E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতছড়িতে আবারো র‌্যাবের অস্ত্র উদ্ধার

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৮:১৭:২৭
সাতছড়িতে আবারো র‌্যাবের অস্ত্র উদ্ধার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে আবারো অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব। সোমবার থেকে অভিযান চালিয়ে ৩য় দফায় ১১২টি রকেটের গোলা ও ৪৮টি চার্জার উদ্ধার করা হয়। বুধবার দুপুরে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ত্রিপুরা পল্লীর অজিত দেববর্মার বাড়ির ছাগল রাখার ঘরের নিচে মাটি খুড়ে বাংকার থেকে অস্ত্রবোঝাই ১৪ টি বস্তা উদ্ধার করে র‌্যাব। এসব বস্তার মধ্যে ১৩টি থেকে ১১২টি ট্যাংক বিধ্বংসী রকেট গোলা ও ১টি বস্তা থেকে ৪৮টি রকেট চার্জার উদ্ধার করা হয়। কিন্তু এখনও অজানা রয়ে গেছে এসব অস্ত্রের উৎসস্থল কোথায়। কারা এগুলো মজুদ করেছিল।

বুধবার সকালেই সাংবাদিকরা খবর পান সাতছড়িতে অস্ত্র পাওয়া গেছে। কিন্তু সাতছড়িতে গেলে ত্রিপুরা পল্লীর ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি র‌্যাব। দুপুর ১টায় হেলিকপ্টারযোগে সাতছড়িতে আসেন র‌্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি এসেই সাংবাদিকদের নিয়ে প্রবেশ করেন সাতছড়ির ত্রিপুরা পল্লীতে। অজিত দেববর্মার বাড়ির ছাগল রাখার ঘরের নিচে অস্ত্র থাকতে পারে বলে গত দু’দিনে জায়গাটি চিহ্নিত করে রাখে র‌্যাব।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সেখানে মাটি খুড়লে একটি টিনের ঢাকনা দেখা যায়। ঢাকনা সরানোর পর উন্মুক্ত হয় একটি বাংকারের মুখ। পরে র‌্যাব সদস্যরা বাংকারের ভেতর থেকে একে একে ১৪টি বস্তা নিয়ে জড়ো করেন পল্লীর একটি আঙ্গিনায়। ১টি বস্তায় পাওয়া যায় ৪৮টি চার্জার। বাকি বস্তাগুলোয় ছিল হাই এক্সপ্লোসিভ এন্টি ট্যাংক বিস্ফোরক। এগুলো ছিল প্লাস্টিকের মোড়কের ভেতর। চার্জারগুলোর গায়ে লিখা ছিল 90-205। রকেটগুলোর গায়ে লিখা ছিল 40 HEAT8-90-5205।

পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন র‌্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, র‌্যাব-৯ জুন থেকে যে অভিযান শুরু করে সে অভিযানের অংশ হিসাবেই বুধবার অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব সদস্যরা কয়েকদিন ধরে অনুসন্ধানের পর নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়েছে। সাতছড়ি এলাকা বিশাল হওয়ায় নিশ্চিত না হয়ে কোথাও খনন করা কঠিন।

নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণের পর নিশ্চিত হয়েই খনন করা হয়। অস্ত্রগুলো কোন দেশের বা কারা জড়িত এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া গেলে কিছু বলা যাবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অভিযান র‌্যাবের একক অভিযান। তবে অন্যান্য সংস্থাও সতর্ক রয়েছে। এসময় র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সিও স্কোয়াড্রন লিডার মোছাব্বির হোসেন, র‌্যাব কর্মকর্তা রুম্মান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। মোছাব্বির হোসেন জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর তার তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের পর অস্ত্রগুলো চুনারুঘাট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

র‌্যাবের দায়ের করা দু’টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমূল্য কুমার চৌধুরী জানান, মামলাগুলোর তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। দ্রুতই প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।


প্রসঙ্গত, ২৯ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৯টি এসএমজি, ১টি এমএমজি, ১টি বেটাগান, ১টি ৭.৬২ মি.মি. অটো রাইফেল, ৬টি এসএলআর, ২টি এলএমজি, ১টি টেলিস্কোপ সাইড ও ২ হাজার ৪শ’ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করে র‌্যাব। এর আগে ১ জুন রাত থেকে সাতছড়িতে দুই শতাধিক র‌্যাব সদস্য, ডগ স্কোয়াড ও বোমা বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে অভিযান শুরু করে। একে একে আবিস্কার করে ১৫টি বাংকার। এসব বাংকার থেকে ৩, ৪ ও ৯ জুন উদ্ধার করা হয় ২২২টি কামান বিধ্বংসী রকেট, ২৪৮টি রকেট চার্জার, ১টি রকেট লঞ্চার, ৪টি ৭ দশমিক ৬ মিলিমিটার মেশিনগান, ৫টি মেশিন গানের অতিরিক্ত খালি ব্যারেল, ১২ দশমিক ৭ মিলিমিটারের ১৩শ’ ৭৬ রাউন্ড বুলেট, ৭ দশমিক ৬ মিলিমিটারের ১২ হাজার ৩০০ রাউন্ড বুলেটসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ।

(পিডিএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test