E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লাভবান কৃষক আইনুল

২০২৩ জুন ০৯ ১৯:০৯:২৯
দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লাভবান কৃষক আইনুল

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষক আইনুল ইসলাম।শখের বসে তরমুজ চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। এখন প্রচন্ড গরমে এই পানি জাতিয় ফলটির বাজারে বেশ চাহিদাও রয়েছে। পাইকারেরা তার ক্ষেত থেকেই তরমুজ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। কম খরচ ও পরিশ্রমে ভাল দাম পেয়ে খুশি কৃষক আইনুল। তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে এবং পরামর্শ নিতে ছুঁটে আসছেন আশপাশের চাষীরা। কৃষি বিভাগের পাশাপাশি এই তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ ও সহযোগিতা করছে মহিলা বহুমূখী  শিক্ষা কেন্দ্র-এমবিএসকে এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন নামে দু’টি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান।

উত্তরের শষ্যভান্ডার দিনাজপুরে যখন জমিতে ধান আর বাগানে লিচু দোল খাচ্ছে কখন পাশেই মাচায় সবুজ পাতা আর মাচার নিচে ঝুঁলে আছে কালো ও হলুদ রঙের তরমুজ। পোকা-মাকড় আর বালাই নাশকে ব্যবহার করা হচ্ছে, ইয়োলো স্টিকি পেপার ও সেক্স ফেরোমন ফাঁদ। এমন দৃশ্য দিনাজপুর সদর উপজেলার দিঘন পশ্চিম পাড়া এলাকার। এ বছর কৃষক আইনুল ইসলাম শখের বসে চাষ করেছেন তরমুজ। দুই বিঘা জমিতে ব্লাক বেবী, মধুমালা ও সুগার কিং জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। কম খরচ ও পরিশ্রমে তরমুজ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি।

কৃষক আইনুল ইসলাম জানান, এ জমিতে আগে বোরো ধান,আলু ও পটলের আবাদ করা হতো।এই দুই বিঘা জমিতে এবার শখের বসে ব্লাক বেবী,মধুমালা ও সুগার কিং জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেঝি। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে তরমুজ চাষ করে ভালোই লাভ পাওয়া যাচ্ছে। আমার ক্ণেতের প্রতিটি তরমুজের ওজন প্রায় দেড় থেকে ৪ কেজি। ইতোমধ্যে দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আরো দেড় থেকে দুই লাখ টাকার তরমুজ পাবো আশা করছি।’

গাছ থেকে যাতে ছিড়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া আছে জালি। তরমুজের উপরের রঙ হলুদ আর কালো হলেও ভেতরে টকটকে লাল।এই তরমুজের ক্ষেত দেখতে এবং পরামর্শ নিতে ছুঁটে আসছেন আশপাশের চাষীরা। দেখাদেখি এখন অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসা কৃষক রায়হান জানান, ‘এই সিজিনে এতো তরমুজ দেখে আমরা অভিভুত। দেখলাম, এই গরমে তরমুজের চাগিদা থাকায় পাইকাররাও ক্ষেত থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ফসল বিক্রি করতে যে ঝামেলা তা তরমুজের ক্ষেত্রে নেই। তাই আগামি এই লাভ জনক ফসল আমিও আবাদ করতে চাই।’

কৃষি বিভাগের পাশাপাশি এই তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ ও সহযোগিতা করছে মহিলা বহুমূখী শিক্ষা কেন্দ্র-এমবিএসকে এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন নামে দু’টি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান।

মহিলা বহুমূখী শিক্ষা কেন্দ্র-এমবিএসকের কুষিবিদ হোসেন মো.আবু সুফিয়ান জানান, আমরা এ জাতের গ্রীম্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ ও সহযোগিতা করে আসছি। এ ফসল চাষ করে কৃষক প্রচুর লাভ হচ্ছেন। প্রচন্ড গরমে এই পানি জাতিয় ফলটির বাজারে বেশ চাহিদাও থাকায় ক্ষেত থেকে তরমুজ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা। প্রতি কেজি তরমুজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষক।’

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিকিদ মো. নুরুজ্জামান জানান, ‘এ জাতের তরমুজ চাষে গাছ লাগানোর ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে ফল উঠানো শুরু হয়। আড়াই মাসের ব্যবধানে এ তরমুজ আবাদে খরচ বাদে বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ থাকে প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা ।স্বল্প সময়ে এবং কম পরিশ্রমে এ জাতের তরমুজ আবাদ করে ভাল ফলনের পাশাপশি বাজারে দামও ভাল পাচ্ছেন কৃষক। আমরা এ জাতের তরমুজ চাষে কৃষকদের সহায়তা দিয়ে আসছি। শুধু কৃষক আইনুল নয়,দিনাজপুওে প্রায় অর্ধশত কৃষক এখন এ্জাকের তরমুজ আবাদ করছে। জেলার চাগিদা মিটিয়ে এ তরমুজ চলে যাচ্ছে, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। জেলার প্রায় ৫৮ একর জমিতে চাষ হয়েছে, এজাতের তরমুজ।’

(এস/এসপি/জুন ০৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test