E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আল্লাহর নাম খচিত ‘মুজিব মিনার’ বানানোর প্রস্তাব আলেমদের

২০২০ ডিসেম্বর ০৫ ২১:২২:১১
আল্লাহর নাম খচিত ‘মুজিব মিনার’ বানানোর প্রস্তাব আলেমদের

স্টাফ রিপোর্টার : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যু নিয়ে চলমান বিতর্কের শরিয়তসম্মত সমাধান চেয়েছেন কওমি ঘরানার আলেমরা। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের পরিবর্তে আল্লাহর নাম খচিত ‘মুজিব মিনার’ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের কেউ কেউ।

ভাস্কর্য নিয়ে দেশের চলমান অস্থিরতা ও জাতীয় সঙ্কট বিষয়ে আলেমদের করণীয় শীর্ষক এক বৈঠক থেকে এ প্রস্তাব আসে। শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দেশের খ্যাতনামা আলেমরা যোগ দেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভাস্কর্য ইস্যুতে ৫টি প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলেমরা। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি পত্র দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতেরও পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি ভাস্কর্য ইস্যুতে শরিয়তসম্মত সমাধান কামনা করেন।

বৈঠক শেষে বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশের খ্যাতনামা আলেমরা এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে ৫টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেগুলো একটি পত্র আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা হবে। একইসঙ্গে একটি প্রতিনিধি দলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, মানবমূর্তি বা ভাস্কর্য যে কোনো উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ৯২ ভাগ মুসলমানদের দেশে মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে কোরআন সুন্নাহ সমর্থিত উত্তম কোনো বিকল্প সন্ধান করাই উত্তম।

বিকল্প চিন্তা কী— এমন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের প্রস্তাব আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত মুজিব মিনার নির্মাণ করা হোক। তবে লিখিত ৫ দফা প্রস্তাবে মুজিব মিনারের কথা উল্লেখ নেই বলেও জানান তিনি।

সূত্রমতে, আলেমদের সভায় ভাস্কর্য প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয় যে, মানবমূর্তি ও ভাস্কর্য যে কোনো উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কোনো মহৎ ব্যক্তি ও নেতাকে মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপন করে শ্রদ্ধা জানানো শরিয়তসম্মত নয়। এতে মুসলিম মৃত ব্যক্তির আত্মার কষ্ট হয়। কারো প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তার স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ না করে শতকরা ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে কুরআন সুন্নাহর সমর্থিত কোনো উত্তম বিকল্প সন্ধান করাই যুক্তিযুক্ত।

ভাস্কর্য ছাড়াও মহানবী সা. এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নাশের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ, দ্বীনি আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধ, মাহফিলে লাউড স্পিকার বন্ধ করার প্রতিবাদ ও আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও দায়িত্বহীন আচরণ বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় সভায়।

বৈঠকের উপস্থিত ছিলেন বাংলাদশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফজ্জেী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ( একাংশ) সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আব্দুল হালীম বুখারী, মুফতি রুহুল আমীন, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদি, মাওলানা আব্দুল হামিদ ( মধুপুর পীর), মাওলানা আব্দুল কুদুস, মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মুফতি আরশাদ রহমানী, মুফতি মুহাম্মাদ আলী, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test