E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কমে যাচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার

২০১৭ জুলাই ২৯ ১২:৪৮:০২
কমে যাচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার

নিউজ ডেস্ক : ‘বাঘ আমাদের গর্ব, আমরাই বাঘ রক্ষা করব’ স্লোগানে আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব বাঘ দিবস-২০১৭’। বাঘ আছে বিশ্বের এমন ১৩টি দেশ ২০১০ সাল থেকে এই দিনে দিবসটি পালন করে আসছে।

এক সময় সুন্দরবনে জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা পর্যাপ্ত থাকলেও বছর বছর তা কমে বর্তমানে ক্রান্তিকালে এসে পৌঁছেছে। গত ৫ বছরে এ বনে বাঘের সংখ্যা কমেছে ৩৩৪টি। সর্বশেষ হিসাবে সুন্দরবনে বাঘ আছে ১০৬টি। অথচ ২০১০ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি।

নানা কারণে বাংলাদেশে কমে যাচ্ছে বাঘের সংখ্যা। মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে বাঘের সংখ্যা কমেছে ৭০ শতাংশেরও বেশি।

বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ। এসব কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, নির্বিচারে বাঘ শিকার ও বাঘের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচার, বাঘসমৃদ্ধ বনাঞ্চল ধ্বংস, আবাসস্থলের চারপাশে শিল্প ও কলকারখানা স্থাপন, ফাঁদ পেতে ও বিষ টোপের মাধ্যমে বাঘ শিকার, বাঘের খাদ্য জাতীয় প্রাণী শিকার ও মাংস বাজারজাতকরণ, বাঘ ও মানুষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়া এবং বাঘসমৃদ্ধ বনাঞ্চল দিয়ে অবাধে যানবাহন ও নৌ চলাচল বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট করা।

এছাড়া সুন্দরবনে বাঘের স্বাভাবিক জীবনচক্রের জন্য যে স্বাদু পানি, পর্যাপ্ত পরিমাণে শিকার, বিচরণের জন্য গহীন জঙ্গল এবং নিরুপদ্রব প্রজনন ব্যবস্থা থাকা দরকার তার কোনোটাই এখন যথেষ্ট নয়। ফলে প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে টিকে থাকা বাঘের প্রজনন প্রক্রিয়া ঝুঁকিতে পড়েছে। ফলে বছর বছর কমছে বাঘ।

এর বাইরেও শাবক পাচার, পিটিয়ে ও গুলি করে বাঘ হত্যার ঘটনাও সংখ্যা হ্রাসের কারণ। বার্ধক্য ও লবণাক্ত পানি পানে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণেও বাঘের মৃত্যুর ঘটনাও বড় কারণ।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৬ বছরে ২০০১ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশে মোট ৪২টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে লোকালয়ে এসে পড়ায় জনতা পিটিয়ে হত্যা করেছে ১৩টি বাঘ, বার্ধক্যজনিত কারণে ৮টি বাঘ ও অসুস্থ হয়ে মারা গেছে ২টি বাঘ, ঘূর্ণিঝড় সিডরে মারা গেছে ১টি বাঘ এবং চোরা শিকারিদের হাতে মারা পড়েছে ৮টি বাঘ। এছাড়া এ সময়ে বাঘের ১০টি চামড়া উদ্ধার করা হয়।

বন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৪ সালে পাগ মার্ক বা পায়ের ছাপ গণনা পদ্ধতিতে করা শুমারিতে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘ ছিল ৪৪০টি। কিন্তু ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে করা শুমারিতে দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে মাত্র ১০৬টি।

তবে বাঘ কমে যাওয়া নিয়ে পরিবেশবিদদের উদ্বেগ থাকলেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী থেকে শুরু করে দায়িত্বশীলরা শুধু আশ্বাস দিয়েই দায় সারছেন।

তবে বাঘসহ বন্যপ্রাণী শিকার প্রতিরোধে সুন্দরবনে 'স্মার্ট প্যাট্রোলিং' শুরু হচ্ছে শিগগিরই। সেইসঙ্গে অসুস্থ বাঘের চিকিৎসায় খুলনায় 'ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার' স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া লোকালয়ে চলে আসা বাঘকে জনরোষ থেকে রক্ষায় সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test