E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

২০২১ ডিসেম্বর ০৬ ২১:৪৫:২৯
মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার : ফেসবুক লাইভে বিতর্কিত মন্তব্য এবং অডিও ফাঁস হয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নিজের সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কাদের বলেন, ডা. মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যেই তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

সাংবাদিকদের সেতুমন্ত্রী বলেন, সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমি রাত ৮টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।

এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্যকে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানের ‘নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ফাঁস হয়েছে একটি ফোনালাপ। দাবি করা হচ্ছে, এই কথোপকথনটি ডা. মুরাদ হাসান ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির। ফোনালাপে থাকা চিত্রনায়ক ইমন ইতোমধ্যে সেটি স্বীকারও করেছেন। ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। পুরো বক্তব্যে ‘অশ্রাব্য’ কিছু শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’।

এর আগে নানাভাবে এই প্রতিমন্ত্রী আলোচনায় আসেন। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান অপর আলোচক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়ার সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী পাপিয়াকে ‘মানসিক রোগে আক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি নিজে একজন ‘চিকিৎসক হিসেবে’ বিএনপির এই নেত্রীর (পাপিয়া) 'চিকিৎসা দরকার' মনে করেন বলেও মন্তব্য করেন। এ সময় দু’জনের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়।

এর দুদিন আগেই ইউটিউবে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্যকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য দেন ডা. মুরাদ হাসান। প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে হাস্যরস করতে করতে ওই নারীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন তিনি। এসময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়েও ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করতে শোনা যায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে।

এরই মধ্যে এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ৪০ নারী অধিকারকর্মী। তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে ‘লিঙ্গবাদী’, ‘কুৎসিত যৌন হয়রানিমূলক’ বলেও আখ্যা দিয়ে তার অপসারণ দাবি করেন তারা। বিবৃতিতে নারী অধিকারকর্মীরা বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পদে আসীন একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর মুখে এই ভাষা বাংলাদেশের আপামর নারীদের অপমান এবং অসম্মান করেছে বলে আমরা মনে করি। এর মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি যৌন হয়রানিকে সমাজ এবং রাষ্ট্রে কাঠামোগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করার বৈধতা দেওয়া হয়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকেও এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test