E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘খানজাহান বিমান বন্দরের কাজ আগামী অর্থ বছরে শুরু হবে’

২০১৫ মে ১৯ ১৬:০১:৩৩
‘খানজাহান বিমান বন্দরের কাজ আগামী অর্থ বছরে শুরু হবে’

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আগামী অর্থ বছর থেকে বাগেরহাটে খানজাহান আলী বিমান বন্দরের র্নিমাণ কাজ শুরু হবে। তিন বছরের মধ্যে পুর্নাঙ্গ বিমান বন্দর রূপে এটি নির্মাণে ব্যায় হবে প্রায় ৫৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে ৪৯০ কোটি টাকা ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) দেবে বাকি ৫৪ কোটি টাকা। অধিগ্রহণ করা হবে আরও ১৬৩ হেক্টর জমি। মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লায় বিমান বন্দর এলাকা পরির্দশন শেষে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী সুধি সমাবেশে বলেন,এই বিমান বন্দরটির নির্মান কাজ শেষ হলে ওয়ার্ল্ড হ্যরিটেজ সুন্দরবন, হযরত খানজাহানের মাজার ও ষাটগুম্বজ মসজিদ এলাকার পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটবে। সমুদ্র বন্দর মংলা আরও গতিশীলতার পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই বিমান বন্দরটি গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখবে।

শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের প্রকৃত উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বিমান বন্দর এলাকায় কাছে পর্যটকদের থাকার জন্য একটি পাঁচ তারকা হোটেল, মংলায় পর্যটন কর্পোরেশনের পশুর মোটেলকে উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও খুলনার মুজগুন্নিতে হোটেল ব্যাবস্থাপনা ইনিস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে। এসময়ে মন্ত্রীর সাথে ছিলেন, মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি, স্থানীয় এমপি তালুকদার আব্দুল খালেক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরী, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল সানাউল হক, বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী সুদেন্দ্র বিকাশ গোশামী, তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল আফরোজ। বিকালে মন্ত্রী বাগেরহাট সার্কিট হাউজে বাগেরহাটে হযরত খানজাহানের মাজার, ষাটগুম্বজ মসজিদ এলাকার ও সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। আশ্বাস দেন এঅঞ্চলের পর্যটন শিল্পের সমস্যা সমাধানের।
যে ভাবে বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমান বন্দর :
স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে তৎকালিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএসএম মোস্তাফিজুর রহমানের প্রচেষ্টায় বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লায় মংলা-মাওয়া-ঢাকা মহাসড়কের পাশে হযরত খানজাহান আলীর (র:) নামে বাগেরহাটে বিমান বন্দর নির্মানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সরকার। তখন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অধিগ্রহন করা হয় ৯৪ একর জমি। অধিগ্রহণকৃত ৯৪ একর জমি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্থান্তরের পর ১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমান বন্দরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯৭ সালে শুরু হয় বিমান বন্দরের মাটি ভরাটের কাজ। প্রায় ২৪ কোটি টাকায় আংশিক মাটি ভরাট করা ছাড়া তৎকালিন সময়ে বিমান বন্দর নির্মাণে আর কিছুই করা হয়নি। ২০০১ সালে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে আবার শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এমতাঅবস্থার ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বাগেরহাটের ফয়লায় বিমান বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন। তখন তিনি খানজাহান বিমানবন্দর নির্মাণের প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। এরপর বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ দেয়। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে কুয়েট বিশেষজ্ঞরা তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে বিমান বন্দর নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে দ্রুত এই বিমান বন্দর নির্মানে প্রথম ধাপে ছোট বিমান ওঠানামার জন্য ২৫০ কোটি টাকা ও দ্বিতীয় ধাপে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য ৫শ’ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়। পরে এদু’টি প্রস্তাবনা একিভূত করে পূর্নঙ্গ বিমান বন্দর নির্মান প্রকল্প তৈরী করে পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। গত ৫মে একনেকের সভায় পুর্নাঙ্গ বিমান বন্দর রূপে ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যায় বাগেরহাট খানজাহান বিমান বন্দর প্রকল্পটি পাশ হয়। আগামী তিন বছরের মধ্যে এই বিমান বন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আরও ১৬৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহন করতে হবে। প্রকল্পটিতে ৭ হাজার মিটার রানওয়ে, টার্র্মিনালসহ ৪ হাজার মিটার গ্যংওয়ে, ১৮ হাজার ৫৬৪ বর্গ মিটার আবাসিক ভবন নির্মান ও ৭ লাখ ২০ হাজার ১৭৩ ঘন মিটার ভূমি উন্নয়নের কথা রয়েছে।
(একে/পিবি/মে ১৯,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test