E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শোল মাছ চাষ করে লাভবান সাতক্ষীরার জাকির

২০১৬ মার্চ ০৩ ১৫:২১:০৯
শোল মাছ চাষ করে লাভবান সাতক্ষীরার জাকির

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : মাত্র পাঁচ কাঠা আয়তনের একটি পুকুরে দেশি জাতের শোল মাছের চাষ করেছেন তিনি। কম খরচে অল্প দিনেই তিনি প্রায় পাঁচ মন মাছ পেয়েছেন। দেশি জাতের মাছ যেখানে হারিয়ে যেতে বসেছে সেখানে শহরের পুরাতন সাতক্ষীরার জাকির হোসেন শোল মাছ  চাষ করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স জাকির হোসেন মাস কয়েক আগে ভাসমান অবস্থায় কুড়িয়ে পেয়েছিলেন এক জোড়া শোল মাছ। সযতনে মাছ দুটিকে ছেড়ে দেন নিজের পুকুরে। গত বছরের ১০ আগস্ট ডিম ছাড়ে মা মাছটি। তারপর পোনা বের হয়। এই পোনাই তার পুকুরে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন এক একটি শোল মাছের ওজন হয়েছে সর্বনিম্ন আটশ’ গ্রাম। বছর পুরতেই তা এক কেজি ছাড়িয়ে যাবে।

জাকির জানান পুকুরে কোনো সার দেননি তিনি। চুন কিংবা কোনো রাসায়নিক খাবারও নয়। সম্পূর্ন প্রাকৃতিকভাবে মাছগুলি বেড়ে উঠেছে। বাজারের ছোট মাছই এর প্রধান খাদ্য। জাকির রোজ সকাল বিকাল খাবার দেন তাদের।

জাকির বলেন রাক্ষুষে মাছ হিসাবে সবাই এড়িয়ে চলেন শোল মাছকে। তারা বলেন ‘ এরা অন্য সব ছোট মাছ খেয়ে ফেলে’। তিনি শোল মাছের সাথে চিতল, রুই, কাতলার চাষও করেছেন। তাদের বৃদ্ধিও নজর কাড়ার মতো। তিনি বলেন মানুষ যাকে পুকুরের অন্যান্য মাছের জন্য শত্রু মনে করেন আমি তাকে বন্ধু মনে ভেবে নিয়েছি। এর নার্সিং কিংবা একটু বড় হলেই পোনা লালনের দায়িত্ব মা মাছটির। এজন্য বাড়তি কোনো কাজেরও দরকার নেই বলে জানান তিনি।

জাকির তার বাড়িতে গড়ে তুলেছেন গুড়পুকরের রিসার্চ ইনস্টিটিউিট। পুকুরে শোল মাছের চাষ এরই অধীনে বলে জানান তিনি। পুরনো জোড়া শোলের ওজন এখন দুই কেজি ছাড়িয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন পাশেই নতুন আরও একটি পুকুর খনন করেছি। সেখানে এই পুরুষ ও মা মাছটিকে ছেড়ে দেব। সেখানে আবারও শুরু হবে নতুন পত্তন।

জাকিরের পুকুরের পানি ছয় ফুটের কম নয়। চকচকে পানি। কারণ জানতে চাইলে বলেন সবই প্রাকৃতিক । এজন্য পরিচ্ছন্নতা বেশি লক্ষ্যনীয়। এই পানিতে হাঁস নামা নিষেধ , কিন্তু মানুষের গোসল বারন নয়। তিনি পুকুরে মিশ্র চাষের মধ্যে দেশি শোল চাষ করে লাভবান হয়েছেন ।

তিনি জানান ‘ এভাবে সবাই এগিয়ে এলে বাংলাদেশের দেশি জাতের মাছই হতে পারে বিশ্ব সেরা মাছ’। তিনি বলেন তার দেখাদেখি অনেকেই এতে মনোযোগী হচ্ছেন। দেশি জাতের মাছ যাতে হারিয়ে না যায় সেই উদ্যোগই নিতে হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার জাকির হোসেন তার পুকুরের মাছ প্রথম দফায় তুলেছেন।

এ সময় জেলা মৎস্য অফিসার এমএ ওয়াদুদ , উপজেলা মৎস্য অফিসার লুৎফর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন ‘ জাকির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন । তিনি একটি রেকর্ড গড়লেন । আমরা তাকে পুরস্কৃত করতে চাই’। মৎস্য বিভাগ তাকে সব সহায়তা দেবে বলেও জানান তারা।

(আরকে/এএস/মার্চ ০৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test