মেঘের সাথে, মেঘের সাজে সাজেকে হারিয়ে যাওয়া
![মেঘের সাথে, মেঘের সাজে সাজেকে হারিয়ে যাওয়া](https://www.u71news.com/article_images/2023/09/05/IMG-20230903-WA0281.jpg)
পূর্ণি ঘোষাল
প্রায় এক মাস আগ থেকেই প্রচার প্রচারণা শুরু। ঘুড্ডি ভ্রমন গ্রুপ ৭ম ট্যুর সাজেক। বাসের টিকেট, রির্সোট, চান্দের গাড়ী ও সাজেকে খাওয়ার অর্ডারও আগে থেকে দেয়া ছিল।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ৩১ আগস্ট আসলো। আমি, আমার দাদা তপু ঘোষাল, আমার বৌদি বন্যা ঘোষাল, আমার আট বছরের ভাতিজা অভ্র ঘোষাল ও আমার ৪ বৎসরের ভাতিজি পিউ ঘোষাল, ঘুড্ডি ভ্রমন গ্রুপ-এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট তারিখে (৩১ আগস্ট, বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে নয়টার সময় সাভারের আশুলিয়া থেকে একটি বাসে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। যাবার পথে আমরা অনেক মজা করলাম। পথে কুমিল্লার নুরজাহান হোটেলে যাত্রা বিরতি হলো। সবাই নাস্তা করলাম।
ভোরে বাস থেকেই খাগড়াছড়ির পাহাড়ের প্রকৃতির রূপ দেখলাম। প্রকৃতি এত সুন্দররূপে সাজানো তা নিজ চোখে না দেখলে বুঝা সত্যিই দুষ্কর! সকাল ৯ টায় আমরা খাগড়াছড়ির দিঘিনালা পৌছালাম। নেমেই টুরিস্ট ক্যাম্প হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে সকালবেলার নাস্তা সেরে চান্দের গাড়ীতে করে (আগেই রেডি করা ছিল) সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
একসাথে ৪ টা গাড়ী চলা শুরু করলো। এ এক অন্য রকম অনুভুতি। ছেলেরা অনেকে চান্দের গাড়ির ছাদে উঠল। কারণ, সাজেকে যাওয়ার সময় ছাদে না উঠলে মজাই নাকি থাকে না। ছাদ থেকেই গান গাওয়া সেলফি তোলা। আহ্ কি দারুণ ভ্রমণ। সত্যিই অভিভূত; মুগ্ধ হয়েছি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য দেখে। পথের দুইপাশে সবুজেঘেরা অনন্য আর আমরা। যারা রোমান্টিক না তারাও রোমান্টিক হতে বাধ্য এমন পরিবেশে আমি নিশ্চিত। উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা পার হতে হতে মন বিমোহিত হচ্ছিল বারবার। আমারও গান গাইতে ইচ্ছে করলেও দাদার ভয়ে গাইতে পারিনি। কারণ দাদা ভীষন রাগী। বাঘাইহাট চেক পোষ্টে গাড়ী থামলো আমরা সবাই নেমে পড়লাম। কেউ ছবি তুলছে, কেউ ডাব খাচ্ছে, কেউ আখ খাচ্ছে খুব আনন্দের সহিত। অবশেষে মজা করতে করতে আর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে স্বপ্নপুরী মেঘের দেশ সাজেকে পৌছালাম। পূর্ব নির্ধারিত মারুয়াটি রির্সোটে পৌছালাম। রির্সোটে সবাইকে রুম বন্টন করে দেওয়া হল। আমাদের ফ্যামিলি একটা রুমে উঠলাম। হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে সবাই খাওয়া দাওয়া করলাম। হঠাৎ দেখি বৃষ্টি শুরু হলো। অনেকে মন খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু আমি মনে মনে খুব খুশি হলাম। কারণ সাজেকে আমার খুব ইচ্ছা ছিল বৃষ্টিতে সাজেক যাবো তা পুরন হলো।
মেঘের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া
বিকালে বৃষ্টি থামার পর সবাই আমাদের রেখে আগেই হেলিপ্যাডে চলে গেছে। পরে আমি, দাদা, বৌদি, ভাতিজা ও ভাতিজিকে নিয়ে হ্যলিপ্যাডে গিয়ে মেঘের সাথে ব্যাম্বুটি খেতে খেতে ছবি তুললাম। হঠাৎ দেখি পুরো সাজেকে মেঘে ডেকে গেল। এ এক অপরুপ দৃশ্য। না দেখলে বুঝা যাবে না। অসাধারণ পরিবেশ। কিছুক্ষণ পর আবার মেঘ চলে গেল। সন্ধ্যার পর আমরা একটা হোটেলে কফি খেলাম। কিছুক্ষণ আড্ডাও দিলাম।
রাতের সাজেক ও বারবিকিউ
