E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভাল নেই সার্কাসের সাথে সংশ্লিষ্টরা

২০১৬ জানুয়ারি ২৫ ১৮:৪১:১১
ভাল নেই সার্কাসের সাথে সংশ্লিষ্টরা

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি : দেশ স্বাধীন হতে তখনও প্রায় ষোল বছর বাকি তখন থেকেই মানুষের বিনোদন দিয়ে আসছে দি গ্রেট রওশন সার্কাস। সৈয়দপুর থেকে যাত্রা শুরু করলেও দেশের সব জেলার মানুষেরই বিনোদন দিয়ে আসছে এই সার্কাসের শিল্পী গোষ্ঠী। পিতার হাত ধরে এই শিল্পে প্রবেশ করে এখন দুঃসহ জীবন যাপন করছে সার্কাসের সত্বাধীকারি শেখ মোঃ আফতাব উদ্দীন।

তিনি বলেন বাবার সাথে যখন এই ব্যবসায় এসেছি তখন বাংলাদেশে ছোট-বড় দিয়ে ৬০টি সার্কাস ছিলো কিন্তু বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১০-১২টিতে। তিনি বলেন স্নাতক পাশ করে এখানে এসেছি শুধু এই শিল্পীদের বাঁচাতে। বাবা মৃত্যুবরণ করার পর এখান থেকে চলে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু এই শিল্পীদের কথা চিন্তা করে আজ পর্যন্ত এই ব্যবসা করছি। তিনি আরো বলেন সোনার বাংলা এবং সবুজ বাংলার মতো সার্কাস দেশ থেকে হারিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন শিল্পীদের ব্যয়ভার এবং পশুপাখিদের খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কেন সার্কাস নামের এই শিল্পের এমন অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন সুষ্ঠ বিনোদন নামের সার্কাস হলেও এখন দর্শকরা সেখান থেকে অনেক দূরে সড়ে গেছে। ভাল মানুষ এখানে আসতে চায় না। সবচেয়ে বেশি সমস্য হয় অনুমোদন পাবার বিষয়টি।

তিনি বলেন মেলা কর্তৃপক্ষে এখন আর ভাল মানুষ আসে না যারা এখানে আসে তাদের বেশি সংখ্যকের নাম দেখেই তা প্রায় বাতিল হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন এই শ্রেনীর লোকেরা মেলার অনুমোদন আনলেও বেশি সংখ্যক দর্শকের মানসিকতা থাকে ফ্রি এই খেলাগুলো দেখা। এক সময় দেখা যায় স্থানীয়দের অন্তকোন্দলের কারণে পুলিশ প্রশাসন আমাদের খেলো বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায় বর্শাখেলার শিল্পী মিসেস অনুরাধা বলেন আজ রাতে বর্শাখেলার মতো ঝুকিপূর্ণ খেলা দেখালেও আগামীর রাতে না খেয়েও থাকতে হতে পারে এই ভাবনা মাথায় রাখতে হয়।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের স্থানীয় প্রতিবেদক দেবাশীষ বিশ্বাসকে সব ঘর দেখিয়ে বলেন এই পাঁচ বর্গফুটের টিনের ঘরেই আমাদের জীবন। তিনি বলেন বাংলাদেশে সব মানুষের খোঁজ সরকার বা প্রশাসন দেখলেও আমাদের কথা কেউ মনে রাখে এই কারণে এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মালিকেরা আর আমরা বেকার হয়ে থাকতে হয় আমাদের। শারীরিক এক প্রতিবন্ধী (বায়ণবীর) চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন আমাদের জন্য সবাই হাততালি দেয় কিন্তু আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না! তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বিভিন্ন জায়গায় যখন আমরা এই খেলা দেখাতে যাই প্রশাসন আসে বন্ধ করতে সহযোগিতা করতে নয়। তিনি বলেন এই শিল্প হারিয়ে গেলে আমরা কি করে খাবো? কি করলে বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রাখা যায় এমন প্রশ্ন করা হলে

সত্বাধিকারি শেখ মোঃ আফতাব উদ্দীন বলেন সরকারের সহযোগিতা ছাড়া কোন ভাবেই এই শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, স্বচ্ছভাবে নিবন্ধন করতে হবে যাতে সার্কাসের নামে কেউ হাউজি বা পুতুলনাচের অনুমোদন না নিতে পারে। তিনি আরো বলেন পবিত্র রোজার মাস এবং শোকের মাসে (আগষ্ট মাস) আমাদের এই সার্কাস বন্ধ থাকে এই দুই মাসে অন্তত সরকারের একটা বিশেষ অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে যাতে করে শিল্পীদের বেতন দেওয়া যায়। মোছাঃ লিলি নামের এক শিল্পী এই প্রতিবেদককে বলেন দাদা, অনেক মিডিয়া আমাদের নিয়ে অনেক অর্থ আয় করে কিন্তু আমাদের দুঃখের কথা কেউ শোনে না।

(এমএইচএম/এএস/জানুয়ারি ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test