E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নৌ অধিদফতরের দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তি দাবি

২০১৭ জুলাই ২৬ ১২:২৬:৪৭
নৌ অধিদফতরের দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তি দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : নৌ-পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের স্বার্থে নৌ-পরিবহন অধিদফতরকে সব ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।

অবিলম্বে অধিদফতরের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সম্পদের হিসাব প্রকাশ এবং প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন এসব সংগঠনের নেতারা।

গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক চারটি সংগঠন এ দাবি জানায়। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে নৌ-অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী গ্রেফতার হওয়ার পর নৌ-খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ভূলুণ্ঠিত ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে এ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, বছরের পর বছর ঢাকায় বসে বিভিন্ন স্থানের নৌযানের ভৌতিক সার্ভে (ফিটনেস পরীক্ষা) ও নিবন্ধনসহ অভ্যন্তরীণ নৌযানের মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ (মাস্টার ও চালক) পরীক্ষা, নৌযানের নকসা অনুমোদন, বে-ক্রসিংয়ের (উপকূল অতিক্রম) অনুমতি প্রদান, সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের নামে সিডিসি (ধারাবাহিক অব্যাহতিপত্র) ইস্যু এবং তাদের যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বহুবার প্রকাশিত হয়েছে। মাস্টার ও ড্রাইভারদের নামে শত শত জাল সনদ ইস্যু এবং সরকারি সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বিদেশগামী নাবিকদের নামে অধিদফতরের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর করা বেআইনি ‘এনওসি’ (অনাপত্তির সনদ) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকের চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের নামও এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত বছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন এবং একই অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক একজন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করলেও আজ পর্যন্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদনই আলোর মুখ দেখেনি বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, শুধু প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই দুর্নীতি বন্ধ হবে না, জাহাজের নকসা অনুমোদনে ‘ঘুষ লেনদেন’ যদি আগে থেকেই প্রচলিত থাকে তাহলে ‘নকসা অনুমোদন কমিটি’র সকল সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। এছাড়া দুদকের কাছে অভিযোগকারী কথিত ঘুষদাতা ‘বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস’ এর অথরাইজড কর্মকর্তা এ এন এম বদরুল আলমকেও (রাতুল) জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কারণ, নকসা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৭ সালে নৌ-অধিদফতরে তালিকাভুক্ত বেঙ্গল মেরিন এ পর্যন্ত দুই শতাধিক নকসা অনুমোদন করিয়ে নিলেও তিনি এতোদিন দুদকের কাছে কেনো অভিযোগ করেননি, তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। নকসা অনুমোদনে ঘুষ কেলেঙ্কারীর সঠিক রহস্য উদঘাটন এবং জঘন্যতম এ কাজের সঙ্গে জড়িত সকলের মুখোশ উন্মোচনের স্বার্থে বদরুলকেও আইনের আওতায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান বিবৃতিদাতারা।

নৌ-মন্ত্রণালয় ও নৌ-অধিদফতরের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন উত্থাপন করে বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার’ (প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক) এর একটি পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকলেও নৌ-নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ পদে কেনো স্থায়ী নিয়োগ হচ্ছে না? এছাড়া রীতি ভঙ্গ করে কোনো কোনো কর্মকর্তাকে একসঙ্গে ৩-৪টি গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন ও ‘চার্টার অব ডিউটিজ’ লঙ্ঘণ করে ৭-৮টি দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে ও ঢাকায় নিজ বাসায় নিয়মিত অবস্থানকারী চিহ্নিত কর্মকর্তাদের কেনো ঢাকার বাইরের কার্যালয়ে শিপ সার্ভেয়ারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে- সে প্রশ্নও তোলেন তারা।

বিবৃতিদাতারা হলেন- নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, সিটিজেন্স রাইটস মুভমেন্টের সভাপতি মেজর (অব.) মো. মফিজুল হক সরকার, যাত্রী অধিকার পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান ও উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test