E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ২২৪ কোটি টাকা সহায়তা

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২০ ২৩:২৮:৪৪
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ২২৪ কোটি টাকা সহায়তা

স্টাফ রিপোর্টার : জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার (২২৪ কোটি টাকা) মানবিক সহায়তা দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সঙ্গে বৈঠকে এ সহায়তার আশ্বাস দেন। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের এ সহায়তার কথা জানান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য যত রকমের সাহায্য সহযোগিতা করা দরকার সেটা তারা করবেন। সাহায্য তারা আরও বাড়াবেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় আমরা বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ২৮ মিলিয়ন ডলার (২ কোটি ৮০ লাখ ডলার) সহায়তা দেব। সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য ৯৫ মিলিয়ন (৯ কোটি ৫০ লাখ) ডলার দিচ্ছি।’

মিয়ানমারে ঘরহারা রোহিঙ্গাদের জন্য সাড়ে ৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এছাড়া আশা করছি ইউএসএআইডির (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা) মাধ্যমে ৪৫ মিলিয়ন ডলারের খাদ্য সহায়তা দিতে পারব।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার সরকারকে আবার আহ্বান করছি, তারা যেন রোহিঙ্গাদের মিয়ারমারে থাকতে দেয়। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো যাতে সেখানে কাজ করতে পারে তারা যেন সেই অনুমতি দেয়।’

মিয়ানমারে গণহত্যা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে বার্নিকাট বলেন, ‘সেখানে একটি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। যে নামেই আপনি ডাকুন না কেন এটি অবিলম্বে সমাধান হওয়া দরকার।’

কী কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছেন সে বিষয়ে অং সান সুচি তদন্ত করবেন বলে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা এটি দেখেছি। আমি সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করেছি। কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের বাড়তি তদন্ত হবে। অং সান নিজেই বলেছেন, তিনি কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট স্বীকার করেন। আমি মনে করি তিনি তার প্রতিশ্রুতি রাখবেন।’

‘আমি শুধু খোলা মনে এতটুকু বলতে চাই, সুচি শুধু নিজেকে এই প্রশ্ন করতে পারে, এত লোক নিজে থেকে এত অল্প সময়ের মধ্যে এই ভয়ংকর বৃষ্টি-বাদলের সময় কোন প্রয়োজন না থাকলে কেন ঘর ছাড়বে? আমার মনে হয় এটি প্রমাণ করে যে ভয়ংকর ও বিপদজনক কোন কারণ ছাড়া মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে এভাবে ঘর ছাড়তে পারে না।’

রোহিঙ্গা পরিস্থিতিতে আপনি উদ্বিগ্ন কিনা জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘আমরা অবশ্যই উদ্বিগ্ন। আপনারা দেখেছেন হোয়াইট হাউস, কংগ্রেস সদস্যরা এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সুচির সঙ্গে কথা বলেছেন। এটি অত্যন্ত বড় ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই পরিস্থতিতে কেউ ভালো থাকতে পারে না। সমস্যার সমাধান ও রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরা স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে এই ২০/২৫ দিনে সাড়ে ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের থাকা-খাওয়ার সব রকম ব্যবস্থা আমরা করেছি। এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে (রাষ্ট্রদূত) বলেছি, রোহিঙ্গাদের তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। এই যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ও তার দেশ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এই কাজে আমাদের পাশে তারা থাকবেন, সাহায্য-সহযোগিতা করবেন।’

মায়া বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য যত রকমের সাহায্য-সহযোগিতা করা দরকার সেটা তারা (যুক্তরাষ্ট্র) করবেন। সাহায্য তারা আরও বাড়াবেন, এতে তাদের কোন কৃপণতা থাকবে না।’

বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test