E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারেন’

২০১৭ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৪:৫৭:১১
‘রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারেন’

স্টাফ রিপোর্টার : ‘শান্তিপূর্ণভাবে আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান চাই’ উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন-নিপীড়ন ও দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারেন।

রবিবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী।

‘রোহিঙ্গা নির্যাতন যদিও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় কিন্তু যেভাবে নির্বিচারে শিশুসহ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, এটা হতে পারে না’- যোগ করেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছি। একাত্তর সালে আমাদের সঙ্গে যেমনটি ঘটেছিল, তেমনটি এখন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আমরা ঘটতে দেখছি।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা রোহিঙ্গাদের বিষয়। রোহিঙ্গারাই আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার বিষয়টি চিন্তা করবে। এ ধরনের অনেক নজিরও রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট কয়েকটি পুলিশ পোস্টে হামলার অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ‘শুদ্ধি অভিযান’র নামে এখন পর্যন্ত তারা প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে। বাদ যায়নি নিরীহ নারী ও শিশু।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মমতায় প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

ষোড়শ সংশোধনী : রিভিউ করবে সরকার

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণ শেষে অ্যাটার্নি জেনারলকে চিঠি দেব রিভিউ করার জন্য। এটি হবে আমাদের রায়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।’

‘আপনারা (সাংবাদিকরা) জানেন রায়ে ৭৯৯ পৃষ্ঠা রয়েছে। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা এ রিভিউ করব।’

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকছে না। এই ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ৩ জুলাই খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায় ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার চিন্তা-ভাবনার কথা জানান।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। ‘বিচারকদের পদের মেয়াদ’-সংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী বিল অনুসারে, সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ দফায় বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাসংক্রান্ত বিধান রাখা হয়। এতে বলা হয়, ‘প্রমাণিত ও অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্যসংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাবে না।’ ৩ দফায় বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব-সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে। একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৪ জানুয়ারি আপিল করে। আপিলের ওপর গত ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১১তম দিনে গত ১ জুন শেষ হয়। ওই দিন আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। গত ৩ জুলাই রায়ের সংক্ষিপ্তসার ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test