E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

করোনার নতুন ‘ধরন’ দ্রুত ছড়ালেও ‘খুব বেশি অসুস্থ’ করছে না : গবেষণা

২০২০ জুলাই ০৩ ২৩:০৮:১৮
করোনার নতুন ‘ধরন’ দ্রুত ছড়ালেও ‘খুব বেশি অসুস্থ’ করছে না : গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসের নতুন একটি ‘ধরন’ ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে বলে একটি গবেষণায় জোর প্রমাণ মিলেছে। তবে নতুন রূপান্তরিত ভাইরাসটি বেশি মানুষকে সংক্রমিত করতে পারলেও ‘খুব বেশি অসুস্থ’ করে ফেলতে পারে না বলেও উঠে এসেছে ওই গবেষণায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লা জোলা ইনস্টিটিউট ফর ইমিউনোলজি এবং করোনাভাইরাস ইমিউনোথেরাপি কনসোর্টিয়ামের এক গবেষণায় করোনাভাইরাসের রূপান্তর এবং সংক্রমণ নিয়ে নতুন এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লা জোলার অধ্যাপক এরিকা ওলম্যান সাফায়ার বলেছেন, ভাইরাসটির প্রধান ধরনটি এখন মানুষকে সংক্রমিত করছে।

বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সেলে প্রকাশিত এই গবেষণা কিছু পূর্ববতী কাজের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়; যা চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রি-প্রিন্ট সার্ভারে প্রকাশ হয়েছিল। গবেষকদের জেনেটিক সিকোয়েন্স সম্পর্কিত তথ্যে ভাইরাসটির একটি নির্দিষ্ট সংস্করণে রূপান্তরের ইঙ্গিত মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই গবেষক দল শুধু জেনেটিক সিকোয়েন্সই পরীক্ষা করেনি বরং তারা ল্যাবে মানুষ, প্রাণী এবং কোষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। এতে দেখা যায়, ভাইরাসটির রূপান্তরিত সংস্করণটি আরও বেশি সাধারণ এবং অন্যান্য সংস্করণের চেয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে। ওলম্যান সাফায়ার বলেন, আমরা জানি, নতুন ভাইরাসটি নিজেকে অভিযোজিত করতে পারে।

ভাইরাসটির রূপান্তর স্পাইক প্রোটিনকে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ এটি যে কাঠামো ব্যবহার করে সংক্রমিত কোষে প্রবেশ করে তাতে প্রভাব ফেলে। ভ্যাকসিন দ্বারা ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা- এখন গবেষকরা সেটি পরীক্ষা করে দেখছেন।

বর্তমান যেসব ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে, সেসবের অধিকাংশই স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে পরীক্ষা করা হয়েছে; কিন্তু এসব ভ্যাকসিন ভাইরাসটির পুরনো স্ট্রেইন ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। গবেষকরা করোনাভাইরাসের নতুন রূপান্তরকে জি৬১৪ বলেছেন। তারা দেখেছেন, ইউরোপ এবং আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটির ডি৬১৪ নামের প্রথম সংস্করণকে প্রায় পুরোপুরি প্রতিস্থাপিত করেছে।

গবেষণায় লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির তাত্ত্বিক জীববিজ্ঞানী বেত্তে করবার ও তার সহকর্মীরা বলেছেন, আমাদের বৈশ্বিক ট্র্যাকিং তথ্য-উপাত্ত দেখাচ্ছে, স্পাইকে ডি৬১৪ ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে জি৬১৪। তারা বলেছেন, ভাইরাসটি আরও বেশি সংক্রামক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, আমরা রোগটির তীব্রতার ক্ষেত্রে জি৬১৪-এর প্রভাবের প্রমাণ পাইনি।

এই গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকলেও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের মেডিক্যাল অনকোলজির অধ্যাপক লরেন্স ইয়ং বলেন, এটা সুসংবাদ হতে পারে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক এই গবেষণা বলছে, করোনাভাইরাসের জি৬১৪ ভ্যারিয়েন্টটি আরও বেশি সংক্রামক হতে পারে। তবে এটা ততবেশি প্যাথোজেনিক নয়। একটি আশা আছে যে, সার্স-কোভ-২ এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি কম প্যাথোজেনিক হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে করোনায় আক্রান্তদের শরীর থেকে নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছেন গবেষকরা। এর মাধ্যমে তারা করোনার দুটি ভ্যারিয়েন্টের তুলনা করে দেখেছেন। গবেষকরা বলেছেন, মার্চের শুরুর দিকে জি৬১৪ ভ্যারিয়েন্টটি ইউরোপের বাইরে বিরল ছিল। কিন্তু মার্চের শেষের দিকে বিশ্বজুড়েই এর ফ্রিকোয়েন্স বৃদ্ধি পায়।

তারা বলেছেন, করোনার নতুন সংস্করণটির সংক্রমণ উচ্চ শ্বাসনালী– নাক, সাইনাস এবং গলাতে দ্রুতগতিতে বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। যা ভাইরাসটির সহজে ছড়িয়ে পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করবে। তবে ব্রিটেনে হাসপাতালে ভর্তি এক হাজার করোনা রোগীর ওপর পরীক্ষায় দেখা গেছে- নতুন সংস্করণে আক্রান্তদের শরীরে ভাইরাসটির মূল স্ট্রেইনে আক্রান্তদের তুলনায় খারাপ কিছু ঘটেনি। সিএনএন।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৩, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test