E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘দেশ বর্তমানে কঠিন সংকটে পড়েছে’

২০২৪ এপ্রিল ২৭ ১৭:৪২:০০
‘দেশ বর্তমানে কঠিন সংকটে পড়েছে’

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ বর্তমানে কঠিন সংকটে পড়েছে মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেছেন, এই সংকট থেকে উত্তরণে পথ আমাদেরই খুঁজে বের করতে হবে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাঙ্গালা গবেষণা।
অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, দেশ আজকে একটি কঠিন সংকটে পড়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণ কীভাবে হবে, সেটি নিঃসন্দেহে আট-দশটি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দেখে নিরূপণ করতে পারব না। আমাদেরই আমাদের পথ চয়ন করত হবে, নিরূপণ করতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য খুব সীমিত। লক্ষ্যটা হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে আমরা কথা বলতে পারব, মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে পারব, আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারবো, এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। শুধু চিন্তার মধ্যেই নিবিষ্ট থাকলে হবে না, আমাদের সেই পথ বের করে নিতে হবে এবং পথ চলতে হবে। সেই পথ হচ্ছে সংগ্রামের, সেই পথ হচ্ছে আত্মদানের, মানুষকে ভালোবাসার, দেশকে ভালোবাসার।

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ আরো বলেন, আজকে আমাদের যে ব্যর্থতা, যারা দেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম, সত্যিকার অর্থে শোষণমুক্ত দেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম, আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে, আমরা আমাদের মতো করে আমাদের যে বাস্তব অবস্থা, সেই আলোকে আমাদের রাজনৈতিক কৌশল, রাজনৈতিক লক্ষ্য নির্মাণ করতে পারিনি। সেটি না করে আমরা কেউ সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুসারী হয়েছি, কেউ চীনের অনুসারী হয়েছি, কেউবা আবার কিউবার অনুসারী হয়েছি।

‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’ গ্রন্থ সম্পর্কে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, আমার এই আত্মজীবনী একটি কালের একটি সময়ের প্রতিবিম্ব হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, আমি সবকিছু ধারণ করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে প্রশ্ন উঠেছে, আমি আমার মূল আদর্শের প্রতি নিষ্ঠাবান থাকতে পারিনি, অনুগত থাকতে পারিনি। আমি আজও বলি, আমি যখন রাজনীতি, সমাজের বিশ্লেষণ করি তখন আমি কিন্তু মার্কসের কাছেই যাই। এটাও বলি, যারা পুঁজিবাদে বিশ্বাস করেন, পুঁজিবাদকে রক্ষা করতে চান, তাদের জন্য কার্ল মার্কস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আজকে পুঁজিবাদের যে সংকট, সেই সংকটে এখনো মার্কস অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘের সদস্য সচিব ও ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’ বইয়ের প্রকাশক আফজালুল বাশার, সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ ড. সালেহ উদ্দিন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শিরিন হক, ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার।

আফজালুল বাশার বলেন, এই বইটা পড়লে মনে হয়, এতে কি মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের জীবনী পড়ছি নাকি গত ৬০ বছরের ইতিহাস পড়ছি।

সোহরাব হাসান বলেন, মাহবুব উল্লাহ দেশের ’৬৯ এর নায়ক, দেশের অন্যতম প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কিন্তু সেটিই তার একমাত্র পরিচয় না। তিনি সারাজীবন যে লক্ষ্য নিয়ে মানবমুক্তির জন্য কাজ করেছেন, সেই মানবমুক্তি বা বাংলাদেশের মুক্তি কতটা এসেছে? আমার মনে হচ্ছে, তার বইয়ের দুটি অংশ একটি হচ্ছে জীবন অন্যটি হচ্ছে সংগ্রাম।

ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, এত বড় বইটিতে মাহবুব উল্লাহ শুধু জীবন সম্পর্কে বলেননি। খুব স্পষ্টভাবে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতি, বাংলাদেশের রাজনীতি এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়েও আলোচনা করেছেন।

নূরুল কবির বলেন, এই বইটা পড়লে বোঝা যায় মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের জীবনটাকে তাৎপর্যপূর্ণ করার জন্য তার অন্তর্গত প্রণোদনা ছিল। বইটা পড়ে আমি তিনটা পর্বে ভাগ করতে পারি। একটা হলো কলেজ জীবন, আরেকটা হচ্ছে তার সক্রিয় ছাত্ররাজনীতির জীবন, যা ছিল বাংলাদেশ সৃষ্টিলগ্মের আগের সময় এবং আরেকটা হলো স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test