রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

স্টাফ রিপোর্টার : মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখে সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফিংকালে এ আহ্বান জানান। পরে তিনি প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আমি সংহতির বার্তা নিয়ে কক্সবাজারে এসেছি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি সংহতি জানাই। আর তাদের উদারভাবে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশি জনগণের প্রতিও আমার সংহতি রইল।
‘আমি এখানে এসেছি শুধু তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরার জন্য নয়, বরং তাদের সম্ভাবনার ওপর বৈশ্বিক দৃষ্টি আকর্ষণে করতেও। এখানে বসবাসকারী ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আত্মসম্মানবোধ-সম্পন্ন। তারা সংগ্রামী। বৈশ্বিক সমর্থন তাদের প্রয়োজন। ’
তিনি বলেন, কয়েক দশকের বৈষম্য ও নিপীড়নের পর আট বছর আগে রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ গণহত্যার ফলে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা দেশ (মিয়ানমার) ছাড়তে বাধ্য হন। সম্প্রতি আরও অনেক রোহিঙ্গা এসেছেন, যারা নির্মম নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছেন, যা সামগ্রিকভাবে মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষকে উসকে দিয়েছে।
‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখানে এসেছেন সেই মৌলিক চাহিদার জন্য, যা বিশ্বের যেকোনো মানুষেরই থাকে—সুরক্ষা, সম্মান এবং নিজেদের ও পরিবারের নিরাপত্তা। আমি আজ অনেকের সঙ্গে দেখা করেছি ও কথা বলেছি—তাদের সাহস আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, আর তাদের দৃঢ়চেতা মনোভাব আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে,’ বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
‘অনেকেই মিয়ানমারে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এবং এখানে আসার পথের কষ্টকর অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন। তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে চান—মিয়ানমারই তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনই এই সংকটের মূল সমাধান। ’
মিয়ানমারের সব পক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, বেসামরিক জনগণের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিন এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সহিংসতা আরও উসকে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন—যেন গণতন্ত্রের শেকড় গজাতে পারে।
‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ, বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে। যতদিন না রাখাইনে সংঘাত ও পরিকল্পিত নিপীড়ন শেষ হচ্ছে, ততদিন সুরক্ষার জন্য আশ্রয় খোঁজা ব্যক্তিদের পাশে থাকতে হবে আমাদের। ’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমরা গভীর মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। অর্থ সহায়তা কাটছাঁটের কারণে ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার জন্য আগের বছরের তুলনায় মাত্র ৪০ শতাংশ তহবিল পাওয়া যেতে পারে— যা বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে। এর পরিণতি হবে ভয়ংকর—মানুষ কষ্ট পাবে, আর অনেকেই প্রাণ হারাবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই মানবিক সহায়তায় বিনিয়োগ করা জরুরি, কারণ এই লোকেরা এরইমধ্যে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করেছে। সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে বাংলাদেশের জনগণ বিশাল ত্যাগ স্বীকার করে তাদের ভূমি, বনভূমি, সীমিত পানি ও সামান্য সম্পদ শরণার্থীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছে।
গুতেরেস আরও বলেন, আমি শেষবার কক্সবাজারে এসেছিলাম ২০১৮ সালে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে অনেক পরিবর্তন ও উন্নতি দেখেছি। তবে এখনো নানা ধরনের বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এই শিবির ও আশ্রয়দাতা বাংলাদেশি জনগণ সরাসরি জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি।
‘গ্রীষ্মকালে তীব্র তাপদাহ, আর আগুন লাগার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় ও বর্ষার মৌসুমে বন্যা ও ভয়ংকর ভূমিধস বাড়িঘর ধ্বংস করে, জীবন কেড়ে নেয়। এখানকার মানুষ শুধু খাদ্য সহায়তা নয়, বরং শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগও চায়। ’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, যখন ভবিষ্যতের আশা কমে যায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই সহিংসতা, অপরাধ ও নিরাপত্তা সংকট বাড়ে। কিছু রোহিঙ্গা পরিবার নিজেদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দেখে জীবন বাজি রেখে বিপদসংকুল সমুদ্রযাত্রায় ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে।
‘মানবিক সহায়তা যেন তাদের কাছে পৌঁছায়, সেটি নিশ্চিত করা আমাদের বিশেষ দায়িত্ব। তাদের সামনে এ প্রমাণ হাজির করতে হবে যে, বিশ্ব তাদের ভুলে যায়নি। ভালো সময়েও এই মানবিক সহায়তা কখনোই যথেষ্ট ছিল না। আর এখন তো সময় আরও কঠিন। ’
