ্রুততর সময়ের মধ্যে হাওরের ধান উঠাতে সক্ষম হচ্ছে।

শনিবার বারি’র কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বিষয়ক এক কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মা. সায়েদুল ইসলাম ওইসব কথা বলেন।

বারি’র পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন) ড. অপূর্ব কান্তি চৌধুরী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাবিহা পারভীন, বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন, নিকলী উপজেলা চেয়ারম্যান এ. এম. রুহুল কুদ্দুস ভূঞা (জনি), নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোছা. শাকিলা পারভীন।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারি’র ফার্ম মেশিনারী এন্ড পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (এফএমপিই) বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মো. আইয়ুব হোসেন।

বারি’র এফএমপিই বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ এরশাদুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বারি’র সরেজমিন গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাজহারুল আনোয়ার। অনুষ্ঠানে বারি উদ্ভাবিত হাওর অঞ্চলের উপযোগী কৃষি যন্ত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় এবং অতিথিবৃন্দ এ প্রদর্শনীর স্টল পরিদর্শন করেন।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, দেশের শস্য উৎপাদন বাড়ানো, শস্য সংগ্রহোত্তর ক্ষতি কমানো, ক্রমবর্ধমান কৃষি শ্রমিক স্বল্পতা নিরসন ও চাষাবাদে যোগান দেয়া পানি, সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদির যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষকদের উপযোগী বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করেছে। যার অধিকাংশই কৃষকদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত। কৃষকের মাঠে চলমান বারি উদ্ভাবিত যন্ত্রের সংখ্যা এখন প্রায় আড়াই লক্ষ।

(এআরএস/এএস/আগস্ট ২৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test