E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ব্রি ধান৫৮ এবং ব্রি ধান৬৭ এর বাম্পার ফলন

২০১৬ এপ্রিল ০৭ ১৯:১৮:৪২
দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ব্রি ধান৫৮ এবং ব্রি ধান৬৭ এর বাম্পার ফলন

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), গাজীপুরের ফলিত গবেষণা বিভাগ কর্তৃক Transforming Rice Breeding (TRB) প্রকল্পের আওতায় গত ০৪ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কুশোডাঙ্গা ও ০৫ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চেচুড়ী গ্রামে এবং ০৬ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভবদহ বিলে ব্রি ধান৫৮ ও ব্রি ধান৬৭ এর বীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ কর্মসূচীর (SPDP) উপর কৃষক সমাবেশ, শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত মাঠ দিবস সমূহে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা ও যশোর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফ ও কৃষিবিদ নিত্য রঞ্জন বিশ্বাস, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত কৃষিবিদ মোহন ঘোষ, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক, খুলনা। উপজেলা কৃষি অফিসারবৃন্দ কৃষিবিদ মো. তৌহিদিন ভূঁইয়া, কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম এবং কৃষিবিদ মো. গোলাম সামদানী, যথাক্রমে কয়রা, ডুমুরিয়া ও অভয়নগর এর মাঠ দিবসে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত মাঠ দিবস সমূহে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, সাতক্ষীরার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার দেবশর্মা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ১০ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও বৈজ্ঞানিক সহকারী উপস্থিত ছিলেন। কয়রা, খুলনা ও অভয়নগর, যশোরের মাঠ দিবসে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কর্মকার এবং চেচুড়ী, ডুমুরিয়া, খুলনার মাঠ দিবসে সভাপতিত্ব করেন ডা. দীন মোহাম্মদ খোকা, মেডিক্যাল অফিসার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, ডুমুরিয়া, খুলনা; বিশেষ অতিথি হিসেবে উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রেজওয়ান মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি মাঠ দিবসে প্রায় ১৫০ জন কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আগত সকল কর্মকর্তা, অতিথি ও কৃষক সহ ব্রি ধান৫৮ ও ব্রি ধান৬৭ এর বীজ উৎপাদন মাঠ পরিদর্শন করা হয়। ব্রি ধান ৫৮ ও ব্রি ধান৬৭ এর মাঠ দেখে কৃষকগণ এ ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শস্য কর্তনে ডুমুরিয়া, খুলনায় ব্রি ধান ৫৮ এর গড় ফলন হয় ৮.৫ টন/হে. (২৮ মন/বিঘা); কয়রা, ডুমুরিয়া ও অভয়নগরে লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি ধান৬৭ এর ফলন পাওয়া যায় যথাক্রমে ৬.৯০, ৭.০০ ও ৭.২০ টন/হে. (২৩-২৪ মন/বিঘা)।

মাঠ দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে উক্ত গবেষণা কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত ব্রি’র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, ব্রি কর্তৃক সম্প্রতি আবিষ্কৃত ব্রি ধান৫৮ ও ব্রি ধান৬৭ বোরো মৌসুমে অত্যন্ত সম্ভবনাময় জাত। বিশেষ করে লবণাক্ত অঞ্চল যেখানে অন্য জাতের ধান আবাদ করে তেমন ফলন পাওয়া যায় না সেখানে ব্রি ধান৬৭ খুবই উপযোগী। ফলে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে এ জাতের আবাদ বৃদ্ধি করে এদেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও টেকসই করে বিদেশে চাল রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এ জাত দুটোর ফলন বিশেষ করে ব্রি ধান৫৮ এর ফলন জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান২৮ এর চেয়ে বিঘা প্রতি গড়ে প্রায় ৪-৫ মন বেশী, জীবনকাল ব্রি ধান২৮ এর চেয়ে মাত্র এক সপ্তাহ বেশী। এ জাতের বিশেষ গুন হচ্ছে ব্রি ধান৫৮ এর গাছ শক্ত, তাই সহজে হেলে পড়ে না, ছড়ায় ধানের সংখ্যা বেশী এবং চিটার সংখ্যা কম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষকগণ ব্রি ধান ৫৮ ও ব্রি ধান৬৭ এর বীজ পেয়ে খুবই খুশী এবং তাঁরা এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। এলাকার কৃষকগণ এ ধান দেখে তা আবাদে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ অতিথিগণ উৎপাদনকৃত সকল ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করে কৃষকদের মাঝে বীজ বিনিময় ও বিক্রয়ের মাধ্যমে এ জাতের আবাদ সম্প্রসারণ করতে পরামর্শ দেন। প্রধান অতিথি উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফ বলেন এ জাত দুটো সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনকে আরও টেকসই করবে এবং দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ব্রি’র গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম আরও জোরদারকরনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন ব্রি ধান৫০ ও ব্রি ধান৫৮ ব্রি’র এক অসাধারণ আবিস্কার। তিনি বলেন আবাদি জমি কমে যাওয়া সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের কৃষি বান্ধব নীতির কারনে ১৯৭০-৭১ সালের তুলনায় দেশে ধান উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন গুনের বেশি। এ জাত দুটোর আবাদ সম্প্রসারণ করে ধানের উৎপাদন আরও কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব হবে।

(প্রেসবিজ্ঞপ্তি/অ/এপ্রিল ০৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test