আগেই পরিকল্পনা ছিল সাজেকে বারবিকিউ করবে। রাত ৮ টায় সবাই হোটেলের সামনে চলে আসছে। একসাথে বসে সবাই বারবিকিউ তৈরীর সময় ছিল। খুব মজা করছে আড্ডা। বারবিকিউ তৈরীর পর সবাই একসাথে মজা করে খেলাম।
রাতের আড্ডা, লটারী ও দলবেধে গান গাওয়া
খাওয়া শেষ করে সবাই কটেজে চলে আসলাম। তারপর কটেজের বারান্দায় সবাই দলবেধে বসে পড়লাম। এবার আড্ডা দেয়ার পালা। শুরু হলো গিটার বাজিয়ে গান। গানের এক ফাকেঁ লটারীর আয়োজন হলো। এরপর আড্ডা গান চললো রাত ২টা পযর্ন্ত। মাঝে মাঝে আমার বৌদির সাথে একটু ঝগড়াও করেছি। সাজেকের প্রথমদিন এভাবেই কেটে গেল।
সকালে মেঘ দেখতে ভোরে উঠা
রাতেই সবাইকে বলে দেয়া হল। সকালের সূর্যোদয় দেখতে হলে ভোর ৫টায় উঠতে হবে। তাই সবাই ভোর পাঁচটায় উঠে হ্যালিপ্যাড গেলাম সূর্যদোয় দেখার জন্য। সেখানে গিয়ে আমরা মেঘের উপরে ভেসে বেড়াচ্ছি এমনই মনে হল। দিগন্ত বিস্তৃত মেঘ-যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু মেঘ আর মেঘ। তবে কালো মেঘের আড়ালে সূর্যটা হারিয়ে গিয়েছিল তাই সূর্যদোয় দেখা হলোনা। তাতে কি মেঘের রাজ্যেতো হারিয়ে যেতে পেরেছি। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির রহস্য এতবেশি বিমোহিত করেছিল সত্যিই ভালো না লেগে উপায় নেই। প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গেলাম আর ছবি তুললাম। পুরো হেলিপ্যাড ঘুড্ডি ভ্রমন গ্রুপ এর দখলে। সবাই একসাথে গ্রুপ ছবি তুললাম। তার পরে গেলাম লুসাই গ্রাম। টিকিট কেটে ভিতরে গেলাম। কেউ কেউ লুসাইদের পোশাক ভাড়া করে পরে ছবি তুলছে, কেউ দোলানায় দুলছে, কেউ গান গাচ্ছে।
খাগড়াছড়ির আলু টিলা ও ঝুলন্ত ব্রীজ
সবকিছু ঘুচিয়ে সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি দিঘিনালার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আবার সেই আকাবাকা পথ, উচুনিচু পথ। পথে হাজাছড়ি ঝর্না দেখলাম। দিঘিনালা এসে দুপুরে টুরিস্ট ক্যাম্প হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেয়ে ঝুলন্ত ব্রিজ ও আলুটিলা গুহা দেখতে রওনা হলাম। প্রথমে ঝুলন্ত ব্রিজে প্রবেশ করে কিছু সময় কাটিয়ে ছবি, সেলফি তুলে আলু টিলায় উদেশ্যে রওনা হলাম। আলুটিলা গিয়ে গুহাতে প্রবেশ করলাম। অনেকে ভয়ে ফেরত আসলো। অসাধারণ অনুভুতি। সবাই হাতে মশাল নিয়ে গেলাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মনকে ছুঁয়ে দিয়েছিল। যদিও দিনের বেলা আসতে পারিনি আমরা আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ঢাকায় ফেরত
রাত সাড়ে আটটার দিকে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম রাত্রিরকোলে সমস্ত ক্লান্তি ঢেলে দিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে। প্রাপ্তি ছিল অনেক যা এককথায় লিখে প্রকাশ করা যায় না। ওখানে গিয়ে অনেকের সাথে পরিচয় হলো। অনেকের হাসিমাখা চোখ জ্বলজ্বল করছিল আবার যারা প্রিয় মানুষকে নিতে পারেনি তাদের মধ্যে কিছুটা শূন্যটা দেখেছি। অনেক ভালো ভালো বাবাকে দেখেছি সন্তানের যত্ন নিতে। মনটা ভরে গেল। অবশেষে ভোর ৬টায় গন্তব্যস্হলে পৌঁছালাম।
যাইহোক, সবকিছু ভালই ভালই হয়েছে। ধন্যবাদ জানাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যারা আমাদের আনন্দদানের ব্যবস্থা করেছে। এ ট্যুরে সবচেয়ে পরিশ্রম করেছে শরীফ ভাইকে ধন্যবাদ এবং ট্যুরের সকল সদস্যকে।
(টিজি/এএস/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩)
পাঠকের মতামত:
- বিদেশি উৎসবে মেহজাবীনের প্রথম সিনেমা
