E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রানীশংকৈলে নেক ব্লাষ্ট রোগে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

 

২০১৭ মে ০৭ ১৫:২০:১৯
রানীশংকৈলে নেক ব্লাষ্ট রোগে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি
 

খুরশিদ আলম শাওন, রানীশংকৈল প্রতিনিধি : ধান গাছে শীষ এসেছে এখন শীষের পরিপূর্ণতা আসার সময় কৃষকের মুখে ফুঠে উঠেছে হাসি, কৃষকের গোলাও মোটামুটি প্রস্তুত ঠিক সে-সময় শীষ গুলোর সবুজ রং পরিবর্তন হতে শুরু করেছে, শীষের গোড়ায় কালচে রং ধরতে শুরু করেছে। শীষের পরিপূর্ণতা না আসতেই কেন এমন পরিবর্তন এ নিয়ে দূঃচিন্তায় পড়ে গেছে ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার বেশিরভাগ কৃষক।

তবে এ উপজেলার বেশিরভাগ মানুষই কৃষি নির্ভরশীল। এ উপজেলার কৃষকরা ধানের শীষের হঠাৎ পরিবর্তন হওয়াকে প্রাথমিকভাবে কারেন্ট পোকা বলে ধারনা করলেও পড়ে জানতে পারে এটি মারাত্বক ছত্রাক জনিত নেক ব্লাষ্ট রোগ। তবে কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে কৃষি অফিসের লোক সময়-মত পরামর্শ দিলো এমনটা হতো না। আর কৃষি অফিস বলছে আবহওয়া জনিত কারনে এমনটা হয়েছে।

কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট বোরো ধানের লক্ষ্য মাত্রা ৮ হাজার ৬১৮ হেক্টর তবে অর্জিত হবে ৮ হাজার ৪৯৫ হেক্টর। উপজেলার ৮নং নন্দুয়ার ইউপির বনগাঁও গ্রামের কৃষক আলিফ তার ৫০ বিঘা বোরো ধানের মধ্যে ২৫ বিঘাই নেক ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধানের শীষ সাদা হয়ে গেছে এবং দানা থাকে না বলে জানান।

এছাড়া কালুগাও গ্রামের রফিকুল মাষ্টার, গণেশ মাটি,দুলালেরও বোরো ধানের ফসল এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ৪নং লেহেম্বা ইউপির লেহেম্বা গ্রামের জতিন বলেন,আমি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছিলাম ধানের যে হারে ক্ষতি হয়েছে তাতে ঋণ পরিশোধ দুরের কথা খাওয়ার ধান জুটবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

পাটগাও গ্রামের মিঠুন বলেন,সদ্য মাত্র আমার বাবা মারা গেছেন,জমি আদি নিয়ে ৫ বিঘা মাটিতে বোরো ধান লাগিয়েছি, কিন্তু হঠাৎ করে কি রোগে যেন আমার সব অর্থ পরিশ্রম বৃথা হতে যাচ্ছে আমি শংকিত পরিবার পরিজন নিয়ে আগামী ফসল পর্যন্ত কিভাবে কাটবে আমার দিনগুলো। এছাড়াও উপজেলার সন্নিকটে খুনিয়া দিঘী চত্বরে রফিকুল মিয়ার ১বিঘা,মোস্তফা মিয়ার প্রায় ২বিঘা ধানের ফসলে অধিকাংশই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

উপজেলার ৫নং বাচোর ইউপির সালাম জানান, তিনি ২ বিঘা ধান লাগিয়েছিলেন তার সমস্ত ধানেই নেক ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

২নং নেকমরদ গরকই মন্দির এলাকার ভবেশ বলেন, গরকই মন্দির বিলের বেশিরভাগ ধানেই এ সমস্যাটি দেখা দিয়েছে,এ এলাকার কৃষকরা দিশে হারা হয়ে পড়েছে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করেও তেমন একটা উপকার আসছে না বলে তিনি জানান।

এছাড়াও ৬ নং কাশিপুর,৭নং রাতোর,১নং ধর্মগড়, সহ উপজেলা পৌর শহর জুড়ে ধান ক্ষেতে এ রোগের বিস্তার ঘটেছে। কৃষকরা বলছেন তাদের আবাদের জীবনে এমন রোগের স্বীকার তারা হয়নি। কৃষকদের অভিযোগের তীর কৃষি অফিসের দিকে ছুড়লেও কৃষি অফিস বরাবরই মতই বলছেন আবহওয়া জনিত কারনেই এমনটা হয়েছে।

কৃষি সম্পসারণ কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, আবহওয়া জনিত কারন যেমন দিনে গরম রাতে ঠান্ডা মেঘলা আকাশ ,সকালে কুয়াশা, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর নাইট্রেজেনের পরিমান বেড়ে যাওয়ায়। নেক ব্লাষ্ট রোগটি দেখা দিয়েছে আমরা কৃষি অফিস মাট পর্যায়ে উঠান বেঠক,সহ কৃষকদের সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

তবে ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, কৃষি কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এবং দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

(কেএএস/এসপি/মে ০৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test