E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সরকার শ্রমজীবীদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে’

২০১৭ জুলাই ০৪ ২৩:৩২:১৯
‘সরকার শ্রমজীবীদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে’

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার উন্নত এক বেতন কাঠামো প্রবর্তন করেছে যা ভবিষ্যতে কেউ চাইলেই পরিবর্তন করতে পারবে না। মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল ওয়েজ এন্ড প্রডাক্টিভিটি কমিশন রিপোর্ট-২০১৫’ গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা যে আমাদেরই দেশ এটা সবার চিন্তা-ভাবনায় থাকা উচিত। কাজেই এই দেশকে আমাদের এগিয়ে নিতে হবে। যেখানে মানুষ উন্নত জীবন পাবে, যখন দেশকে আমরা ইপ্সিত লক্ষ্য অনুযায়ী আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নত করতে সক্ষম হব। কমিশনের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই রিপোর্ট হস্তান্তর করেন। যেখানে ৬টি সেক্টরের ৯১টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৬০ হাজার শ্রমিকের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ সময় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, শ্রম সচিব মিখাইল শিপার, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং ১৮ সদস্যের ওয়েজ কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। যথাসময়ে রিপোর্ট পেশ করায় এ সময় প্রধানমন্ত্রী কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।

এই রিপোর্ট বাস্তবায়নের জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করবে বলেও প্রধানমন্ত্রী এ সময় উল্লেখ করেন। কমিশনের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান বলেন, শ্রমিকদের থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এই রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে তাদের জন্য বেতন-ভাতার ১৬টি ধাপ প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের একটি অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের জন্য একটি সুষম বেতন কাঠামো গড়ে তোলা। যাতে করে তারা একটু স্বচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারে। যে কারণে মুদ্রাস্ফীতির ওপর ভিত্তি করেই সরকার তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, যাই হোক, শ্রমিকদের বেতন কিন্তু তাদের উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, কেননা উৎপাদন এবং মান রক্ষার ওপরই একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি জড়িত। ‘শ্রমিকদের উৎসাহ প্রদানে ভালো শ্রমিকদের অবশ্যই ভালো প্রণোদনার বন্দোবস্ত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা সবসময়ই শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পক্ষে ছিলেন এবং তাদের অধিকার আদায়েই আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধুর সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই চলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই কেবল দেশের সাধারণ জনগণ উন্নয়নের সেই ছোঁয়াটা পায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী থাকার সময় সেই ১৯৫৪ সালেই বঙ্গবন্ধু এ অঞ্চলে শিল্প গড়ে তোলার ভিত রচনা করেন। সেই সময়ই বঙ্গবন্ধু তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এবং বেসরকারি খাতে আরো অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই কেবল এই অঞ্চলের জনগণ উন্নয়নের স্বাদ পেতে শুরু করে।

শ্রমজীবী মানুষের প্রতি পাকিস্তানি জান্তার শোষণের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই শোষণের কবল থেকে মুক্তির জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু সকল শিল্প কারখানাকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে আসেন। কেননা যুদ্ধে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান পুননির্মাণে সক্ষম তখন কোন শিল্পপতি ছিল না।

বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তখন সে সময় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলেন এবং অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানই মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে প্রদান করেন। কিন্তুু ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো শ্রমিকদের কথা, শিল্পের ভবিষ্যত- এসব চিন্তা না করেই এসবের অনেক প্রতিষ্ঠানই নামমাত্র মূল্যে বেচে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময়ই আওয়ামী লীগ সরকার এ রকম ৯টি রুগ্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় উৎপাদনে ফেরায় এবং লাভজনক করে তোলে। অন্যদিকে বেতন-ভাতার দাবিতে রমজান মাসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের মিছিলে গুলি করে বিএনপি-জামায়াত সরকার ১৭ জন শ্রমিককে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের যথাযথ উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফলে বাংলাদেশ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test