- ‘ব্যর্থতা আড়াল করতে মানুষকে গ্রেপ্তার করছে সরকার’
- ছাত্রনেতাদের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের আলোচনার আহ্বান
- কোটা আন্দোলনে আহতদের আয়-রুজির ব্যবস্থার আশ্বাস
- ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেফতার ২৩৫৭
- সাংবাদিকদের উপর ও বিটিভি ভবনে হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ
- নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের পুনঃপ্রত্যয় হয় জয়, না হয় মৃত্যু!
- মাদারীপুরে সহিংসতায় দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত
- স্কুলের জমিতে দোকান, কোমলমতি শিশুদের পাঠদান ব্যাহত
- রাজবাড়ীতে ইউপি সদস্যসহ ২ সহোদর কারাগারে
- ‘শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে’
- ‘যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’
- সেমিফাইনালে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
- প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা
- ট্রাম্প কী পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরছেন
- বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র, মুম্বাইয়ে রেড অ্যালার্ট
- যা থাকছে প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
- আপাতত বন্ধই থাকছে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ
- ইথিওপিয়ায় ভূমিধসে ২২৯ জনের মৃত্যু
- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে নাক না গলাতে মমতাকে নয়াদিল্লির বার্তা
- গৌরনদীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ বিতরণ
- গ্রেপ্তারদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিতের আহ্বান কানাডার
- বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬ বিলিয়ন ডলার
- আশাশুনির বাহাদুরপুরে বাসন্তী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর
- সাতক্ষীরায় নাশকতার মামলায় জামায়াত বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- ভাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর বেঁচে থাকার আর্তনাদ
- দুর্নীতিবাজ সিনহার বই অন্তর্জ্বালা থেকে : আইনমন্ত্রী
- সংলাপে রাজি নন আন্দোলনকারীরা
- আর্জেন্টিনার জয়ে খুশি মেহজাবীন
- ‘নতুন কারিকুলামের শিক্ষা সার্কভুক্ত দেশগুলোও ফলো করছে’
- ট্রাম্পের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের জন্য অনুদান দিলেন ইলন মাস্ক
- কালিগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
- প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে যাচ্ছে বেনজীরের রূপগঞ্জের ডুপ্লেক্স বাড়ি
- কোটা বাতিলের দাবিতে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ
- নাটোরের বড়াইগ্রামে ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার সমাপনী
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী
- রাজবাড়ীতে শিক্ষার্থী-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত ২
- কোটা সংস্কার ইস্যুতে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র
- মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৩০, আটক ৮
- ‘পরিস্থিতি বুঝে মোবাইল ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে’
- নেপালে বন্যা-ভূমিধসে নিহত অন্তত ১১
- মিছিলে মিছিলে মুখরিত কোটালীপাড়া
- বোয়ালমারীতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে জরিমানা