তিনি বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বহু মানবিক ও উন্নয়নমূলক এনজিও বড় ধরনের তহবিল সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এটি মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে—তাদের বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত খাবার, চিকিৎসা ও জরুরি সেবা, সুরক্ষা —সবই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। শরণার্থীরা সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বাজেট সংকোচনের ভয়াবহ প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে কক্সবাজারে থাকা অসহায় মানুষের ওপর। তহবিল সংকোচনের ভয়াবহ মূল্য মানুষকে জীবন দিয়ে দিতে হয়। শেষ পর্যন্ত এর স্থায়ী সমাধান মিয়ানমারেই হতে হবে।
‘শরণার্থীদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়ব না। এর আগে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি সংহতি এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন—তেমনি বাংলাদেশের প্রতিও। ’
‘এই পবিত্র রমজান মাসে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই— রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও তাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি শুধু কথায় নয়, কার্যকর পদক্ষেপ ও বাস্তব সহায়তার মাধ্যমে প্রদর্শন করুন,’ বলেন তিনি।
(ওএস/এএস/মার্চ ১৫, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- সিলেট রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ ওসি আমিনুল ইসলাম
- গোপালগঞ্জে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ ব্রি ধান’ ১০৭ এর মাঠ ফসল কর্তন উৎসব
- রাজবাড়ীতে হেরোইনসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার
- পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
- রাজবাড়ীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
- ‘বাংলাদেশের মৎস্যখাতে দক্ষিণ কোরিয়া কারিগরি সহায়তার আহ্বান’
- কাশ্মীরে হামলায় শোক আর ক্ষোভে উত্তাল বলিউড
- `দিনে পাঁচ লিটার দুধ খাওয়ার গল্প মিথ'
- ১ মে ঢাকায় বড় সমাবেশ করবে বিএনপি
- তিউনিসিয়ায় আটকে পড়েছেন ৩২ বাংলাদেশি
- পার্বতীপুরে গাঁজা সেবনের দায়ে যুবকের কারাদণ্ড
- মদনে পাওনা টাকা চাওয়ায় নৃশংস ভাবে খুন
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ দালাল আটক
- পাওনাদারের চাপে ঈশ্বরদীতে ঋণদান ও সঞ্চয় সমিতির মালিকের আত্মহত্যা
- আজ ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল করবে খেলাফত মজলিস
- ডিএমপির অফিস আদেশ স্থগিত, আসামি গ্রেপ্তারে লাগবে না অনুমতি
- মাথার খুলি দিয়ে বানানো পাত্রে পানীয় খেতেন অক্সফোর্ডের শিক্ষকরা
- সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জনসহ ৪ কর্মসূচি আজ
- ঢাকাসহ ৬ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
- শাজাহান খান-আতিক-সৈকত ও আবুল হাসান ফের রিমান্ডে
- কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু
- ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বাতিল
- ‘পরবর্তী সরকার আমাদের সংস্কার ভুলে যাবে, কল্পনাও করতে পারি না’
- দুদকের মামলা বাতিলে ড. ইউনূসের আপিলের রায় আজ
- ‘পাকবাহিনী নজিরবিহীন নারকীয় হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে’
- সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঝালকাঠিতে ঈদ উদযাপন
- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর
- সাংবাদিকের ওপর হামলা, বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাট
- ‘দাগি’র বিশেষ প্রদর্শনীতে মৌন প্রতিবাদ
- ঝিনাইদহে ছাত্রদলের সাবেক বর্তমান নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের ঈদ পুর্নমিলনী
- জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের মার্কিন সম্মানজনক পুরস্কার, যা বললেন ট্যামি ব্রুস
- রাজধানীতে ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পুলিশ
- টানা রেকর্ডের পর কমলো স্বর্ণের দাম
- মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে যোগ দিলেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা
- ‘দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে’
- কানে আসছেন টম ক্রুজ, দেখানো হবে ‘মিশন : ইমপসিবল’
- নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২২ গজে নাসির
- পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা, কোচিং-ফটোকপি বন্ধসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা
- টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে অফিস-আদালত
- বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা মোদির
- ১৭ মার্চ
- গরমকালে জন্ডিস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে সতর্কতা প্রয়োজন
- জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় পুরোদমে শুরু হচ্ছে না কাজ, চরম ভোগান্তি
- মাগুরায় এডাবের আয়োজনে নারী দিবস পালিত
- সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার
২৩ এপ্রিল ২০২৫
- তিউনিসিয়ায় আটকে পড়েছেন ৩২ বাংলাদেশি
- ঢাকাসহ ৬ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
- ‘পরবর্তী সরকার আমাদের সংস্কার ভুলে যাবে, কল্পনাও করতে পারি না’