E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরও বাড়বে’

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৩:৫৯:০৩
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরও বাড়বে’

স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা দুইটি বা তারও বেশি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। মামলার সংখ্যা বাড়লে নিষ্ক্রিয় রাখা ট্রাইব্যুনাল-২ আবারও সক্রিয় হবে বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান আইনমন্ত্রী।

গত মঙ্গলবার দু’টির মধ্যে একটিকে (ট্রাইব্যুনাল-২) নিষ্ক্রিয় ও একটিকে (ট্রাইব্যুনাল-১) সক্রিয় রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে আইন মন্ত্রণালয়। আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে দুই ট্রাইব্যুনাল একীভূত হয়ে পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসেবে কাজ করবে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

তবে, অপর ট্রাইব্যুনালটি পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত অগঠিত অবস্থায় থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।

কাজের পরিধি কমে যাওয়ার কারণেই একটি ট্রাইব্যুনাল নিষ্ক্রিয় রাখা হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যে মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তাতে একটি ট্রাইব্যুনাল দিয়েই বিচার কাজ পরিচালনা করা সম্ভব। আবার যদি প্রয়োজন মনে হয়, তাহলে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা দুই থেকে তিনটি পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

আনিসুল হক আরও বলেন, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলো যতোক্ষণ আছে, ততোক্ষণ বিচার কাজ চলবে।

তিনি বলেন, যেকোনো সময় যখনই ট্রাইব্যুনালের কাজে দেখা যাবে, দুইটি বা তারও বেশি ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন, আমরা দুইটি বা তারও বেশি ট্রাইব্যুনাল গঠন করবো।

তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কমানোর প্রথম এবং একমাত্র কারণ বর্তমানে যে মামলা আছে তাতে একটা ট্রাইব্যুনালের কাজ আছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুত একটি, চার্জ হয়েছে পাঁচটি, সবমিলিয়ে ট্রাইব্যুনালের সামনে মামলা ছয়টি। আর তদন্তাধীন মামলা রয়েছে ছয়টি। সেই প্রেক্ষিতে সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম, এই মুহূর্তে একটি ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজন।

বিচারের গতি শ্লথ নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক নয়। কাজের পরিধির ওপর নির্ভর করবে কয়টি ট্রাইব্যুনাল থাকবে। পরিস্কারভাবে বলছি, ট্রাইব্যুনালের মামলার সংখ্যা যে মুহূর্তে বৃদ্ধি পাবে, সেই মুহূর্তে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল নয়, প্রয়োজনে আরও যে কয়টি লাগবে তা গঠন করা হবে।

এই বিচার কাজ বন্ধ হবে না, যতোক্ষণ না পর্যন্ত সকল যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শেষ না হয় বলেও জানান আইনমন্ত্রী

রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিচার শেষ হওয়ার কারণে একটি ট্রাইব্যুনাল নিস্ক্রিয় করা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি বার বার বলছি, ট্রাইব্যুনালের ইমিডিয়েট যে কাজ, আপাতত যে কাজ তা একটা দিয়ে করা হচ্ছে। যে মুহূর্তে ট্রাইব্যুনালের কাজ বাড়বে, সে মুহূর্তে একটা কেন, প্রয়োজন হলে ২/৩টা বাড়াবো।

তদন্ত সংস্থার কাজের ওপর নির্ভর করবে তদন্ত সংস্থা কমবে না বাড়বে। এমনও হতে পারে তদন্তকারী সংস্থার যে সদস্য তারা বাড়তেও পারেন। তদন্তের কাজের ওপর নির্ভর করবে। আর মামলা কমে যাওয়ার কারণে প্রসিকিউশন সদস্য এতোটুকু থাকবেন না কমানো হবে- তা চিন্তা-ভাবনা করবো।

একটি ট্রাইব্যুনাল নিস্ক্রিয় করার কোনো অন্তর্নিহিত কারণ নেই বলে জানান আইনমন্ত্রী।

আপিল মামলার চূড়ান্ত রায়ের পর পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি দেরিতে যাওয়ার কারণে রিভিউ করতে পারছেন না রাষ্ট্র বা আসামিপক্ষ- সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। প্রসিকিউশনের মাধ্যমে বা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও বিজ্ঞ বিচারপতিদের মাধ্যমে অনুরোধ করতে পারি যে, তারা যেন রায়ের কপি তাড়াতাড়ি দেন। এটুকু করতে পারি, এর থেকে বেশি কিছু করতে পারি না। এ বিষয়ে আমরা প্রসিকিউশনকে অনুরোধ করবো, যাতে রায়ের কপি তাড়াতাড়ি দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

গত মঙ্গলবারের প্রজ্ঞাপনে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠন করা হয় বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হককে চেয়ারম্যান করে। পুনর্গঠিত এ ট্রাইব্যুনালের সদস্য করা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত সদস্য বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীকে।

প্রজ্ঞাপনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এর বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল দু’টিকে একীভূত করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এর প্রশাসনিক ও বিচার সংক্রান্ত সকল বিষয়াদি পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সম্পন্ন হবে বলেও জানানো হয়।

এ পুনর্গঠনের ফলে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও সদস্য বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া সুপ্রিম কোর্টে ফিরে গেছেন।

বুধবার থেকে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনাও শুরু করেছেন পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫)


পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test