E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রিয় জনের একটু সান্নিধ্য পেতে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বজনদের ভিড়

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৪:১৯:৫০
প্রিয় জনের একটু সান্নিধ্য পেতে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বজনদের ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের দিন ভোর থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছেন কেরানীগঞ্জের কদমপুরের হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী রাশেদা রহমান। উদ্দেশ্য কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী একমাত্র ছেলে রশিদুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে তার কাছে প্রিয় কিছু খাবার পৌঁছে দেয়া। দেড়মাস আগে স্থানীয় বিরোধের জের ধরে ছেলে কারাগারে যাওয়ার পর এবারই প্রথম ছেলেকে ছাড়া ঈদ করছেন রহমান দম্পতি।

কেন্দ্রীয় কারাগারে ছেলের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়া গেলেও এখনো (সকাল ১০টা) দেখা করা সম্ভব হয়নি, সেজন্য অপেক্ষা করছেন তারা। হাবিবুর রহমান বলেন, ছেলেটা কারাগারে কত কষ্টই না করে। ঈদের দিনে ছেলেকে না খাইয়ে আমরাও খেতে পারবো না বলে ভোরেই এখানে চলে এসেছি। শুধু রহমান দম্পতিই নয়, এমন অনেক মানুষই ঈদের দিনে কারাগারে বন্দী প্রিয় মানুষটিকে একনজর দেখতে আর খাবার পৌঁছে দিতে ভিড় করেছেন কারাগারের সামনে।

সানজানা আলম তার পাঁচ বছরের মেয়ে সিনথিয়া আলমকে নিয়ে কারাগারের সামনে সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন স্বামী আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে দেখা করার জন্য। আনোয়ার পাঁচ মাস আগে প্রতিবেশীর দায়ের করা একটি মামলায় কারাগারে আছেন জানিয়ে সানজানা বলেন, ‘একটি বেসরকারি ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ছিল আনোয়ার। সে জেলে যাওয়ার পর থেকেই দুঃসহ কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে আমাদের। ঈদের দিনে ওরে না দেখে থাকতে পারবো না বলে সকালেই চলে এসেছি।’

শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দেখা যায়, সকাল থেকে স্বজনেরা প্রিয় মানুষটির জন্য পছন্দের খাবার নিয়ে আসছেন। কারাগারের সামনে থেকে কারারক্ষীরা সেই খাবার সংগ্রহ করে ভেতরে পৌঁছে দিচ্ছেন।

উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টর থেকে কয়েদি মমিনুল ইসলামের জন্য গরুর মাংস, নাড়ু আর সেমাই নিয়ে এসেছেন তারই ছোটভাই মঈনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভাই দুই বছর ধরে কারাগারে। গরুর মাংস ভাইয়ের প্রিয় খাবার। ঈদে তাই গরুর মাংস নিয়ে এসেছি।’

কারারক্ষীরা জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত তিনদিন কয়েদিদের স্বজনেরা কারাগারে পর্যাপ্ত খাবার পৌঁছে দিতে পারবে।

আজকে (ঈদের দিন) কারাগারে স্বজনদের ভিড় একটু কম হবে। তবে আগামী দুই দিন স্বজনদের ভিড় অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন কারারক্ষী সুজন হালদার। আজকে ঢাকার বাইরে থেকে লোকজন আসছে না। পরবর্তী দুইদিন ঢাকার বাইরে থেকে মানুষজন আসবে বলে ভীড়ও বেশি হবে বলে তিনি জানান।

এদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে কারা কর্তৃপক্ষও কয়েদিদের জন্য উন্নত খাবারের ব্যবস্থা করেছে। আজ সকালে (শুক্রবার) কয়েদিদের নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি সেমাই সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারারক্ষী সেলিম আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘দুপুরে কয়েদিদের জন্য মাছ এবং রাতে মাংসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর প্রিয়জনদের নিয়ে আসা উন্নতমানের খাবারও তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কোনো কয়েদি যদি নগদ টাকা দিয়ে ক্যান্টিন থেকে কিছু কিনে খেতে চায় সেটাও তারা পারবে।’

কারাগারের ভেতরে সকাল ১০টায় ঈদুল আজহার নামাজও অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ওএস/পি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test