E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন, তবুও হতাশ কৃষক

২০১৬ এপ্রিল ২৩ ১৮:৪০:৪৮
আগৈলঝাড়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন, তবুও হতাশ কৃষক

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশী জমি আবাদ ও ধানের বাম্পার ফলনের পরেও উৎপাদিত ফসলের বাজার মূল্য কম হওয়া ও শ্রমিক সংকটের কারণে হাসি নেই কৃষকদের মুখে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ৩শ ৫০হেক্টর জমি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন থাকলেও আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৩শ ৫৫ হেক্টার জমি। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫হেক্টার বেশী, তবে গত বছরের তুলনায় ২শ একর জমি কম চাষ হয়েছে। ফসল উৎপাদানের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭শ ৬৩ মে.টন চাল।

কৃষকরা জানান, প্রতিবছর এলাকায় পাকা ধান কাটার জন্য গোপলগঞ্জ, ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, শরণখোলা, মোড়লগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা আসেন। এবছর ধানের দাম কম হওয়ায় তাদের অনেকেই এবার ধান কাটতে আসেনি। যারাও এসেছে তাদের অনেকেই জমিতে পানি থাকায় ধান কাটতে চাইছেন না। অনেকেই জমিতে পানি দেখে নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন। স্থানীয় বাজারে ধানের বাজার মূল্য উৎপাদনের চেয়ে আনুপাতিক কম হওয়ায় স্থানীয় শ্রমিকরা ধান কাটতে অনীহা প্রকাশ করছে। বর্তমানে ধানের বাজার মূল্য ৪৫০ থেকে ৪৭৫ টাকা। যা চাষীর উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক। ধানের বাজার মূল্য কম ও শ্রমিক সঙ্কট থাকার কারণে উঠতি পাকা ফসল ঘরে তুলতে না পেরে কৃষকরা চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন।

অন্যদিকে কৃষকরা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া ঋণ ও ও সুদের চিন্তায় বিপর্যস্ত হয়ে পরেছেন। কারণ, বেশিরভাগ চাষী স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে মৌসুমের শুরুতে প্রতি হাজার টাকার বিনিময়ে ১মন ধান ও নগদ ১হাজার টাকা ফেরতের প্রতিশ্র“তি দিয়ে বেশী ফলনের আশায় চাষাবাদ করেছেন।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, বোরো চাষের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং কৃষকেরা তাদের প্রশিক্ষন গ্রহনের মাধ্যমে চাষাবাদ করায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টার জমিতে হাইব্রিড উৎপাদন হয়েছে ৮মে.টন, আর উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ৬.২ মে.টন ধান। এর মধ্যে বিএডিসি’র সুপার এসএল-৮এইচ (চিকন) চাষ করে চাষিরা সবচেয়ে ভাল ফলন পেয়েছেন। উপজেলায় চাষাবাদের ৫০ভাগই চাষ হয়েছে সুপার এসএল-৮এইচ।

সরকারের শস্য বহুমুখি প্রকল্প ও আইএপিপি (ইন্টিগ্রেট এগ্রিকালচার রুরাল প্রডাকটিভিটি) প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১শ ৫০টি কৃষক স্কুলের ৪হাজার ৫শ জন কৃষক পরিবারকে কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রশিক্ষন ও ১২টি পাওয়ার টিলার, ১০টি পাওয়ার প্রেসার বিনা মূল্যে প্রদান করা হয়েছে।

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া উৎপাদন হওয়ায় ব্লাষ্ট ও বিএলবি (ব্যাকটেরিয়াল লিপ ব্রাইড) রোগে ধান গাছ আক্রান্ত হলেও তা সহনীয় পর্যায়ে ছিল।

(টিবি/এএস/এপ্রিল ২৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test