E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রেমের ফাঁদ ও ভালো কাজের আশ্বাসে হচ্ছে নারী-শিশু পাচার

২০১৭ মে ১১ ১২:৫২:০৮
প্রেমের ফাঁদ ও ভালো কাজের আশ্বাসে হচ্ছে নারী-শিশু পাচার

স্টাফ রিপোর্টার : নারী ও শিশুপাচার রোধে সরকারের কঠোর আইন থাকা সত্বেও বাংলাদেশের ১৮টি রুট দিয়ে প্রতি বছর ২০ হাজার নারী ও শিশু পাচার হচ্ছে। আর পাচারের শিকার ৬০ ভাগের বয়সই ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।  তথ্য বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ)।

পাচারকারীরা নিত্যনতুন কৌশলে তারা নারী-শিশুদের ফাঁদে ফেলে পাচার করছে। কলেজপড়ুয়া ছাত্রীদের বিয়ের প্রলোভন, দরিদ্র-অসহায় নারীদের বিদেশে গৃহপরিচারিকার কাজ এমনকি গার্মেন্টের নারীদেরও ভালো কাজের কথা বলে পাচার করা হচ্ছে। এমনকি নারী ও শিশুদের সহজে ফাঁদে ফেলতে পাচার কাজে নারী দালালদের বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিএনডব্লিউএলএ-এর গবেষণা থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভারতীয় একটি চক্র তাদের দালালদের মাধ্যমে প্রথমে পাচারকৃত নারীদের সংগ্রহ করছে। আর প্রত্যেক নারীর জন্য দালালদের ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। পরে এসব নারীকে মুম্বাই, হায়দরাবাদ ও কলকাতাসহ বিভিন্ন শহরের পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রুটের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ১১টি রুট দিয়ে আর সাতক্ষীরার কয়েকটি সীমান্ত দিয়েও ভারতে নারী পাচার হচ্ছে।

সেন্টার ফর উইমেন্স অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজের তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ১০ লাখ নারী ও শিশু পাচার হয়েছে। যার মধ্যে ৪ লাখকেই ভারতে আর পাকিস্তানে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়েছে ১০ হাজারের বেশি নারীকে। অনেক ক্ষেত্রে দেহ ব্যবসা ছাড়াও নারী-শিশুদের দিয়ে অশ্লীল ছবি নির্মাণ, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানোসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধনী ব্যক্তিদের কাছে দাসী হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও পাচারের উদ্দেশে কলকাতা, মুম্বাই ও হায়দরাবাদকেন্দ্রিক পাচারকারী চক্র দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। তারা ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মফস্বলের ও গ্রামের উঠতি বয়সের কিশোরীদের ফাঁদে ফেলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নারী পাচারে এখনো সক্রিয় আছে একাধিক চক্র। বিভিন্ন জেলায় এ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন কৌশলে নারী-শিশুদের ফাঁদে ফেলছে। মূলত নারী ও কন্যাশিশুদের দেহ ব্যবসার উদ্দেশে তারা পাচার করছে। এর মধ্যে দরিদ্র ও অসহায়, স্বামী পরিত্যক্তা ও বিদেশে কাজ করে ভাগ্য ফেরাতে আগ্রহী নারীদের এ চক্র টার্গেট করছে। আর দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকদের সন্তানদের ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে পাচারকারীরা পাচার করে দিচ্ছে। কৌশল হিসেবে ঢাকার বাইরের কলেজছাত্রীদের প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।

পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক শ্রেণির দালাল তাদের ভারতে পাচার করে দিচ্ছে। পরে তাদের দিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে যৌনপল্লীসহ আবাসিক হোটেলগুলোতে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করানো হচ্ছে। তবে কিশোরী ও সুন্দরী নারীদের মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাচার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন গার্মেন্টের নারী শ্রমিকরাও টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ভারতের পোশাক কারখানায় ভালো কাজের কথা বলে তাদের পাচার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, পাচারকারীরা আরও বেশি সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। পাচার রোধে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

(ওএস/এসপি/মে ১১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test