E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র আহ্বান

২০১৫ অক্টোবর ০১ ১২:৫৪:৫১
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র আহ্বান

নিউজ ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গিবাদকে মানব সভ্যতার অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে এ দু’টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নের পথের প্রধান অন্তরায়। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই, সীমানা নেই। সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকল রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। সূত্র: বাসস

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন, আমরা আমাদের নৈতিক সাহস ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও নিরাপদ জীবন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত রেখে যাওয়ার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করি।’

তিনি বলেন, ‘আমি নিজে সন্ত্রাস এবং সহিংস জঙ্গিবাদের শিকার। আমার পিতা বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন ভাই এবং অন্যান্য নিকট আত্মীয়দের ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমি নিজেও কমপক্ষে ১৯ বার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছি।’

তার সরকার সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সহিংস জঙ্গিবাদ এবং মৌলবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী বলেও জানান শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, ‘বাঙালি জাতির গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত, সে সব চরমপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মোকাবেলায় আমরা সদা তৎপর।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি টেকসই, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা সেখানে কেউ যাতে পিছিয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

তার সরকার ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং সহনশীলতা বজায় রাখার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে এ চর্চা আমাদের সামাজিক কাঠামোরই অংশ হয়ে উঠেছে। চার দশকেরও বেশি আগে, বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতায় শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান, সামাজিক ন্যায়বিচার, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বঞ্চনা ও আগ্রাসনমুক্ত একটি বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার সেই উদাত্ত আহ্বান আজও আমাদের জাতীয় উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্পৃক্ততার পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এর আগে আমি রূপকল্প-২০২১ উপস্থাপন করেছিলাম। এর মাধ্যমে আমরা একটি মধ্যম-আয়ের, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। উন্নয়নের পথে যেভাবে আমরা দৃপ্ত পদক্ষেপে অগ্রসর হচ্ছি, তাতে আমি বিশ্বাস করি, অচিরেই আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে স্থল এবং সমুদ্র সীমানা সমস্যা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। ৩১ জুলাই মধ্যরাতে আমরা ভারতের সাথে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় করেছি। যার মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার রাষ্ট্রবিহীন ছিটমহলবাসী তাদের পছন্দের রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পেরেছেন। তাদের দীর্ঘদিনের মানবেতর জীবনের অবসান হয়েছে। এ কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে আমরা সমগ্র বিশ্বের কাছে কূটনৈতিক সাফল্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছি।’

(ওএস/এলপিবি/অক্টোবর ১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test