E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলা, ১০ দিনেও অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ

২০২৪ এপ্রিল ২৪ ১৬:৪৭:২১
৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলা, ১০ দিনেও অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ

মোহাম্মদ সজীব, ঢাকা : রাজধানীর হাজারিবাগ থানায় ৪ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয় গত ১৪ এপ্রিল রাতে। তবে মামলার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও অদৃশ্যকারণে ধর্ষণচেষ্টার অভিযুক্ত মো. রাব্বিকে (১৯) এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়াতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারটির।

গত রবিবার ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৪ বছরের একটি শিশু হাজারিবাগের বারইখালী নামক এলাকার তার মায়ের সঙ্গে নিজেদের দোকানে যায়। এরপর খেলতে আরেক শিশু বাবুর সঙ্গে একই সড়কের অলি মসজিদের পাশে টিনশেড বাসায় চলে যায়। সেখানে একটি গরুর খামারের সাথে বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায়। কিন্তু ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে ছেড়ে দিলে ওই শিশু মেয়েটি তার মাকে সব ঘটনা জানায়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয়ে আর রাতে হাজারিবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।তবে হাজারিবাগ থানা পুলিশের ভাষ্য আসামি রাব্বিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।আবার পুলিশের ঠিক উল্টো কথা বলছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ঘটনার পর আসামি রাব্বিকে এলাকায় দেখা গেছে। কিন্তু আমরা শুনতেছি পুলিশ নাকি তাকে খুঁজে পাচ্ছে না।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ওসি (তদন্ত) সঙ্গে কথা বললেও কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমান উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, এই ঘটনার পর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা হুমকি দিয়ে তাকে এই বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে বলেন। তবে ঘটনার দিন রাতে থানায় মামলা করেছি ওসি স্যারের সহায়তায়। (ঘটনার পর স্থানীয় নেতা ও পুলিশের বক্তব্যর তথ্য প্রমাণ সংরক্ষিত আছে এই প্রতিবেদকের হাতে।

মামলার নথিতে দেখা যায়, গত রবিবার ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিশুটি হাজারিবাগের বারইখালী নামক এলাকার ১৪ নাম্বার সড়কের তার মায়ের সঙ্গে নিজেদের দোকানে যায়। এরপর খেলতে আরেক শিশু বাবুর সঙ্গে একই সড়কের অলি মসজিদের পাশে টিনশেড বাসায় চলে যায়। সেই ঘরে আগে থেকে অবস্থান করা মো. রাব্বি শিশু বাবুকে থাপ্পড় দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ওই শিশুকে পাশের বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায়। কিন্তু ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে ছেড়ে দিলে ওই শিশু মেয়েটি তার মাকে সব ঘটনা জানায়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয়ে আর রাতে হাজারিবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়, যার নাম্বার ১৪।

শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমান কান্না করতে করতে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, আমার এই শিশুটির সাথে যে এই কাজ করেছে তার বিচার চাই। মামলা হলেও আসামি আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। এমনকি মামলার কাগজ ও হাসপাতাল থেকে দেয়া কাগজও সব পুলিশের কাছে। তারা আমাকে সেই কাগজও দেয়নি। এবং কাউকে কিছু যেনো না বলি সে ব্যপারে বলতে না বলেন।

তার দাবি, আমাকে এই বিষয়ে কারও সাথে কথা বলতেও মানা করেছে দারোগা (তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাদির শাহ)। ঘটনার পরেই দারোগা (এসআই নাদির শাহ) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা এই বিষয়ে কথা বলতেও বারণ করেছেন। সেই নাম জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদকে তার নাম প্রকাশ করতে পারবেন না বলেন, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বলে এড়িয়ে যান।

হাজারিবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। তাই এই মামলার বিষয়ে এখন আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। এই বিষয়ে আমি বিস্তারিত জেনে আপনাকে পরে বলতে পারবো। আমি ছুটিতে থাকাকালিন সময়ে ওসি (তদন্ত) সুমন এসব বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন। আপনি তার কাছে থেকে তথ্য নিতে পারেন।

হাজারিবাগ থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বলেন, এই মামলার আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমার কাছে নতুন কোনো তথ্য নেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থেকে জেনে পরে জানাতে পারবো।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাদির সাহ্ বলেন, আমি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কী এসব মামলার কথা বলবো?

এই বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

ধানমন্ডি জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) আবু তালেব বলেন,আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। বিভিন্ন সুত্রের মাধ্যমে পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে সচেষ্ট রয়েছে। আর পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার কোন সুযোহ নাই।

(এস/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১০ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test