E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মেধাবী কৃষ্ণা সুস্থভাবে বাঁচতে চায় 

২০২৩ আগস্ট ৩০ ১৮:২৭:৪৩
মেধাবী কৃষ্ণা সুস্থভাবে বাঁচতে চায় 

স্টাফ রিপোর্টার : কৃষ্ণা রানী খাঁ (১৫) অন্য আর ১০টা মেয়ের মতো ছিল হাঁসিখুশি আর চঞ্চল। খেলাধুলায় ছিল পারদর্শী। বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যেতো। খেলাধুলো করতো, গল্প করতো। কবিতা আবৃত্তি করতো। কৃষ্ণা গত তিন বছর ধরে আস্তে আস্তে নির্জীব হয়ে যাচ্ছে। শারীরিক প্রতিকুলতা নিয়ে  কৃষ্ণা চলতি এসএসসি পরীক্ষায় সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। 

কৃষ্ণা জানায়, ২০২০ সালের শেষের দিকে করোনাকালিন সময়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সোজা হয়ে হাঁটতে গেলে কষ্ট হতে থাকে। শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সে জানতে পারে তার মেরুদণ্ডের হাঁড় বেঁকে যাচ্ছে। এ কথা শুনে তার বাবা-মা চিন্তিত হয়ে পড়েন।

কৃষ্ণার বাবা রঘুনাথ খাঁ জানান, তিনি শরাণাপন্ন হন বিশিষ্ঠ অর্থোপেডিকস সার্জেন্ট সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হকের। বিভিন্ন রির্পোট দেখে তিনি জানান কৃষ্ণার মেরুদণ্ডে অস্ত্রপচার ছাড়া বিকল্প কোনো চিকিৎসা নেই। পরপরই অস্ত্রপচার করতে না পারায় তার মেরুদণ্ডের হাঁড় ক্রমশঃ বেঁকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা যারপরনেই কষ্ট পাচ্ছে। কমতে যাচ্ছে তার স্বাভাবিক উচ্চতা। পড়াশুনা করাই কষ্ঠকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরীক্ষার কক্ষে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে বসে থাকতে হওয়ায় যন্ত্রণা বেড়ে যায়। কষ্টে আর যন্ত্রণায় কৃষ্ণা সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেনি কোনো কোনো পরীক্ষায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, কৃষ্ণা স্কোলিওসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরপর অস্ত্রপচার না করে কিভাবে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যায় এজন্য তিনি কৃষ্ণাকে নিয়ে গত ৩ জুলাই ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালোরে যান। সেখানে কৃষ্ণাকে দেখানো হয় ব্যাঙ্গালোরের সত্য সাঁহী বাবা হাসপাতাল, বৈদেহী হাসপাতাল, মনিপাল হাসপাতাল, সেন্ট জনস হাসপাতালে, সঞ্জয় গান্ধী অর্থোপেডিকস হাসপাতালে। দুই সপ্তাহ সেখানে থেকে চিকিৎসকে দেখাতে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে তার শেষ সম্বল দুই লাখ টকা শেষ গেছে। ব্যাঙ্গালোরের মনিপাল হাসপাতালে স্কলিওসিস রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিদ্যাধর তাকে গত ৮ জুলাই বলেন অস্ত্রপচারের মাধ্যমে কৃষ্ণা সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারে। আর এজন্য ব্যয় হবে ভারতীয় ১৫ লাখ রুপি। এই টাকার অংকের কথা শুনে কৃষ্ণার বাবা মুচড়ে পড়েন।

রঘুনাথ খাঁ আরও বলেন, তিনি দীপ্ত টেলিভশেনের ও বাংলা’৭১ পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। পৈতৃক সূত্রে নামমাত্র জমি পেয়েছিলেন তিনি। দিন আনা দিন খাওয়ার মতো পারিবারিক অবস্থা। এরমধ্যেই দুই সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে আসছেন। তার পক্ষে ১৫ লাখ রুপি ব্যয় করা অসম্ভব নয়, কল্পনাতীত। চিকিৎসার ব্যাপারে নিজের নিকট আত্মীয়সহ বিভিন্ন বিত্তশালীদের কাছে দেন দরবার করেও কোন সুবিধা হচ্ছে না। এজন্য মেয়ে কৃষ্ণাকে বাঁচাতে তিনি সমাজের বিত্তশালী ও সহৃদয়বান মানুষদের সহযোগিতা কামনা করেন।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ৩০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১০ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test